স্মরণ: নন্দীগ্রামে শুভেন্দু ও চন্দ্রিমা। ছবি: পার্থপ্রতিম দাস
নন্দীগ্রামের জমি আন্দোলনে ভর করেই পূর্ব মেদিনীপুরে সিপিএমের আলগা মাটিতে ফুটেছিল ঘাসফুল। আন্দোলনের ধাত্রীভূমি সেই নন্দীগ্রামে গুলিচালনার দশ বছর পূর্তির অনুষ্ঠানেই কার্যত ভোট প্রচারের দামামা বাজাল তৃণমূল।
নন্দীগ্রামে ভূমি উচ্ছেদ প্রতিরোধ কমিটির নেতৃত্বে জমি রক্ষা আন্দোলনের সময় ২০০৭ সালের ১৪ মার্চ পুলিশ অভিযান চালায়। ওইদিন পুলিশের গুলিতে ১৪ জন গ্রামবাসীর মৃত্যু হয় বলে অভিযোগ। নিহতদের স্মরণে প্রতি বছর ১৪ মার্চ রাজ্য জুড়ে নন্দীগ্রাম দিবস পালন করে তৃণমূল। সেই উপলক্ষে মঙ্গলবার নন্দীগ্রামের সোনাচুড়ার ভাঙাবেড়ায় শহিদ মিনার প্রাঙ্গণে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন হয়। উপস্থিত ছিলেন নন্দীগ্রামের বিধায়ক তথা পরিবহণ মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী, সাংসদ দিব্যেন্দু অধিকারী, বিধায়ক ফিরোজা বিবি, রণজিৎ মণ্ডল, জেলা পরিষদের সভাধিপতি মধুরিমা মণ্ডল, তৃণমূল নেতা শেখ সুফিয়ান, আবু তাহের। আগামী ৯ এপ্রিল জেলার দক্ষিণ কাঁথি বিধানসভা কেন্দ্রে উপ-নির্বাচনের ভোটগ্রহণ। ওই কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যও ছিলেন এ দিনের অনুষ্ঠানে।
অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকে চন্দ্রিমাদেবীর সমর্থনে প্রচার না করলেও এ দিন শুভেন্দুবাবু সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘নন্দীগ্রামে জমিরক্ষা আন্দোলনের সময় চন্দ্রিমাদেবী রাজনৈতিকভাবে রাস্তায় নেমে লড়াই করেছেন। হাইকোর্টের আইনজীবী হিসেবে উনি আমাদের আন্দোলনকে নানা ভাবে সাহায্য করেছেন।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘নন্দীগ্রামে আজ শহিদ দিবস উদ্যাপন হচ্ছে। উনি আবেগ থেকেই নন্দীগ্রামে এসে শহিদদের মালা, পুষ্পস্তবক দিয়ে শ্রদ্ধা জানিয়ে যাত্রা শুরু করেছেন। কাঁথিতে দলের কর্মীরাও বলেছেন, নন্দীগ্রামে ১৪ মার্চের শহিদ পরিবারের সদস্যদের সম্মান জানিয়ে প্রচার শুরু করবেন।’’
উপ-নির্বাচনে তৃণমূল প্রার্থী চন্দ্রিমাদেবী সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘২০০৭ সালে জমিরক্ষা আন্দোলনের সময় নন্দীগ্রামের মানুষের উপর কী ভাবে অত্যাচার হয়েছিল তা সারা বিশ্বের মানুষ জানে। অতীতে এ ধরনের ঘটনার বিচার হয়েছে। হয়তো দেরিতে হয়েছে, তবে একদিন নন্দীগ্রামের মানুষও বিচার পাবেন এই বিশ্বাস আমাদের আছে।’’
শহিদ স্মরণের অনুষ্ঠানের পর সাংবাদিক প্রশ্নের উত্তরে শুভেন্দুবাবু বলেন, ‘‘নন্দীগ্রামে জমি আন্দোলনকারীদের উপর গুলি চালিয়ে যে নৃশংস হত্যাকাণ্ড হয়েছিল আমরা এখনও তাঁর বিচার পাইনি। হাইকোর্টের নির্দেশে সিবিআই ওই ঘটনার তদন্ত করে। কিন্তু সিবিআই উল্টে আন্দোলনকারী ১৬১ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দিয়েছিল।’’
তিনি আরও বলেন, ‘‘যেহেতু হাইকোর্টের নির্দেশে সিবিআই তদন্ত হয়েছিল তাই বর্তমান রাজ্য সরকার তাতে কোন হস্তক্ষেপ করতে পারেনি। আমি মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আবেদন করব আইনগত বিষয় ঠিক থাকলে ১৪ মার্চের ঘটনার পুনরায় তদন্ত করে দোষীদের চিহ্নিত করে গ্রেফতার করা উচিত।’’ পরিবহণ মন্ত্রীর কথায়, ‘‘নন্দীগ্রামে ১৪ মার্চের ঘটনার পর ১০ বছর কেটে গেলেও হয়তো আমরা এখনও বিচার পাইনি। তবে নন্দীগ্রামের মানুষ একদিন
বিচার পাবেই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy