ফাইল চিত্র।
দলের নির্দেশ, কোভিড বিধি মেনেই পালন করতে হবে ‘খেলা হবে’ দিবস। ব্লক, অঞ্চল, ওয়ার্ড— সব স্তরে করাতে হবে ফুটবল প্রতিযোগিতা। কিন্তু সেই দল জোগাড়ে হন্যে তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা। পশ্চিম মেদিনীপুরে এত ফুটবল দলই যে নেই! অগত্যা, কোথাও ক্যারম প্রতিযোগিতা হচ্ছে। কোথাও ১৬ অগস্ট নির্ধারিত দিনের বদলে অন্য দিন ফুটবল ম্যাচের আয়োজন করতে হচ্ছে।
একের পর এক অনুরোধ ফেরাতে হচ্ছে ফুটবল দলগুলিকেও। মেদিনীপুরে ফুটবল দল রয়েছে মলয় দত্তের। মলয় বলছেন, ‘‘সকলের অনুরোধ রাখতে পারছি না। একদিনে ক’টা ম্যাচই বা খেলা যায় বলুন!’’ ‘মেদিনীপুর একাদশ’ নামে দল রয়েছে মলয়ের। চাহিদা দেখে ‘খেপ খাটা’ ফুটবলারদের নিয়ে ‘পালবাড়ি জুনিয়র’ নামে আরও একটি দল গড়তে হয়েছে তাঁকে। মলয় বলছেন, ‘‘১৬ অগস্ট আমাদের কেশপুরে খেলতে যাওয়ার কথা। এখন আমাদের এলাকার কাউন্সিলর বলছেন, এখানেও দল দিতে হবে। একটি দলকে কেশপুরে পাঠাচ্ছি। অন্যটি মেদিনীপুরে খেলবে। আরও অনুরোধ এসেছিল। সব না করতে হয়েছে।’’
ফাঁপরে পড়েছে ‘কেশপুর মেরিনার্স’ও। দলের অধিনায়ক মহম্মদ শালাহা বলছিলেন, ‘‘আমরা ১৬ তারিখ কেশপুরেই খেলব। মেদিনীপুর থেকে, গড়বেতা থেকে ডাক এসেছিল। একদিনে এতগুলি জায়গায় গিয়ে খেলা সম্ভব নয়।’’ বিপাকে উদ্যোক্তারাও। কেশপুরের ঝেঁতলায় তৃণমূলের উদ্যোগে ওই দিন ফুটবল প্রতিযোগিতা হবে ৮টি দলকে নিয়ে। উদ্যোক্তাদের তরফে চঞ্চল হাজরা মানছেন, ‘‘দল জোগাড়ে হিমশিম খেতে হয়েছে। দেখা যাক শেষ পর্যন্ত সবাই ওই দিন আসে কি না।’’
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘোষণা মতো, ১৬ অগস্ট রাজ্য জুড়ে পালিত হবে ‘খেলা হবে’ দিবস। সরকারি কর্মসূচির পাশাপাশি তৃণমূলের দলীয় কর্মসূচিও থাকছে। মূলত ফুটবল প্রতিযোগিতাই হবে। তৃণমূলের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সভাপতি অজিত মাইতি বলেন, ‘‘প্রতিটি ব্লকে, শহরে কর্মসূচি হবে। অঞ্চলস্তরে, ওয়ার্ডস্তরেও ফুটবল প্রতিযোগিতার আয়োজন করতে বলা হয়েছে।’’
পশ্চিম মেদিনীপুরে ২১১টি অঞ্চল, ১২০টি ওয়ার্ড রয়েছে। অঙ্ক বলছে, ৮টি করে দল নিয়ে প্রতিযোগিতা হলে প্রয়োজন ২,৬৪৮টি দল। ৪টি করে দল নিয়ে প্রতিযোগিতা হলেও চাই ১,৩২৪টি দল। কিন্তু জেলায় এত ফুটবল দল নেই। অগত্যা সর্বত্র ওই দিন প্রতিযোগিতা হচ্ছে না। মেদিনীপুরের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের যুব তৃণমূল নেতা বুদ্ধ মণ্ডলের স্বীকারোক্তি, ‘‘দল পাইনি। পরে একদিন প্রতিযোগিতা করাব।’’
অবস্থা দেখে মেদিনীপুর শহরের তৃণমূল প্রভাবিত ‘ই-রিকশা টোটো অপারেটর ইউনিয়ন’ সোমবার ক্যারম প্রতিযোগিতা করাচ্ছে। ইউনিয়নের তরফে বুদ্ধ মহাপাত্র বলছেন, ‘‘ফুটবল দল পাওয়া সমস্যার। তাই ক্যারম খেলা করাচ্ছি।’’
শালবনির যুব তৃণমূল নেতা তথা মেদিনীপুর মহকুমা ক্রীড়া সংস্থার যুগ্ম সম্পাদক সন্দীপ সিংহ বলছিলেন, ‘‘এখন জঙ্গলমহল কাপ হয়। প্রতিটি ব্লকেই ৫০-৬০টি ফুটবল দল রয়েছে। না হলে দল পেতে আরও সমস্যা হত।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy