লন্ডভন্ড: কেশিয়াড়িতে ঝড়ে ভেঙে গিয়েছে বাড়ি (বাঁ দিকে) নিজস্ব চিত্র।
স্থায়িত্ব পাঁচ মিনিটেরও কম। তাতেই দুই জেলায় ছাপ রেখে গেল ঘূর্ণিঝ়ড় তিতলি। মৃত্যু হল একজনের। আহত হলেন অনেকে। ভাঙল ঘরবাড়ি, স্কুল, কারখানা। বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে অন্ধকারে ডুবল একাধিক গ্রাম।
অন্ধ্রপ্রদেশ, ওড়িশা হয়ে তিতলি যখন রাজ্যে ঢোকে তখন সে শক্তি হারিয়ে নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। তবু তারই দাপটে লন্ডভন্ড অবস্থা। ঝাড়গ্রামের সাঁকরাইল হয়ে পশ্চিম মেদিনীপুরের কেশিয়াড়ি, কলাইকুণ্ডা, খড়্গপুর, মেদিনীপুর সদর, কেশপুর— এই পথেই ছাপ রেখে গিয়েছে তিতলি। সকাল সাড়ে দশটা নাগাদ কেশিয়াড়ির সুবর্ণরেখা নদী তীরবর্তী এলাকার গ্রামগুলির উপর দিয়ে ঘূর্ণিঝড় বয়ে যায়। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ব্লকের নছিপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের গোপীনাথপুর, কাঁটাবনি-সহ আরও কয়েকটি গ্রাম। ক্ষতি হয়েছে প্রায় সত্তর-আশিটি মাটির বাড়ির। উড়ে গিয়েছে টিনের ও খড়ের ছাউনি। খুঁটি উপড়ে বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে এলাকা। ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে ধান ও আখ চাষের। প্রশাসনের উদ্যোগে ঘর ভেঙে পড়া মানুষদের ডাইনমারি ও জ্যোতিকৃষ্ণপুরের বিদ্যালয়গুলিতে সরিয়ে দেওয়া হয়। খড়্গপুর-১ ব্লকের কলাইকুণ্ডা এলাকার ধুলিয়াপোতা, কপোতিয়া, শিল্পাঞ্চল, মাজিপাড়া, শোভাপুর-সহ বেশ কয়েকটি গ্রামে কয়েক মিনিট ধরে বয়ে যায় এই ঘূর্ণিঝড়। মাটি থেকে প্রায় তিরিশ ফুট উঁচু দিয়ে যাওয়া এই ঝড়ে রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিকম সংস্থা বিএসএনএলের কারখানায় ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। গাড়ির সরঞ্জাম তৈরির একটি বন্ধ কারখানার ছাউনি উড়ে জখম হয়েছে প্রায় ৪জন শ্রমিক। একটি গ্যাস রিফিলিং কারখানার ছাউনি উড়ে গিয়েছে।
ঝড়ে মেদিনীপুর গ্রামীণ, শালবনি, কেশপুর প্রভৃতি এলাকার কিছু অংশে কয়েকটি ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মেদিনীপুর গ্রামীণের পাঁচখুরি, তরসআড়া ও তার আশেপাশের এলাকায় কয়েকটি ঘর ভেঙে গিয়েছে।
এ দিন সকালে তিতলি রাজ্যে ঢোকে ঝাড়গ্রামের সাঁকরাইলে। স্থানীয়েরা জানাচ্ছেন মাত্র পাঁচ থেকে দশ সেকেন্ড একটি নির্দিষ্ট এলাকা জুড়ে ঝড় বয়ে গিয়েছে। এর ফলে, সাঁকরাইলের রোহিণী, ধানঘোরি, শিয়ালডাঙার মতো গোটা কুড়ি গ্রামে বেশ কিছু বাড়ির চাল উড়েছে। ডুলুং ও সুবর্ণরেখার জল বাড়ায় সাঁকরাইল ব্লকের বেশ কিছু গ্রাম জলবন্দি হয়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। ঝাড়গ্রামের জিতুশোল এলাকায় ঝাড়গ্রাম-লোধাশুলি রাজ্যসড়কে ইলেকট্রিক খুঁটি ও গাছ ভেঙে পড়ে রাজ্য সড়ক অবরুদ্ধ হয়ে যায়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy