তালিকা ব্লক প্রশাসনের কাছে পৌঁছতেই দাসপুরে নিষ্ক্রিয় নেতারা তৎপর হয়েছিলেন। সাব কমিটির হাতে তালিকা আসতেই নাম রয়েছে কিনা জানার ব্যস্ততা শুরু হয়েছিল। যে প্রতিবাদ কমিটি চন্দ্রেশ্বর খাল খননের বিরোধিতা করে রাস্তায় নেমেছিল, তালিকায় নাম রয়েছে কিনা জানতে উৎসুক ছিলেন সেই কমিটির সদস্যরাও। এ সবের পরে শনিবার জমি মালিকদের লিখিত সম্মতি আদায়ে সরাসরি গ্রামে পৌঁছল দাসপুর সাব কমিটি। প্রথম দিনে বৈকুন্ঠপুরে বেশ কয়েকজন জমির মালিক লিখিত সম্মতিও তুলে দিয়েছেন সাব কমিটির হাতে।
ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান রূপায়ণের লক্ষ্যে গঠিত ডিস্ট্রিক মনিটারিং কমিটির সদস্য আশিস হুতাইত বলেন, “ শনিবার থেকেই দাসপুরে চন্দ্রেশ্বর খাল খননের জন্য জমি মালিকদের সম্মতি পত্র আদায়ে নামা হয়েছে। সাফল্যও এসেছে। ১৫-২০ জন জমি মালিকের সম্মতি মিলেছে। এ বার থেকে নিয়ম করেই নামা হবে।”
মাস্টার প্ল্যানে প্রস্তাবিত একাধিক প্রকল্পের কাজ আগেই শুরু হয়েছে। দাসপুরে রূপনারায়ণ নদের ধারে পাঁচটি স্ল্যুস গেটের কাজ চলছে। ঘাটালে পাম্প হাউস তৈরির প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। প্রথম পর্যায়ে শিলাবতীর ২৩ কিলোমিটার ড্রেজ়িং শুরুর তোড়জোড়ও চলছে। তবে জমির জন্য দাসপুরে চন্দ্রেশ্বর খাল খননের প্রস্তুতি থমকে ছিল। নতুন খাল কাটার নকশা-সহ বাকি প্রক্রিয়া সারা। এখন জমি সরকারের হাতে এলেই যন্ত্র নামিয়ে শুরু হবে খাল খনন। কিন্তু নতুন করে খাল খনন হলে দাসপুর প্লাবিত হবে, তাই জমি দেওয়া হবে না বলে দাসপুর আন্দোলনে নেমেছিল প্রতিবাদ কমিটি। সেই কমিটি এখনও আন্দোলনে অনড়। তবে তারই মধ্যে সাব কমিটির সদস্য তথা শাসক দলের নেতাদের এলাকায় পৌঁছন।
শনিবার গ্রামে পৌঁছনর আগে সাব কমিটি দাসপুর ১ ব্লক কার্যালয়ে জরুরি বৈঠক হয়। বৈঠকে ঘাটালের মহকুমাশাসক সুমন বিশ্বাস, বিডিও দীপঙ্কর বিশ্বাস ও দাসপুর সাব কমিটির সদস্যরা ছিলেন। বৈঠক সেরে বৈকুন্ঠপুর গ্রামে পৌঁছন সাব কমিটির সদস্যরা। দু’ভাগে জমি মালিকদের বাড়িতে যান তাঁরা। দলে ছিলেন কমিটির সদস্য আশিস হুতাইত, সুকুমার পাত্র, সুনীল ভৌমিক, বিধায়ক মমতা ভুঁইয়া, কাজল সামন্ত, সুজিত বন্দ্যোপাধ্যায়রা।
জানা গিয়েছে, চন্দ্রেশ্বর খাল সাড়ে পাঁচ কিলোমিটার খনন হবে। প্রথমে দু’কিলোমিটার খননে প্রাথমিক ভাবে ৬৩ একর জমি কিনবে সরকার। ওই পরিমাণ জমির মালিকের সংখ্যা ২,৮০০ জন। বৈকুন্ঠপুর থেকেই খাল কাটা শুরু হবে। তারপর চাঁদপুর, ঝুমঝুমি, পলতাবেড়িয়া, সুরনারায়ণপুর, খড়দা-বিষ্ণুপুর, রূপনারায়ণপুর, ডিহিচেতুয়া হয়ে গুড়লিতে এই খাল শিলাবতীর সঙ্গে মিশবে। সাব কমিটি মাঠে নামতেই ‘চন্দ্রেশ্বর খাল খনন প্রতিবাদী কমিটি’ও পরবর্তী আন্দোলনের রূপরেখা নিয়ে আলোচনা শুরু করেছে। তবে এ নিয়ে কোনও সিদ্ধান্ত এখনও হয়নি। সাব কমিটির সদস্য, তৃণমূল নেতা আশিস হুতাইত বলেন, “সব জমি মালিকের নাম হাতে এলেই প্রতিবাদ কমিটির সঙ্গে বৈঠকে বসব। এখন প্রথম পর্যায়ের তালিকা এসেছে। প্রয়োজন হলে জমি মালিকদের সঙ্গেও আলোচনায় বসব।”
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)