জলমগ্ন এলাকায় পরীক্ষাকেন্দ্রে যেতে সাঁকো তৈরি করল পুলিশ। —নিজস্ব চিত্র।
প্রবল বর্ষণের জেরে এখনও জলমগ্ন একাধিক ব্লক। তার উপর ঘূর্ণিঝড় ‘গুলাব’ আছড়ে পড়ার পূর্বাভাস। সব মিলিয়ে ফের আতঙ্কে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় সবং, পিংলা, নওগাঁ-সহ একাধিক ব্লকের বাসিন্দা। ঘূর্ণিঝড়ের জেরে বিপর্যয় মোকাবিলায় প্রস্তুত প্রশাসন। তা সত্ত্বেও দুর্ভোগের আশঙ্কা কাটছে না বীরেন মাইতির মতো নওগাঁর বাসিন্দাদের।
জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, গত কয়েক দিনের বৃষ্টিতে ১৩ দিন ধরে জলমগ্ন ঘাটাল, নারায়ণগড়, সবং, পিংলা, ডেবরা এবং দাঁতন ব্লকের বেশ কয়েকটি গ্রাম। ইতিমধ্যেই দেওয়াল চাপা পড়ে, জলে ডুবে ও বজ্রাঘাতে মৃত্যু হয়েছে ১৭ জনের। সেই বিপর্যয় কাটিয়ে ওঠার আগেই রবিবার সন্ধ্যায় ওড়িশার গোপালপুর এবং অন্ধ্রপ্রদেশের কলিঙ্গপত্তনমের কাছে ফের ঘূর্ণিঝড় ‘গুলাব’ আছড়ে পড়ার পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া দফতর। তার জেরে দক্ষিণবঙ্গের উপকূলবর্তী জেলাগুলিতে বৃষ্টি হতে পারে। এ ছাড়া, নিম্নচাপের জেরে মঙ্গলবার থেকে কলকাতা, দুই মেদিনীপুর-সহ একাধিক জেলায় ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা। সঙ্গে ঝোড়ো হাওয়ারও পূর্বাভাস রয়েছে।
নতুন করে নিম্নচাপের পূর্বাভাসে সতর্কতা জারি করেছে জেলা প্রশাসন। বেশ কয়েকটি দফতরের কর্মীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। কয়েকটি ব্লক করে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে জেলার আধিকারিকদের। পরিস্থিতির মোকাবিলায় জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী (এনডিআরএফ)-র চারটি দল রয়েছে জেলায়। তার মধ্যে ঘাটাল, সবং, নারায়ণগড়, পিংলায় একটি করে এবং সবংয়ে রয়েছে রাজ্য দুর্যোগ মোকাবিলা বাহিনীর দু’টি দল। এনডিআরএফ এবং রাজ্যের বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের কর্মীদের ঘাটাল, নারায়ণগড়, সবং, পিংলা, ডেবরা এবং দাঁতন-সহ কয়েকটি ব্লকে মোতায়েন করা হয়েছে। পাশাপাশি, ত্রাণসামগ্রীও মজুত করে রেখেছে প্রশাসন। প্রায় ৫০ হাজার ত্রিপলের ব্যবস্থা করার কথা জানিয়েছে প্রশাসন। সেই সঙ্গে গাছ কাটার বা জলনিকাশির ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। প্রশাসনের তৎপরতার উদাহরণ দেখা গেল শনিবার। পিংলার বরিশা বিদ্যাসাগর বিদ্যাপীঠ স্কুলের একটি পরীক্ষাকেন্দ্রে ঢোকার জন্য তড়িঘড়ি একটি আস্ত কাঠের সাঁকো তৈরি করল পুলিশ। শনিবার সেই সাঁকো পেরিয়েই পরীক্ষা দিতে যান ওই কেন্দ্রের ৪০০ পরীক্ষার্থী।
প্রশাসনের এই প্রস্তুতি সত্ত্বেও আতঙ্কে নওগাঁ বাসিন্দা বীরেন মাইতি। তিনি বলেন, ‘‘একে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। তার উপর ফের নিম্নচাপের পূর্বাভাস। ফের বৃষ্টিতে জলমগ্ন হয়ে পড়বে গোটা গ্রাম।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy