—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
সপ্তাহান্তে এলেই তরতর করে বাড়ে হোটেলের ভাড়া। আবার সপ্তাহের মাঝে সেই দাম কমে প্রায় অর্ধেক। পর্যটকদের কটাক্ষ— এ কি টিভি সিরিয়ালের টিআরপি! যে শুধু ওঠে আর পড়ে!
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হুঁশিয়ারি সত্ত্বেও গত পাঁচ বছরে বদলায়নি সৈকত শহর দিঘার হোটেলের দর নিয়ে ফাটকাবাজির ছবিটা। কলকাতার এন্টালি থেকে দিঘা বেড়াতে যাওয়ার জন্য অগ্রিম বুকিং করতে চেয়েছিলেন এক বাসিন্দা। নিউ দিঘায় চারজনের একত্রে থাকার জন্য একটি ঘরের ভাড়া বলা হয়েছিল ৩,৩০০ টাকা। কিন্তু সেই ভাড়া বুধবার সকালে গিয়ে দাঁড়িয়েছে ৪,২৫০ টাকা। বাধ্য হয়ে ওই পর্যটক উঠেছিলেন ওল্ড দিঘায় থানা সংলগ্ন একটি হোটেলে। অভিযোগ, সেখানেও যে ঘরের ভাড়া ছিল ২,৪০০ টাকা, সপ্তাহ শেষে তা হয়েছে ৩৩০০ টাকায়।
উত্তর ২৪ পরগনার অশোকনগর থেকে বেড়াতে আসা রাজু মঙ্গল জানাচ্ছেন, মে দিবসের ছুটিতে এসি ছাড়া এক কামরার ঘরের জন্য তাঁকে গুনতে হয়েছে দেড় হাজার টাকা। তাঁর দাবি, অথচ কিছুদিন আগে ওই হেটেলেই একই ঘরের জন্য তাঁর এক পরিচিত দিয়েছেন মাত্র ৮০০ টাকা। তাঁর কথায়, ‘‘স্থানীয়েরাও আমাদের বলেছেন, অফ সিজনে ওই ঘরের দাম মেরে কেটে ৫০০ টাকা নেওয়া হয়।’’
দিঘায় হোটেলের ভাড়ার ওঠাপড়া নিয়ে হামেশাই এমন অভিযোগ শোনা যায় পর্যটকদের মুখে। ২০১৯ সালে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জেলা সফরে এসে দিঘায় হোটেলের যথেচ্ছ ভাড়া নিয়ে ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন। তিনি জেলা প্রশাসনকে এ নিয়ে টাস্কফোর্স গঠনের নির্দেশ দেন। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী তারপরেও একাধিকবার দিঘায় প্রশাসনিক সফরে এসেছেন। কিন্তু ভাড়া নিয়ে ওই অভিজ্ঞতা পাল্টায়নি পর্যটকদের। আর টাস্ক ফোর্সের গতিবিধিও নজরে পড়ে না সৈকত শহরে। একাংশ পর্যটক কিছু হোটেলের পরিষেবা নিয়েও প্রশ্ন করেছেন। হুগলির চূঁচুড়া থেকে এসেছিলেন প্রিয়ঙ্কা শর্মা। তাঁর কথায়, ‘‘নিউ দিঘার বাইপাসের অদূরে একটি হোটেলে ছিলাম। বাথরুম অপরিচ্ছন্ন। প্রয়োজন মতো জল পর্যন্ত দেওয়া হয়নি। পর্যটকদের সুবিধা অসুবিধা দেখার জন্য অবিলম্বে প্রশাসনের তরফে প্রতিটি হোটেলে সারপ্রাইজ ভিজিট হওয়া উচিত।’’
দিঘা-শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদ (ডিএসডিএ) এবং রামনগর-১ ব্লক প্রশাসন সূত্রের খবর, মাঝখানে পর্যটকদের অভিযোগ জানানোর জন্য ড্রপ বক্স এবং হেল্পলাইন নম্বর চালু করেছিল ডিএসডিএ। আগে একাধিকবার দিঘার সমস্ত হোটেল ব্যবসায়ীকে নিয়ে একটি বৈঠক হয়েছে। সেখানে ব্যবসায়ীদের ঘর ভাড়া এবং পরিষেবা নিয়ে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে। ভাড়ার তালিকাও পর্ষদের দফতরে জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু সেই নির্দেশ দেওয়ার পরও বাড়তি ভাড়া আদায় হচ্ছে বলে এখনও অভিযোগ উঠেছে। এ ব্যাপারে দিঘা-শঙ্করপুর হোটেল মালিক সংগঠনের যুগ্ম সম্পাদক বিপ্রদাস চক্রবর্তী বলেন, ‘‘হোটেলের ভাড়া নিয়ে পর্যটকেরা সম্প্রতি অভিযোগ করেননি। তবে পরিষেবা নিয়ে কারও আপত্তি থাকলে আমাদের অফিসে জানাতে পারেন।’’
কেন হোটেলের দর এমন ওঠা নামা করে? কয়েকজন হোটেল মালিকের কথায়, ‘‘এতো চাহিদা এবং সরবরাহের সোজা হিসাব।’’ আগামী শনি ও রবি এমনিতেই সপ্তাহ শেষের ছুটি। তার সঙ্গে এবার যুক্ত হয়েছে আগামী সোমবার ইদুজ্জোহা উপলক্ষে সরকারি ছুটি। এই সময়েও হোটেলের ঘরের দাম বাড়বে বলে দাবি।
মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের পরেও কড়া হচ্ছে না কেন প্রশাসন? এ ব্যাপারে ডিএসডিএ-র দায়িত্বপ্রাপ্ত এগজিকিউটিভ অফিসার তথা কাঁথির মহকুমা শাসক শৌভিক ভট্টাচার্য বলছেন, ‘‘অস্বাভাবিক হারে ভাড়া বেড়েছে, তেমন অভিযোগ আসেনি। তবুও আমরা খোঁজ খবর নিচ্ছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy