বেহুঁশ করার পরে সরানো হচ্ছে হাতিটিকে। ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল।
‘দুষ্টু’ হাতি বাগে আনতে হিমশিম খেলেন বনকর্মীরা। মেদিনীপুরের ঘটনা। শেষ পর্যন্ত ঘুমপাড়ানি গুলি ছুঁড়ে (ট্র্যাঙ্কুলাইজড) হাতিটি বাগে আনা হয়।
মেদিনীপুরের এক বন আধিকারিক বলেন, ‘‘বছর দশেকের ওই হাতিটি খুব উৎপাত করছিল। ওকে ট্র্যাঙ্কুলাইজড করার পরিকল্পনা ছিলই।’’ মঙ্গলবার সকালে হাতিটি মেদিনীপুর শহরের কিছু দূরে গোপগড় এলাকায় চলে এসেছিল। এক সময়ে ঢুকে পড়ে এখানকার ইকোপার্কেও। পৌঁছন জেলার শীর্ষ বনকর্তারা। শুরুর দিকে হাতিটি ‘ট্র্যাঙ্কুলাইজড’ করতে গিয়ে জখম হন রেঞ্জার পাপন মহন্ত। হাতিটি আচমকা ঘুরে দাঁড়ায়। সামনে ছিলেন পাপন। পড়ে গিয়ে জখম হন তিনি। তাঁকে মেদিনীপুর মেডিক্যালে নিয়ে আসা হয়। প্রাথমিক চিকিৎসার পরে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। এক বনকর্মী শোনাচ্ছেন, ‘‘হাতিটি ওঁর সামনেই ছিল। বড় দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারত।’’ দুপুরের দিকে এক সময়ে হাতিটি পার্কের বাইরের দিকে চলে আসে। তখন সুযোগ বুঝে ঘুমপাড়ানি গুলি ছুঁড়ে কাবু করা হয় তাকে। উদ্ধার করে ক্রেনে করে গাড়িতে তুলে নিয়ে যাওয়া হয় ঝাড়গ্রামে। মুখ্য বনপাল (পশ্চিম চক্র) অশোকপ্রতাপ সিংহ বলেন, ‘‘হাতিটি দৌড়াদৌড়ি করছিল। আমরা সকাল থেকেই হুলা টিম, ট্র্যাঙ্কুলাইজিং টিম নিয়ে প্রস্তুত ছিলাম।’’ তিনি জানান, এদিন হাতিটি মানুষের কোনও ক্ষয়ক্ষতি করেনি।রবিবারই মেদিনীপুর গ্রামীণের মুড়াকাটায় হাতির হানায় এক বৃদ্ধার মৃত্যু হয়েছে। সোমবার সকালে শালবনির কিসমৎ বনকাঠিতে হাতির হানায় গুরুতর জখম হন এক মহিলা। ওই ‘দুষ্টু’ হাতিই কি বৃদ্ধাকে মেরেছিল? মেদিনীপুরের এক বন আধিকারিক বলেন, ‘‘এটা এখনই নিশ্চিত করে বলতে পারছি না। এটুকু বলতে পারি, হাতিটি কয়েক দিন ধরেই উৎপাত করছিল।’’ তিনি শোনাচ্ছেন, ‘‘আগামী দিনে হাতির করিডর তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে। ফেন্সিং থাকবে। একটা জায়গায় হাতিকে রাখা হবে।’’ তিনি জুড়ছেন, ‘‘এনক্লোজার বানানোর পরিকল্পনাও রয়েছে।’’ পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলাশাসক খুরশিদ আলি কাদেরীও বলেন, ‘‘জেলায় হাতির করিডর তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে। হাতি- মানুষ সংঘাত এড়াতে এই পরিকল্পনা।’’ বছর দুয়েক আগেও মেদিনীপুর শহরে একটি হাতি ঢুকে পড়েছিল। ঘুমপাড়ানি গুলি ছুঁড়ে তাকে বাগে এনে চাঁদড়ার শুখনাখালির জঙ্গলে ছাড়া হয়েছিল।
এদিন সকালে দলছুট একটি হাতি খড়্গপুর গ্রামীণের গোকুলপুর এলাকাতেও আতঙ্ক তৈরি করে। ধাক্কা মেরে খড়্গপুরের ডিএফও শিবানন্দ রােমর গাড়ির ক্ষতি করে। পরে অবশ্য ঝাঁটিবাঁধ, খোলাপাটনা, রায়পাড়া, লেলুয়াকোলা হয়ে হাতিটি কাঁসাই নদী পেরিয়ে গোপগড়ে চলে যায়। অনেকেই মনে করছেন, এই হাতিটিকেই এদিন গোপগড়ে ‘ট্র্যাঙ্কুলাইজড’ করা হয়েছে। সকাল সাড়ে ৬টা নাগাদ গোকুলপুর সংলগ্ন মথুরাকিসমত এলাকায় প্রথম ওই হাতিটিকে দেখা যায়। মেদিনীপুর সদরের কাঁসাই নদী পেরিয়েই এসেছিল সে। খড়্গপুরের ডিএফও বলেন, “একটা হাতি নদী পেরিয়েই গোকুলপুর এলাকায় চলে এসেছিল। আমরা এলাকায় গিয়ে হাতিটিকে ফের নদী পার করিয়ে দিই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy