ঝাড়গ্রাম শহরে আগাছা পরিষ্কার করল যুব তৃণমূল। নিজস্ব চিত্র
সরকারি ত্রাণ বিলিতে দলের অবাঞ্ছিত হস্তক্ষেপ চলবে না। জনসমর্থন আদায়ের জন্য মানুষের কাজ করতে হবে। এমন কাজ, যা ‘চোখে দেখা যায়’। শনিবার ঝাড়গ্রামে দলীয় বৈঠকে এমনই নিদান দিয়ে গিয়েছেন তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়। পার্থের নির্দেশে ‘চোখে পড়া’র মতো কাজ শুরু করে দিয়েছেন দলের শাখা সংগঠনের নেতা-কর্মীরা। রবিবার ঝাড়গ্রাম শহরের রাস্তার ধারে আগাছা পরিষ্কার করলেন যুব তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা। অন্যদিকে, তৃণমূল ছাত্র পরিষদের তরফে সংখ্যালঘু শিশুদের দোকানে নিয়ে গিয়ে ইদের নতুন পোশাক কিনে দেওয়া হয়েছে।
তৃণমূলের এই কর্মসূচিকে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বিরোধীরা। ঝাড়গ্রামের বিজেপি সাংসদ কুনার হেমব্রম বলেন, ‘‘রেশনের বিলি-বন্টন নিয়ে সমস্যা রয়েছে। পরিযায়ী শ্রমিকদের অনেকেই হেঁটে কিংবা সাইকেলে বাড়ি ফিরছেন। অনেকে গ্রামে ঢুকতে পারছেন না। আগাছা পরিষ্কার না-করে মানুষের চোখে পড়ার মতো এই কাজগুলি তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা করুন। তাতে মানুষের অনেক উপকার হবে।’’
শনিবার ঝাড়গ্রামে জেলাশাসকের দফতরের সভাঘরে প্রশাসনিক বৈঠকের পরে ঝাড়গ্রাম রাজবাড়ি ট্যুরিস্ট কমপ্লেক্সে দলীয় বৈঠক করেন পার্থ। দলীয় বৈঠকে হাজির ছিলেন দলের জেলা, শহর ও ৮টি ব্লক স্তরের নেতা-নেত্রী, দলীয় জনপ্রতিনিধি ও দলীয় শাখা সংগঠনের নেতা-নেত্রীরা। শাসক দল সূত্রের খবর, দলীয় বৈঠকে পার্থ জানিয়ে দেন, এখন এই পরিস্থিতিতে কেবল ত্রাণ বিলি করে জনসংযোগ সম্ভব নয়। মানুষের পাশে থেকে এমন কাজ করতে হবে, যাতে মানুষ দলের নেতা-কর্মীদের পাশের বাড়ির লোক মনে করেন। কেমন হবে সেই কাজ? সেটাও বাতলে দেন তৃণমূলের জেলা পর্যবেক্ষক। তৃণমূল সূত্রের খবর, বৈঠকে পার্থ জানান, গতানুগতিকতার বাইরে চোখে দেখার মতো, মনে রাখার মতো কাজ করতে হবে। মহাসচিব জানিয়ে দেন, এখন থেকে ছোট ছোট কাজের মধ্য দিয়ে মানুষের সমস্যার সুরাহা করতে হবে। তাহলেই রাজনৈতিক সুফল মিলবে।
বৈঠকে পার্থের কাছে দু’একজন নেতা পুরভোটের বিষয়ে জানতে চান। দলীয় সূত্রের খবর, বৈঠকে পার্থ জানান, বিধানসভা ভোটের আগে পুরভোটের কোনও সম্ভাবনা নেই। তবে ভোট নেই বলে হাত গুটিয়ে বসে থাকা চলবে না। কারণ, আগামী বছর বিধানসভা ভোট হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সেই লক্ষ্যে এখন থেকে শহরের প্রতিটি ওয়ার্ডে এবং গ্রামীণ এলাকার প্রতিটি অঞ্চলে একযোগে মানুষের সমস্যার সুরাহা করে পাশে থাকার নিদান দিয়েছেন পার্থ। তবে দলের একাংশ প্রশাসনের কাজকর্মে নাক গলাচ্ছেন বলে খবর পান তৃণমূলের মহাসচিব। বৈঠকে নেতা-কর্মীদের তৃণমূলের মহাসচিব সাফ জানিয়ে দেন, করোনা ও আমপান পরবর্তী পরিস্থিতিতে প্রশাসনের কাজে নাক গলানো চলবে না। ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরি করে ত্রাণ বিলি ও পুনর্গঠনের কাজ প্রশাসন করছে। প্রশাসনের কাজে কোনও রকম অবাঞ্ছিত দলীয় হস্তক্ষেপ করা চলবে না।
পার্থের নিদান মেনে এ দিন ঝাড়গ্রাম শহরে রাস্তার ধারের বিষাক্ত পার্থেনিয়াম আগাছা সাফ করতে নামেন ঝাড়গ্রাম শহর যুব তৃণমূলের সভাপতি অজিত মাহাতো ও যুব সংগঠনের কর্মীরা। সঙ্গে ছিলেন তৃণমূলের শহর-কোর কমিটির সদস্য রিংকা মুখোপাধ্যায়। রিংকা বলেন, ‘‘মহাসচিব মানুষের সমস্যার সুরাহা করে মানুষের পাশে থাকার নির্দেশ দিয়েছেন। তাই আমরা আগাছা সাফ করতে পথে নেমেছি।’’ অন্যদিকে, টিএমসিপি-র ঝাড়গ্রাম গ্রামীণ ব্লক সভপতি শেখ নজরুল মানিকপাড়া এলাকার সংখ্যালঘু শিশু কিশোর-কিশোরীদের দোকানে নিয়ে গিয়ে তাদের পছন্দ মতো নতুন পোষাক কিনে দিয়েছেন। নজরুল জানান, টিএমসিপি-র রাজ্য সম্পাদক আর্য ঘোষের নির্দেশে নতুন পোষাক কিনে দেওয়ার পাশাপাশি, সংখ্যালঘু পরিবারের হাতে লাচ্ছা, চিনি, গুঁড়ো দুধের প্যাকেটও তুলে দিয়েছেন।
জেলা তৃণমূলের সভানেত্রী বিরবাহা সরেন বলেন, ‘‘এখন রাজনৈতিক কর্মসূচি অসম্ভব। তাই মানুষের সমস্যার সুরাহা করে তাঁদের পাশে থাকার নির্দেশ দিয়েছেন মহাসচিব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy