Advertisement
২৭ ডিসেম্বর ২০২৪
সরকারি কর্তার টাকা ছিনতাই, গরু পাচারও
POlice

গাড়ি এক, অপরাধ অনেক

অপরাধের জন্য বারবার যে ভাবে দামি গাড়ি ব্যবহার করা হচ্ছে, তাতে পুলিশের অনুমান, তাদের চোখে ধুলে দিতেই এই পন্থা নিচ্ছে দুষ্কৃতীরা।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০৮ নভেম্বর ২০২০ ০৫:৪৬
Share: Save:

জাতীয় সড়কে দুর্ঘটনাগ্রস্ত গাড়ি থেকে এক দিন আগেই মিলেছি পা বাঁধা দু’টি গরু। সামনে এসেছিল আন্তঃরাজ্য গরু পাচারের ঘটনা। সেই ঘটনার তদন্তেই উঠে এসেছে আরও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য। জানা গিয়েছে, দুর্ঘটনাগ্রস্ত দামি ওই চার চাকার গাড়িটি গত মাসে একটি ছিনতাইয়ের ঘটনাতেও ব্যবহার করা হয়েছিল। সকলের নজর এড়াতে অপরাধের জন্য যে ভাবে দামি গাড়ি ব্যবহার করা হচ্ছে, তাতে উদ্বিগ্ন পুলিশও।

পুলিশ সূত্রের খবর, গত ৩১ অক্টোবর রাত সাড়ে ১২টা নাগাদ ৬ নম্বর জাতীয় সড়ক ধরে স্ত্রীর সঙ্গে মেদিনীপুর শহরে ফিরছিলেন পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা আঞ্চলিক পরিবহণ আধিকারিক অমিত দত্ত। খড়্গপুর গ্রামীণ থানা এলাকার কৃষ্ণনগরে একটি দামি গাড়ি তাঁদের পথ আটকায়। ওই গাড়ি থেকে চার় যুবক নেমে এসে অমিতের গাড়ির চালককে মারধর এবং তাঁদের টাকা ও মানিব্যাগ ছিনতাই করে বলে অভিযোগ। গত ১ নভেম্বর খড়্গপুর গ্রামীণ থানায় অমিত ওই গাড়ির নম্বর উল্লেখ করে একটি এফআইআর দায়ের করেন।

এ দিকে, বৃহস্পতিবার ভোর রাতে কোলাঘাটে গরু বোঝাই একটি দামি গাড়িটি দুর্ঘটনার মুখে পড়ে। তাতে চালক-সহ দুজন ঘটনাস্থলেই মারা যান। একজনকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে পুলিশ। তদন্তে সামনে আসে অমিতদের টাকা ছিনতাইয়ে যে গাড়িটি ব্যবহার করা হয়েছিল, সেটি এবং দুর্ঘটনাগ্রস্ত গাড়িটির নম্বর একই (ডব্লিউ বি ৪২ এইচ ৩৬০০)। খড়্গপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কাজি সামসুদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘‘ঘটনার তদন্ত চলছে। গত ৩১ অক্টোবরের ছিনতাইয়ের ঘটনায় পূর্ব মেদিনীপুরে দুর্ঘটনাগ্রস্ত গাড়িটির জড়িত থাকার প্রমাণ

পাওয়া গিয়েছে।’’

পুলিশ তদন্ত করে জানতে পারে, দুর্ঘটনাগ্রস্ত গাড়ির মালিকের নাম সৌমেন নস্কর। তিনি দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার সোনারপুর এলাকার বাসিন্দা। যদিও সৌমেন পুলিশকে জানিয়েছে, তিনি তিন মাস আগে গাড়িটি বারুইপুরে একটি পুরনো গাড়ির শোরুমে বিক্রি করে দিয়েছিলেন। গাড়ির মালিকানা এখনও বদল হয়নি।

বৃহস্পতিবার কোলাঘাটের দুর্ঘটনায় এক আহতের নাম আজাত মোল্লা। গাড়ির এক আরোহী পালিয়ে গিয়েছিল বলেও দাবি। তাই গরু পাচার এবং অন্য অপরাধের সম্পর্কে জানতে আজাতকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বলে জানিয়েছে খড়্গপুর লোকাল থানার পুলিশ। তাঁদের টাকা ছিনতাইয়ের সঙ্গে দুর্ঘটনায় মৃতেরা জড়িত ছিল কি না, সে জন্য মৃত দুজনের ছবি পরিবহণ আধিকারিক অমিতকে দেখানো হয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘যে গাড়িটিতে করে দুষ্কৃতীরা এসেছিল, সেটি কোলাঘাটে দুর্ঘটনায় পড়েছে বলে জানতে পেরেছি। মনে হচ্ছে দুষ্কৃতীরা নিয়মিত ওই গাড়িটি ব্যবহার করত।’’

উল্লেখ্য, গত ১২ অক্টোবর তমলুকের বঁহিচবেড়িয়ায় একটি দামি গাড়িতে করে তিনটি গরু পাচার করার সময় পুলিশ ধরেছিল। অপরাধের জন্য বারবার যে ভাবে দামি গাড়ি ব্যবহার করা হচ্ছে, তাতে পুলিশের অনুমান, তাদের চোখে ধুলে দিতেই এই পন্থা নিচ্ছে দুষ্কৃতীরা। এই ধরনের ঘটনা রুখতে জাতীয় সড়কে আরও বেশি করে এনপির ক্যামেরা বসানো এবং নাকা চেকিং পয়েন্ট বাড়াতে উদ্যোগী হয়েছে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পুলিশ। তমলুকের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এম এম হাসান বলেন, ‘‘৬ নম্বর জাতীয় সড়কে অপরাধের ঘটনায় রাশ টানতে নতুন করে আরও চারটি জায়গায় এনপিআর ক্যামেরা লাগানো হবে। রাতে নাকা চেকিং পয়েন্ট বাড়ানো হবে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Police illegal activities Cars
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy