ঘরে পৌঁছে দেওয়া হল রেশন। নিজস্ব চিত্র।
সরকারিভাবে বরাদ্দ খাদ্যসামগ্রী বাসিন্দাদের দোরগড়ায় পৌঁছে দেওয়ার জন্য ‘দুয়ারে রেশন’ প্রকল্প চালু হয়েছে মাস খানেক আগে। গত ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় প্রথম দফায় ১৩৪ জন রেশন ডিলারের মাধ্যমে পরীক্ষামূলক ভাবে এই প্রকল্পে রেশন সামগ্রী বণ্টন শুরু হয়েছিল। কিন্তু প্রকল্প শুরুর আগেই নিম্নচাপের জেরে ভারী বৃষ্টিতে তমলুক ও হলদিয়া মহকুমার বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়। রাস্তাঘাট জলমগ্ন হয়ে পড়ে। তারপর ১৬ সেপ্টেম্বর রাতে পটাশপুরে কেলেঘাই নদীর বাঁধ ভেঙে এগরা, পটাশপুর, ভগবানপুর ও চণ্ডীপুর ব্লকের বিস্তীর্ণ এলাকা বন্যার কবলে পড়ে। ওই সব এলাকার বহু বাসিন্দাকে ত্রাণ শিবিরে আশ্রয় নিতে হয়। এমন পরিস্থিতিতে বন্যা কবলিত এলাকায় ‘দুয়ারে রেশন’ প্রকল্প চালু নিয়ে সমস্যায় পড়েন রেশন ডিলাররা।
যদিও খাদ্য দফতরের নির্দেশ মেনে রেশন ডিলাররা খাদ্য সামগ্রী বণ্টনের জন্য জলমগ্ন এলাকায় বাসিন্দাদের বাড়ির কাছাকাছি রেশন সামগ্রী পৌঁছে দেন। জেলা খাদ্য দফতর সূত্রের খবর, প্রথম দফায় পরীক্ষামূলকভাবে মোট রেশন ডিলারদের ১৫ শতাংশকে ‘দুয়ারে রেশন’ প্রকল্পে যুক্ত করা হয়েছিল। দ্বিতীয় দফায় রবিবার থেকে এই প্রকল্পে ৫০ শতাংশ রেশন ডিলারকে দিয়ে খাদ্য সামগ্রী বণ্টন শুরু হয়েছে। পূর্ব মেদিনীপুরে মোট ৮৩২ জন রেশন ডিলারের মধ্যে ৪১৬ জন রেশন ডিলার রবিবার থেকে দুয়ারে রেশন প্রকল্পে গ্রাহকদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে খাদ্যসামগ্রী বণ্টন করেন। যদিও এগরা মহকুমার ভগবানপুর-১, পটাশপুর-২ ব্লকের বিস্তীর্ণ এলাকা ও পটাশপুর-১ ব্লকের একাংশ এখনও জলমগ্ন থাকায় এদিন রেশন ডিলাররা গ্রাহকদের বাড়ি বাড়ি খাদ্য সামগ্রী বণ্টন করতে গিয়ে সমস্যায় পড়েন বলে অভিযোগ।
ওয়েস্ট বেঙ্গল এমআর ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশনের এগরা মহকুমা সম্পাদক সঞ্জয় গিরি বলেন, ‘‘ভগবানপুর, পটাশপুরের বিভিন্ন এলাকায় রাস্তাঘাট এখনও জলমগ্ন। ফের নিম্নচাপের জেরে শনিবার থেকে বৃষ্টি হচ্ছে। ফলে ওইসব এলাকায় ডিলাররা মেশিনভ্যান বা টোটোয় খাদ্যসামগ্রী নিয়ে গ্রামে গিয়ে বণ্টন করতে সমস্যায় পড়েছেন । রাস্তা জলে ডুবে থাকায় ও খারাপ আবহাওয়ার মধ্যে খাদ্যসামগ্রী নিয়ে যাওয়ার জন্য অতিরিক্ত গাড়িভাড়া দিতে হয়েছে। এর ফলে রেশন ডিলাররা আর্থিক দিক থেকেও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।’’
রেশন ডিলার অ্যাসোসিয়েশনের জেলা সম্পাদক মাধব পাঁজা বলেন, ‘‘সরকারি নির্দেশ মেনে দুয়ারে রেশন প্রকল্পে দ্বিতীয় ধাপে রবিবার থেকে জেলায় ৫০ শতাংশ রেশন ডিলার গ্রাহকদের বাড়ি বাড়ি খাদ্যসামগ্রী বণ্টন শুরু করেছেন। কিন্তু এখনও ভগবানপুর, পটাশপুর ও ময়না ব্লকের অনেক গ্রামের রাস্তাঘাট জলমগ্নয় ডিলাররা খাদ্যসামগ্রী নিয়ে গ্রাহকদের বাড়িতে পৌঁছতে অসুবিধায় পড়ছেন। অতিরিক্ত বহন খরচ দিতে হচ্ছে। এই অতিরিক্ত খরচ যাতে রেশন ডিলারদের দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয় সেজন্য খাদ্য দফতরের কাছে দাবি জানানো হয়েছে।’’
জেলা পরিষদের খাদ্য কর্মাধ্যক্ষ সিরাজ খান বলেন, ‘‘জেলায় বন্যা পরিস্থিতির জন্য প্রথম পর্যায়ে ‘দুয়ারে রেশন’ প্রকল্প চালুর সময় রেশন ডিলারদের কিছুটা সমস্যা হয়েছিল। তবে এখন বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। দ্বিতীয় দফায় রবিবার থেকে দুয়ারে রেশনে খাদ্যসামগ্রী বণ্টন শুরু হয়েছে। এদিন আবহাওয়া খারাপ থাকলেও খাদ্যসামগ্রী বণ্টন নিয়ে রেশন ডিলারদের কাছ থেকে কোনও অভিযোগ আসেনি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy