প্রতীকী চিত্র। ছবি:শাটারস্টক
অসুস্থতার কারণে স্কুলে যাওয়া বন্ধ হয়েছিল। শিক্ষকতার পদ থেকে অবসর চেয়ে ‘ইনভ্যালিড পেনশনে’র আবেদন করেছিলেন বছর খানেক আগে। গত মাসে মারা গিয়েছেন কোলাঘাটের ক্ষেত্রহাট হারাধন ইনস্টিটিউশনের সহকারি শিক্ষক শ্যামপদ সরেন। তাঁর স্ত্রী জেলা শিক্ষা দফতরে অভিযোগ করেছেন, আবেদন পরেও তাঁর স্বামী ‘ইনভ্যালিড পেনশন’ পাননি। আর টাকার অভাবে কার্যত বিনা চিকিৎসায় মারা গিয়েছেন তিনি। পাশিপাশি, শিক্ষকের সমস্ত বকেয়া পাওনা-গন্ডা মিটিয়ে পেনশন চালুর দাবি করা হয়েছে।
পাঁশকুড়ার উত্তর মেচগ্রামের শ্যামপদ ১৯৯৭ সালে পান্ডুয়া শশীভূষণ সাহা হাইস্কুল থেকে বদলি হয়ে আসেন ক্ষেত্রহাট হারাধন ইনস্টিটিউশনে। কয়েক বছর আগে জটিল স্নায়ুরোগে আক্রান্ত হন তিনি। অসুস্থতায় স্কুলে না যেতে পারার ফলে তাঁর ‘মেডিক্যাল লিভ’-সহ পাওনা ছুটি শেষ হয়ে যায়। ফলে গত বছর জুলাই থেকে তাঁর বেতন বন্ধ হয়। গত অগস্টে শ্যামপদ স্কুলের প্রধান শিক্ষককে চিঠি দিয়ে জানান, তিনি বলেন,তিনি আর স্কুলে যেতে পারবেন না। তাঁকে একজন অক্ষম কর্মী গণ্য করে তাঁর ইনভ্যালিড পেনশন চালু করা হোক।
অভিযোগ, ওই আবেদনের এক বছর কেটে গেলেও চালু হয়নি ইনভ্যালিড পেনশন। মেলেনি পিএফ-সহ অন্য পাওনা টাকা। গত ২৪ অগস্ট শ্যামপদ মারা যান। তাঁর পরিবারের অভিযোগ, ইনভ্যালিড পেনশন চালু না হওয়ায় টাকার অভাবে চিকিৎসা করা যায়নি শ্যামপদর। কার্যত বিনা চিকিৎসাতেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে। মৃত স্বামীর সমস্ত বকেয়া টাকা প্রদান ও ফ্যামিলি পেনশন চালুর দাবিতে ডাকে পশ্চিমবঙ্গ মধ্যশিক্ষা পর্ষদের প্রশাসক কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়কে চিঠি পাঠিয়েছেন তাঁর স্ত্রী কাকলি। চিঠির প্রতিলিপি পাঠানো হয়েছে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা শিক্ষা দফতর এবং দ্রুত সুরাহা চেয়ে ‘দিদিকে বলো’তে ফোনও করেছেন তিনি।
কাকলি জানাচ্ছেন, ছোট মেয়ে মৌমিতা দশম শ্রেণির ছাত্রী। আর্থিক সমস্যা তাঁকে দিনমজুরি করে সংসার চালাতে হচ্ছে। কাকলি বলেন, ‘‘গত বছর বেতন বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর আমার স্বামী পিএফ এবং ইনভ্যালিড পেনশনের আবেদন করেন। শিক্ষা দফতর আবেদনে সাড়া দেয়নি। টাকার অভাবে বিনা চিকিৎসায় আমার স্বামী মারা গিয়েছেন।’’
কেন স্কুলের তরফে শ্যামপদের আবেদন দ্রুত বিবেচনা করা হল না? ক্ষেত্রহাট হারাধন ইনস্টিটিউশনের প্রধান শিক্ষক অমলেন্দু ঘড়া বলেন, ‘‘গত বছর বেতন বন্ধের পর শ্যামপদ সরেনের ইনভ্যালিড পেনশনের আবেদন পেয়েছিলাম। আমি সেটি জেলা স্কুল পরিদর্শকের অফিসে পাঠিয়ে দিয়েছিলাম। কিন্তু কেন তা চালু হল না তা বলতে পারব না।’’
পূর্ব মেদিনীপুর জেলা স্কুল পরিদর্শক আমিনুল আহাসান বলেন, ‘‘ওঁর বিষয়টি আমি জানি। প্রধান শিক্ষককে বলেছি ওঁর পরিবারকে দিয়ে দ্রুত আবেদন করাতে। আমরা আবেদন পেলেই সমস্ত পাওনা মিটিয়ে দেব।’’ কিন্তু আবেদনের এক বছর পরও কেন শিক্ষকের ইনভ্যালিড পেনশন চালু হল না? এই বিষয়ে স্কুল পরিদর্শকের জবাব, ‘‘কেন হয়নি খোঁজ নিয়ে দেখতে হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy