তৃণমূলের সর্ব ভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। Sourced by the ABP
দুর্নীতির অভিযোগে কাউকে পদ থেকে সরিয়ে দিয়েছিলেন তৃণমূলের সর্ব ভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তো কেউ দলের শীর্ষ নেতৃত্বের উপরে ‘গোঁসা’ করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভায় এবং অভিষেকের কর্মসূচিতে যোগ দেননি। ওই সব নেতৃত্বের একাংশই তৃণমূলের পঞ্চায়েতের প্রার্থী। কেউ আবার মনোনয়ন জমা দেওয়ার পরেই না কি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বীতায় জয়ী হয়ে গিয়েছেন!
গত এপ্রিলে দিঘায় কর্মী সম্মেলন করেছিলেন মমতা। সেখানে প্রতিটি বুথ থেকে ১৫ জন দলের কর্মী উপস্থিত ছিলেন। একমাত্র গরহাজির ছিলেন কাঁথি-১ ব্লকের সাবাজপুট অঞ্চলের শাসকদলের নেতারা। গত ৩১ মে দলের ‘নব জোয়ার’ কর্মসূচিতে চণ্ডীপুরে পঞ্চায়েতের প্রার্থী বাছাইয়ের ভোটাভুটিতেও অনুপস্থিত ছিলেন সাবাজপুটের ১৯টি বুথের সভাপতি এবং পদাধিকারীরা। নানা অভিযোগে বিভিন্ন সময়ে দলের কর্মসূচি বয়কট রাখলেও এবার পঞ্চায়েত ভোটে সাবাজপুট এলাকার একাধিক নেতাকে প্রার্থী করেছে তৃণমূল। এঁদের মধ্যে রয়েছেন কাঁথি সাংগঠনিক জেলার নেতা মৃন্ময় পন্ডা, রামগোবিন্দ দাস, ব্লক যুব তৃণমূল সভাপতি তানিয়া জানা এবং গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রাক্তন প্রধাননমিতা দাস।
তৃণমূলের প্রাক্তন ব্লক সভাপতি তথা জেলা কমিটির সদস্য রামগোবিন্দ ইতিমধ্যে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ীও হয়ে গিয়েছেন। তাঁর বিরুদ্ধে গ্রাম পঞ্চায়েতে বিরোধী কোনও দল প্রার্থী দেয়নি বলে তৃণমূলের তরফে দাবি করা হয়েছে।দলনেত্রী এবং অভিষেকের কর্মসূচি বয়কট করা দলের শৃঙ্খলাভঙ্গের মধ্যেই পড়ে বলে মনে করে রাজনৈতিক মহল। তা সত্ত্বেও কীভাবে তাঁরা ত্রিস্তর পঞ্চায়েতের প্রার্থী হলেন, এ নিয়ে দলের নীচু তলার কর্মীদের একাংশ বিস্মিত। যদিও রামগোবিন্দ বলছেন, "আমরা তো আর দল ছেড়ে চলে যাইনি রে বাবা।"
অন্যদিকে, গত ৩ ডিসেম্বর কাঁথিতে সভা করার আগে অভিষেক ১১৬ বি জাতীয় সড়কের পাশের লোকাল বোর্ড গ্রামে আচমকা ঢুকে পড়েন। তফসিলি অধ্যুষিত পাড়ার লোকেদের মুখে সেদিন অভিষেক শুনেছিলেন, অনুন্নয়ন আর স্বজনপোষণের অভিযোগ। পরে সভামঞ্চ থেকে মারিশদা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান, উপ প্রধান এবং তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতিকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে পদত্যাগের নির্দেশ দিয়েছিলেন অভিষেক। সেই মাফিক ঝুনুরানি মণ্ডল গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান, রামকৃষ্ণ মণ্ডল উপ-প্রধান এবং অঞ্চল তৃণমূল সভাপতি পদ থেকে গৌতম মিশ্র ইস্তফা দিয়েছিলেন। কিন্তু ছ' মাস ঘুরতে না ঘুরতেই তাঁরা আবার পঞ্চায়েতে তৃণমূলের প্রার্থী। কাঁথি -৩ ব্লক প্রশাসন সূত্রের খবর, ঝুমুরানি এবং গৌতম যথাক্রমে গ্রাম পঞ্চায়েতের এবং পঞ্চায়েত সমিতির প্রার্থী হিসাবে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন। গৌতম আর ঝুমুরানি দুজনেই বলছেন, "পঞ্চায়েতে প্রার্থী হতে চেয়ে মনোনয়ন জমা দিয়েছি।’’ তবে রামকৃষ্ণ বলছেন, "দলের তরফে আমাকে প্রার্থী হতে বলা হয়েছিল। আমি রাজি হইনি।’’
দলের ভাবমূর্তি পরিচ্ছন্ন রাখার জন্য সর্বদা সচেষ্ট বলে রাজ্যের নানা প্রান্তে সভা মঞ্চে দাবি করেন অভিষেক। তার পরেও তৃণমূলের এমন প্রার্থী নির্বাচনে এলাকার সিপিএম নেতা ঝাড়েশ্বর বেরা বলছেন, "অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় আগাগোড়া তৃণমূল দুর্নীতির পাকে নিমজ্জিত। শুধুমাত্র আই ওয়াশ করার জন্য সেদিন ওঁদের পদত্যাগ করতে বলা হয়েছিল।’’ বিজেপির কাঁথি সাংগঠনের জেলার সাধারণ সম্পাদক চন্দ্রশেখর মণ্ডল বলছেন, "যদি সাধারণ মানুষ তাঁদের প্রার্থী হিসেবে চেয়েছেন, তাহলে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে স্বীকার করতে হবে সেদিন তাঁর সিদ্ধান্ত নেওয়া ভুল হয়েছিল।’’ তৃণমূলের দলীয় রীতিনীতি নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে নিচু তলার কর্মীদের অন্দরেও। এ প্রসঙ্গে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার বিশেষ দায়িত্বপ্রাপ্ত তথা রাজ্য তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলছেন, "কোনও ভাবেই এমনটা হওয়া উচিত নয়। স্থানীয় নেতৃত্ব এক্ষেত্রে কী করেছেন খোঁজ নিতে হবে। এ বিষয়ে জেলা সভাপতির সঙ্গে আমি কথা বলব।"
ভোটের প্রচার
মেচেদা: আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনে বহু আসনে প্রার্থী দিয়েছে এসইউসি। শনিবার মেচেদা এলাকায় বাড়ি বাড়ি ভোট প্রচার করেন এসইউসি প্রার্থীরা। উপস্থিত ছিলেন জেলা পরিষদ প্রার্থী শ্রাবণী বেরা, পঞ্চায়েত সমিতির প্রার্থী স্মৃতিরানি পড়িয়া, গ্রাম পঞ্চায়েত প্রার্থী বিনু মাইতি প্রমুখ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy