বীরসিংহ গ্রামে শুভেন্দুর পাঠানো শ্রদ্ধার্ঘ্য। নিজস্ব চিত্র
দু’দিন আগেই ঝাড়গ্রামের গিধনি অঞ্চলের চারিচাকা গ্রামে মাধ্যমিকে কৃতী মন্দিরা মুর্মুর বাড়িতে গিয়ে শুভেচ্ছা জানিয়ে এসেছিলেন শুভেন্দু অধিকারীর অনুগামীরা। তাঁদের গলায় ছিল ‘দাদা’র ছবি। বুধবার ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের প্রয়াণ দিবসে বীরসিংহ গ্রামে গেলেন পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা যুব তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক তথা শুভেন্দু অনুগামী বলে পরিচিত শপথ চক্রবর্তী-সহ কয়েকজন। এদিন কারও গলায় শুভেন্দুর ছবি না থাকলেও বিদ্যাসাগরের ছবি সম্বলিত কাগজে লেখা ছিল ‘শুভেন্দু অধিকারী, মন্ত্রী, পশ্চিমবঙ্গ সরকার’।
শুভেন্দুর ঘনিষ্ঠ মহল সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার মন্ত্রীর নিজেরই বীরসিংহ গ্রামে আসার কথা ছিল। বুধবার সকালে করোনা ও লকডাউন পরিস্থিতির জন্য সেই কর্মসূচি বাতিল করেন তিনি। শপথ বলেন, “দাদার আসার কথা ছিল। এ দিন সকালে ফোন করে তিনি আমাকে বীরসিংহে যাওয়ার নির্দেশ দেন। তাই আমরা স্বাস্থ্যবিধি মেনে বিদ্যাসাগরের মূর্তিতে মালা দিয়ে এসেছি।’’
জেলা রাজনীতির পর্যবেক্ষকদের মতে, তৃণমূলে রদবদলের পরে শুভেন্দুর অনুগামীদের নানা সামাজিক কাজে আদতে সমান্তরাল জনসংযোগ বজায় রাখার চেষ্টা দেখা যাচ্ছে। তাঁর অনুগামীদের বিদ্যাসাগরের জন্মস্থানে এসে শ্রদ্ধা জানিয়ে যাওয়াও আসলে সেই চেষ্টারই ইঙ্গিত দিচ্ছে। মেদিনীপুরের মাটির ঐতিহ্যের প্রতি তিনি কতখানি শ্রদ্ধাশীল শুভেন্দু সবসময়েই তা মনে করিয়ে দেন। এ দিনও তার ব্যতিক্রম হয়নি। ঘটনাচক্রে এদিন বীরসিংহ গ্রামে সরকারি তরফে কোনও অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা ছিল না।
জেলা তথ্য ও সংস্কৃতি দফতরের আধিকারিক অনন্যা মজুমদার বলেন, “বুধবার সম্পূর্ণ লকডাউন ছিল। তাই বীরসিংহ গ্রামের সরকারি তরফে কোনও অনুষ্ঠান ছিল না।” তৃণমূলের পক্ষ থেকেও এ দিন বীরসিংহ গ্রামে কোনও কর্মসূচি নেওয়া হয়নি। জেলা তৃণমূলের সভাপতি অজিত মাইতি বলেন, ‘‘বিদ্যাসগরের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো তো ভাল কাজ। উনি যা করেছেন ঠিকই করেছেন। দলের তরফেও এ দিন বিভিন্ন ভাবে বিদ্যাসাগরকে শ্রদ্ধা জানানো হয়েছে।”
পশ্চিম মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রাম দুই জেলাতেই এদিন নানা জায়গায় বিদ্যাসাগর স্মরণ হয়েছে। মেদিনীপুর শহরের এলআইসি মোড়ে বিদ্যাসাগরের মূর্তিতে শ্রদ্ধা জানায় সারা বাংলা বিদ্যাসাগর দ্বিশত জন্মবর্ষ উদ্যাপন কমিটি। অল বেঙ্গল সেভ এডুকেশন কমিটি, মাধ্যমিক শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতি, বিদ্যাসাগর স্মরণ সমিতি প্রভৃতি সংগঠনের তরফেও দিনটি পালিত হয়েছে। বিদ্যাসাগরের প্রয়াণ দিবস পালিত হয়েছে বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়েও। এদিন সকালে বিদ্যাসাগর দ্বিশততম জন্মবার্ষিকী উদ্যাপন কমিটির উদ্যোগে ঘাটাল শহরের কেন্দ্রীয় বাস স্ট্যান্ডে বিদ্যাসাগর মূর্তিতে মাল্যদান করা হয়। বিকেলে ওই কমিটির উদ্যোগেই হয় অনলাইন সেমিনার। চন্দ্রকোনা বিদ্যাসাগর মহাবিদ্যালয়ও অনলাইন আলোচনার আয়োজন করেছিল। বেলদায় বিদ্যাসাগর স্মরণ সমিতি, সারা বাংলা বিদ্যাসাগর দ্বিশতবর্ষ উদযাপন কমিটি ও শহিদ ক্ষুদিরাম কমিটি-সহ কয়েকটি সংগঠনও দিনটি পালন করে। কেশিয়াড়ির কানপুর বিরসা মুন্ডা স্মৃতি রক্ষা কমিটি এদিন ঘরোয়া আলোচনার ব্যবস্থা করেছিল। নারায়ণগড় কালচারাল অ্যাসোসিয়েশনও দিনটি পালন করেছে।
ঝাড়গ্রাম জেলার বিভিন্ন ব্লকেও স্বাস্থ্যবিধি মেনে দিনটি পালন করা হয়। মূল অনুষ্ঠানটি হয় ঝাড়গ্রাম শহরের গাইঘাটা এলাকার পথিকৃৎ ভবনে। সেখানে ছিলেন সারা বাংলা বিদ্যাসাগর দ্বিশত জন্মবর্ষ উদযাপন কমিটির সম্পাদক কমল সাঁই, বিদ্যাসাগর স্মরণ সমিতির জেলা সম্পাদিকা অর্চনা বেরা প্রমুখ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy