Advertisement
২০ জানুয়ারি ২০২৫

হলদিয়ায় দায়িত্ব ভাগ শুভেন্দুর, সঞ্জয়ের সঙ্গে উত্তম দাওয়াই

কেশপুরের আনন্দপুরে শনিবার বিজেপির সভা হয়েছে। সভা থেকে কেশপুরকে ‘তৃণমূলের শেষপুর’ করে ছাড়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন দিলীপ ঘোষেরা।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০১ জুলাই ২০১৯ ০০:২৭
Share: Save:

শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে বৈঠক। তারপরই কেশপুরে সাংগঠনিক রদবদল।

তৃণমূল সূত্রের খবর, কেশপুরে তৃণমূলের ব্লক সভাপতি সঞ্জয় পানের সঙ্গে জোড়া হয়েছে উত্তম ত্রিপাঠীকে। ব্লক কার্যকরী সভাপতি করা হয়েছে তাঁকে। উত্তম যুব তৃণমূলের কেশপুর ব্লক সভাপতি ছিলেন। উত্তমের জায়গায় যুব তৃণমূলের ব্লক সভাপতি করা হয়েছে সফিউর রহমানকে। যুব তৃণমূলের ব্লক কার্যকরী সভাপতি করা হয়েছে শেখ আবদুল্লাকে। কেশপুরের জন্য কোর কমিটি গড়ে দিয়েছেন শুভেন্দু। পরামর্শ দিয়েছেন, নিয়মিত বৈঠকে বসতে হবে।

কেশপুরের আনন্দপুরে শনিবার বিজেপির সভা হয়েছে। সভা থেকে কেশপুরকে ‘তৃণমূলের শেষপুর’ করে ছাড়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন দিলীপ ঘোষেরা। শাসক দল সূত্রের খবর, এ জেলার পর্যবেক্ষক শুভেন্দুর ডাকে ওই দিন রাতেই পাশের জেলা পূর্ব মেদিনীপুরের হলদিয়ায় ছুটে গিয়েছিলেন কেশপুরের তৃণমূল নেতারা। শুভেন্দুর সঙ্গে তাঁদের বৈঠক হয়েছে। বৈঠকে ছিলেন কেশপুরের তৃণমূল বিধায়ক শিউলি সাহা, দলের কেশপুর ব্লক সভাপতি সঞ্জয় পান, এক সময়ের ‘লড়াকু’ নেতা মহম্মদ রফিক প্রমুখও।

রাতেই হলদিয়ায় ছুটে যেতে হল কেন? শুভেন্দুর সঙ্গে বৈঠক করে কেশপুরে দলের রণকৌশল ঠিক করতে? তৃণমূলের জেলা সভাপতি অজিতের জবাব, ‘‘সাংগঠনিক ব্যাপারে কিছু বলব না।’’ বৈঠক না কি দীর্ঘ হয়েছে? অনেক আলোচনা হয়েছে, তাই? অজিতের জবাব, ‘‘সেই এক প্রশ্ন কেন! বললাম তো এ নিয়ে কিছু বলব না।’’ বৈঠক নিয়ে শিউলি বলেন, ‘‘আমি কিছু বলব না।’’ সঞ্জয় বলেন, ‘‘বলার মতো কিছু নয়। তাই বলছি না!’’ রফিকের মন্তব্য, ‘‘এটা দলের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার।’’ দলের এক সূত্রে খবর, ওই দিন হলদিয়ায় গুরুত্বপূর্ণ এক প্রশাসনিক বৈঠক ছিল শুভেন্দুর। সেই বৈঠকের পরই কেশপুরের নেতাদের নিয়ে তিনি বৈঠকে বসেন। ছিলেন কেশপুর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি শুভ্রা দে সেনগুপ্ত সহ কয়েকটি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান এবং কয়েকটি অঞ্চলের দলের সভাপতিরাও।

ব্লকের দায়িত্বে সঞ্জয়ের পাশাপাশি উত্তমকে নিয়ে আসায় তৃণমূলের অন্দরে আলোচনা শুরু হয়েছে। অনেক নেতা কর্মী মনে করছেন, সঞ্জয় একাও আর ‘ছড়ি ঘোরাতে’ পারবেন না। দলের অন্দরে সঞ্জয়ের অপসারণের দাবি তুলেছিলেন একাংশ কর্মী। সঞ্জয়কে নিয়ে অসন্তোষ শনিবারের সভা থেকে উস্কে দিয়েছিলেন বিজেপি নেতা মুকুল রায়। নাম না করে সঞ্জয় এবং শুভ্রাকে বিঁধেছিলেন তিনি। বলেছিলেন, ‘‘কেশপুর দেখার অধিকার রাজা-রানির কাছেই আছে। এখানে যে সোনার খনি (কাটমানি) আছে, তা সেটা রাজা-রানিই দেখবে।’’

গত শুক্রবারই কলকাতায় এ জেলার নেতাদের নিয়ে বৈঠকে তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বার্তা দিয়েছেন, কেশপুরে দখলের রাজনীতি আর হবে না। রফিককে সতর্কও করে দেন তিনি। শনিবার রাতে হলদিয়ায় বৈঠকে একই বার্তা দিয়েছেন শুভেন্দু। তিনি মানুষকে সংগঠিত করে এগোনোর পরামর্শ দিয়েছেন। বৈঠকে শিউলিরা শুভেন্দুকে কেশপুরে আসার অনুরোধ করেন। সাড়া দিয়ে শুভেন্দুও জানিয়ে দেন, তিনি কেশপুরে যাবেন। প্রাথমিকভাবে ঠিক হয়, শুভেন্দু কেশপুরে এসে একই দিনে সভা- মিছিল করবেন। শুরুতে মিছিল হবে। পরে সভা হবে। ঠিক হয়, আগামী বৃহস্পতিবার কেশপুরে এই সভা- মিছিল হবে। ওই দিন আবার রথযাত্রা রয়েছে। বৈঠকের সময়ে এ কথা কারও খেয়াল ছিল না। দলের এক সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবারের বদলে আগামী রবিবার কেশপুরে এই কর্মসূচি হতে পারে। ওই দিন আসা নিয়ে শুভেন্দু সম্মতিও দিয়েছেন বলে দলের এক সূত্রে খবর।

কেশপুরে আর দখলের রাজনীতি হবে না? তৃণমূলের কেশপুর ব্লক সভাপতি সঞ্জয় পান বলেন, ‘‘তৃণমূল দখলের রাজনীতি করবে না। মানুষকে নিয়ে এগোনোর চেষ্টা করব। মানুষ যদি চায় আমরা শাসক হব, মানুষ যদি না চায় আমরা বিরোধী হব!’’

অন্য বিষয়গুলি:

Suvendu Adhikari TMC
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy