এখনও যাতায়াতে ভেলাই ভরসা। পটাশপুরে। ছবি: কিংশুক আইচ।
বন্যা পরিস্থিতি থেকে রেহাইয়ের কোনও পথ মেলেনি। এখনও জলবন্দি গোটা ভগবানপুর। টানা জলবন্দি দশায় মোটের উপর ত্রাণ পাওয়া গেলেও চরম সঙ্কট দেখা দিয়েছে পানীয় জলের। তার সহ্গে উদ্বেগ বাড়িয়েছে ডায়েরিয়া ও অজানা জ্বর। হাসপাতালে যাওয়ার সুযোগ নেই। অজানা জ্বর ও ডায়েরিয়া রোগীদের চিকিৎসায় ভরসা গ্রামীণ চিকিৎসকেরা।
গত সপ্তাহে শুক্রবার থেকে কেলেঘাই নদী জলে প্লাবিত হয় ভগবানপুর-১ ব্লকের বিভীষণপুর পঞ্চায়েত। সময় যত গড়িয়েছে প্লাবন আরও বেড়েছে। ঘর থেকে জল নামা দূরের কথা জলের তলায় চলে গিয়েছে নলকূপ থেকে সাবমার্সিবল পাম্প। যার জেরে পানীয় জলের হাহাকার শুরু হয়েছে। যে সব জায়গায় সাবমাসির্বল পাম্প চালানোর অবস্থায় রয়েছে সেখানেও তা চালানো যাচ্ছে না, কারণ বন্য়ার কারণে এলাকার বিদ্যুৎ সংযোগ ছিন্ন করা হয়েছে। এই অবস্থায় বাধ্য হয়ে মানুষ বন্যার জলই ফুটিয়ে তৃষ্ণা মেটাচ্ছেন। সেখানেই বিপদ বাড়ছে। ভগবানপুর-২ ব্লকের ইটাবেড়িয়া, রাধাপুর, মুগবেড়িয়া, বাসুদেববেড়িয়া পঞ্চায়েতের বন্যাদুর্গত এলাকায় পানীয় জলের তীব্র সঙ্কট দেখা দিয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দা ও সমাজসেবী ও লেখক চৈতন্যময় নন্দ বলেন, ‘‘পানীয় জলের সমস্যা নিয়ে রবিবার রাজ্যের জলসম্পদ মন্ত্রী মানস ভুঁইয়ার সঙ্গে কথা বলেছি। যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে প্লাবিত এলাকার মানুষের জন্য পানীয় জলের ব্যবস্থা করার দাবি জানিয়েছি।’’
ভগবানপুর-১ ব্লকের নয়টি গ্রাম পঞ্চায়েতই বন্যা প্লাবিত। অভিযোগ, সরকারি ভাবে এখানে পর্যাপ্ত ত্রাণের ব্যবস্থা নেই। প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে উদ্ধারকারী দলের স্পিড বোট না যাওয়ায় যোগাযোগ প্রায় বিছিন্ন। বন্ধ বিদ্যুৎ ও মোবাইল ফোনের টাওয়ার। সবকটি প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র জলে ডুবে রয়েছে। শুধুমাত্র ভগবানপুর গ্রামীণ হাসপাতালে জরুরি ও বহির্বিভাগে চিকিৎসা পরিষেবা চালু রয়েছে। এলাকার আশাকর্মীরা ত্রাণ শিবিরে থাকা মানুষের স্বাস্থ্য সম্পর্কে খোঁজ নিলেও চিকিৎসা পরিষেবা নিয়ে তাঁদের কোনও ভূমিকা নেই। জলবন্দি অবস্থার কারণে সব জায়গায় আশা কর্মীরা পৌঁছতে পারছেন না। অজানা জ্বর ও ডায়েরিয়ার প্রাদুর্ভাব বাড়ছে।
বচ্ছিপুর এলাকায় সবচেয়ে বেশি ডায়েরিয়া ও অজানা জ্বরে আক্রান্ত রোগী রয়েছে। গত পাঁচদিনে বচ্ছিপুরে ষাটজন অজানা জ্বর ও ডায়েরিয়ায় অসুস্থ হয়েছেন। অসুস্থদের বেশিরভাগ শিশু ও কিশোর এবং বৃদ্ধ। বানভাসি এলাকায় অসুস্থদের চিকিৎসা পরিষেবা দিচ্ছেন গ্রামীণ চিকিৎসকেরা। একে বন্যায় ভেসে গিয়েছে ঘরবাড়ি ও চাষবাস। তার উপর রোগের আক্রমণে দিশাহারা বানভাসি মানুষ। এলাকায় পৌঁছয়নি কোনও মেডিক্যাল টিম। দ্রুত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ না করলে এই রোগের প্রাদুর্ভাব বাড়বে বলে আশঙ্কা করছেন গ্রামীণ চিকিৎসকেরা। গ্রামীণ চিকিৎসক সঞ্জীব বেরা জানান, বচ্ছিপুর এলাকায় সবচেয়ে বেশি মানুষ অজানা জ্বর ও ডায়েরিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন। সরকারি কোনও চিকিৎসক বা মেডিক্যাল টিম এলাকায় আসেনি।
ভগবানপুর-১ এর বিডিও বিশ্বজিৎ মণ্ডল বলেন, ‘‘কিছু জায়গায় মানুষের জ্বর হচ্ছে। সেখানে আশা কর্মীরা প্রয়োজনীয় ওষুধপত্র দিচ্ছেন। বচ্ছিপুর এলাকায় বেশি মানুষের অসুস্থ হওয়ার বিষয়টি নজরে নেই। খোঁজ নিয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy