রবিবার এই ব্যানার ঘিরেই পড়ে শোরগোল। নিজস্ব চিত্র
ইতিমধ্যেই তাঁর বিপুল সম্পত্তি নিয়ে প্রশ্ন তুলে তৃণমূল জেলা নেতৃত্বের কাছে অভিযোগ করেছেন দলেরই পঞ্চায়েত সমিতির খাদ্য কর্মাধ্যক্ষ জয়দেব বর্মন। যা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে তোলপাড় শুরু হয়েছে।
এ বার শহিদ মাতঙ্গিনী পঞ্চায়েত সমিতির তৃণমূল সভাপতি দিবাকর জানা-সহ কোলাঘাট তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের দুই শ্রমিক নেতা সেলিম আলি এবং হাফিজুল রহমানের বিরুদ্ধেও ‘কাটমানি’ নেওয়ার অভিযোগ তুলে এবং ওই টাকা ফেরত দেওয়ার দাবি জানিয়ে ব্যানার পড়ল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র সংলগ্ন মেচেদা বাজারে। দিবাকর কোলাঘাট তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের তৃণমূল প্রভাবিত শ্রমিক ইউনিয়নের কার্যকরী সভাপতি পদেও রয়েছেন। আর সেলিম আলি ওই শ্রমিক ইউনিয়নের সম্পাদক এবং শান্তিপুর-১ পঞ্চায়েতের প্রধান পদে রয়েছেন।
তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের অ্যাশপণ্ড শ্রমিক ইউনিয়নের নেতা তথা আমলহাণ্ডা অঞ্চল তৃণমূল যুব কংগ্রেসের নেতা হাফিজুল ওরফে বুজুর বিরুদ্ধেও একই ব্যানার পড়েছে। রবিবার সকালে মেচেদা বাজারে হলদিয়া-মেচেদা ৪১ নম্বর জাতীয় সড়কের ফ্লাইওভারের দেওয়ালে এবং তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের অ্যাশপণ্ডের কাছে শ্রমিক ইউনিয়ন অফিসের দেওয়ালে ওই ব্যানার দেখতে পান স্থানীয় লোকজন। ওই সব ব্যানারের ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে ছড়িয়ে পড়ে। ‘সকল শ্রমিক বৃন্দ’-এর তরফে তৃণমূল শ্রমিক ইউনিয়নের ওই তিন নেতার বিরুদ্ধেই শ্রমিক এবং ঠিকাদারদের কাছ থেকে ‘কাটমানি’ নেওয়ার অভিযোগ তোলা হয়েছে। তাঁদের বেনামী সম্পত্তি বিক্রি করে টাকা ফেরত দেওয়ার দাবিও করা হয়েছে ওই নেতাদের কাছে। ‘নচেৎ উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হব’ বলে হুঁশিয়ারিও দেওয়া হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে খবর, এদিন সকালে মেচেদাবাজারে ‘শ্রমিকবৃন্দ’র তরফে দিবাকর ও সেলিমের নামে অভিযোগ তুলে ব্যানার নজরে আসে। তবে কিছু পরেই সেগুলি খুলে ফেলা হয়। ততক্ষণে ব্যানারের ছবি সোস্য়াল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে যায়। তবে ওই সব ব্যানারে অভিযোগকারীর নাম উল্লেখ না থাকায় কারা তা লাগিয়েছে তা নিয়ে কিছু ধোঁয়াশা রয়েছে। তবে দিবাকরের দাবি, ‘‘বিজেপির মদতেই এ সব হচ্ছে। এ সব ভিত্তিহীন অভিযোগের রাজনৈতিক এবং আইনি মোকাবিলা করব।’’ আর ব্যানারে তাঁর বিরুদ্ধে তোলা অভিযোগ নিয়ে সেলিমের পাল্টা চ্যালেঞ্জ, ‘‘অনেকে আছে, যারা ভাবছে বিজেপির দিকে যাবে। বিজেপির কাছে হিরো হওয়ার জন্য তারাই এ সব করছে। কারও যদি সৎসাহস থাকে, সামনে এসে অভিযোগ করুক। আড়াল থেকে এ সব মিথ্যা অভিযোগকে আমরা গুরুত্ব দিচ্ছি না।’’
অ্যাশ-পন্ড শ্রমিক ইউনিয়নের অফিসে লাগানো ব্যানারে তাঁর বিরুদ্ধে তোলা অভিযোগ প্রসঙ্গে হাফিজুল বলেন, ‘প্রায় ছ’বছর ধরে ওই শ্রমিক ইউনিয়নের দায়িত্ব পালন করেছি। আড়াই মাস হল আমি দায়িত্বে নেই। অফিসেও যাই না। দলের যুব সংগঠনের অঞ্চল সভাপতি হিসেবে কাজ করছি। শ্রমিকদের কাছ থেকে কাটমানি নিয়ে থাকলে আগেই অভিযোগ করত। বিজেপিই ওই ব্যানার লাগিয়েছে।’’
ব্যানার কাণ্ড নিয়ে তাদের বিরুদ্ধে তৃণমূল নেতাদের আঙুল তোলা নিয়ে বিজেপির তমলুক জেলা সভাপতি নবারুণ নায়েক বলেন, ‘‘দিবাকর জানার বিপুল সম্পত্তি বৃদ্ধি নিয়ে তাঁরই দলের নেতা অভিযোগ তুলেছেন। তৃণমূলের ওই শ্রমিক নেতারা যাদের কাছে কাটমানি নিয়েছে তারাই টাকা ফেরত চেয়ে ব্যানার টাঙিয়েছে। এর সঙ্গে বিজেপির কেউ জড়িত নয়।’’
এদিনই ভগবানপুর-১ ব্লকের গুড়গ্রাম পঞ্চায়েতের এক্তারপুরে সরকারি প্রকল্পের কাজে জনপ্রতিনিধি ও তৃণমূল নেতাদের নেওয়া কাটমানি ফেরতের দাবিতে পোস্টার পড়ে। বিজেপির তরফে ওই পোস্টার দেওয়া হলেও সেখানে তৃণমূলের কোনও নেতার নাম ছিল না। ভগবানপুর-১ ব্লক বিজেপি সভাপতি দেবব্রত কর অভিযোগ করেন, তৃণমূল নেতারা সরকারি প্রকল্পে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে কাটমানি নিয়েছেন। যাঁদের কাছে টাকা নিয়েছেন অবিলম্বে সেই কাটমানি ফেরত দিতে হবে। না হলে প্রতিটি গ্রাম পঞ্চায়েতে সামনে বিক্ষোভ, ধর্না দেবেন দলীয় কর্মী-সমর্থকেরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy