ভূপতিনগরে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ তৃণমূলের। — নিজস্ব চিত্র।
পূর্ব মেদিনীপুরের ভূপতিনগরে এনআইএ-র উপর হামলার ঘটনায় যখন তোলপাড় রাজ্য, তখন দলীয় কর্মীদের গ্রেফতারির প্রতিবাদে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ দেখাল স্থানীয় তৃণমূল। ভূপতিনগর থানার অর্জুননগর-সহ একাধিক জায়গায় রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে, পথ অবরোধ করে বিক্ষোভে শামিল হন তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা।
২০২২ সালের ২ ডিসেম্বর নাড়ুয়াবিলা গ্রামের বাসিন্দা রাজকুমার মান্নার বাড়িতে বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এলাকার একাধিক তৃণমূল নেতা-কর্মীর নাম এই ঘটনায় জড়িয়ে যায়। মামলার তদন্তের দায়িত্বভার আনুষ্ঠানিক ভাবে নেওয়ার পর এলাকার একাধিক তৃণমূল নেতা-কর্মীকে ডেকে পাঠিয়েছিল এনআইএ। সে সময় সকলেই তদন্তে সহযোগিতা করেছিলেন। কিন্তু ভোটঘোষণার পর সম্প্রতি নতুন করে এলাকার বাছাই করা তৃণমূল নেতা-কর্মীদের আবারও ডেকে পাঠানো শুরু হয়। ভোটের প্রচারে ব্যস্ত থাকার কারণ দেখিয়ে কেউ যাননি। এর পরেই গ্রামে ঢুকে বলাই মাইতি এবং মনোব্রত জানাকে তুলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে এনআইএ। তার পরেই যত গোলমাল। এনআইএ-র এই ‘অতি সক্রিয়তা’ নিয়েই আপত্তি তৃণমূলের। তারই প্রতিবাদে ভূপতিনগরের জায়গায় জায়গায় টায়ার জ্বালিয়ে শুরু হয় বিক্ষোভ।
মুগবেড়িয়া অঞ্চল তৃণমূলের সভাপতি ফাল্গুনীকুমার নন্দের দাবি, বলাই এবং মনোব্রতকে দলের তরফে ভোটের বিভিন্ন দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। তাঁর অভিযোগ, তাঁরা যাতে সে সব না করতে পারেন, সেই জন্যই এনআইএ-কে দিয়ে গোলমাল পাকানোর চেষ্টা করল বিজেপি। তিনি বলেন, “ভগবানপুর ২ ব্লকের অর্জুননগর অঞ্চল তৃণমূলের সভাপতি বলাইচরণ মাইতি এবং নিজনাড়ুয়া বুথ তৃণমূলের সভাপতি মনোব্রত জানা লোকসভা ভোটে দলের প্রচারে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব সামলাচ্ছিলেন। ভোটঘোষণার পর তাঁরা প্রচারে ব্যস্ত থাকায় এনআইএ-র নোটিসে সাড়া দিতে পারেননি। তা ছাড়া ভোটের মুখে এনআইএ-র জিজ্ঞাসাবাদ স্থগিত রাখার দাবি নিয়ে ইতিমধ্যে আদালতে আবেদনও জানানো হয়েছে। সেই শুনানির আগেই শনিবার এনআইএ এলাকায় হানা দিয়েছে।’’ একই সঙ্গে, এনআইএ আধিকারিকদের উপর হামলার কোনও ঘটনা ঘটেনি বলে দাবি স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের। ফাল্গুনী বলেন, “ভূপতিনগরে এনআইএ-র গাড়িতে হামলার কোনও ঘটনাই ঘটেনি। কেউ ঢিল ছুড়ে দিয়েছে বলে দাবি করা হচ্ছে। আচমকা এলাকায় অভিযান চালানোর জেরে গ্রামে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছিল। তবে কেউ এনআইএ-র উপরে হামলা চালায়নি।” তৃণমূলের দাবি, বিস্ফোরণের তদন্তে সব রকম সহযোগিতা করতে তৈরি দল। যদিও ঠিক ভোটের মুখে ২০২২ সালের ঘটনা নিয়ে এনআইয়ের এই সক্রিয়তাকেও ভাল চোখে দেখা হচ্ছে না।
ভগবানপুরের বিজেপি বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ মাইতির দাবি, “এই এলাকায় বোমা-বন্দুকের রাজনীতি করছে তৃণমূল। যে বাড়িতে বোমা তৈরি হচ্ছিল তিনিও এলাকার দাপুটে তৃণমূল নেতা হিসেবেই পরিচিত। এঁরা বিস্ফোরক কোথা থেকে এনেছিলেন, কী ভাবে এই বিস্ফোরণ, কত বিস্ফোরক মজুত ছিল, এই কারবারে আর কারা জড়িত — সবটাই এনআইএ তদন্ত করে দেখছে। সেখানে বার বার তলবের পরেও অভিযুক্তেরা যাননি। তার জেরে অভিযুক্তদের এনআইএ ধরতে গিয়ে হামলার মুখে পড়ল।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy