ফািল চিত্র।
নন্দীগ্রামে অরাজনৈতিকভাবে আয়োজিত বিজয়া সম্মিলনীর মঞ্চে দাঁড়িয়ে শুভেন্দু অধিকারীর ‘বিদ্রোহী’ স্বর নিয়ে আলোড়িত রাজ্য রাজনীতি। যেথানে নিজের রাজনৈতিক উত্থানের প্রসঙ্গ তুলে নাম না করে দলেরই একাংশ শীর্ষ নেতাকে তিনি পরোক্ষে কটাক্ষ করেছেন বলে অভিযোগও উঠেছে। দলে আপাত কিছুটা ‘কোণঠাসা’ শুভেন্দুর ‘ছোঁয়া’ এড়াতে ব্যস্ত জেলার নেতা-কর্মীদের অনেকে।
রাজ্যের পরিবহণ ও সেচমন্ত্রীর রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে জল্পনার মধ্যেই গত শনিবার বিজয়া সম্মিলনীর মঞ্চ থেকেই আগামী ১০ নভেম্বর ‘শহিদ’ স্মরণে নন্দীগ্রামের গোকুলনগরে সমাবেশের ঘোষণা করেছেন শুভেন্দু। যে সমাবেশের দিকে তাকিয়ে রয়েছে বিরোধীরা থেকে তাঁর নিজের দলও। এরই পাশাপাশি দলের মধ্যে শুভেন্দু বিরোধী শিবিরের তৎপরতাও শুরু হয়েছে পরিবহণ মন্ত্রীর নিজের জেলা পূর্ব মেদিনীপুরেও। অধিকারী পরিবারের প্রতিপক্ষ শিবিরের নেতা হিসেবে পরিচিত রামনগরের বিধায়ক তথা জেলা তৃণমূলের কো-অর্ডিনেটর অখিল গিরি ও নন্দীগ্রামের তৃণমূল নেতা ও জেলা সহ-সভাধিপতি শেখ সুপিয়ান শুভেন্দুর এমন আচরণ নিয়ে ইতিমধ্যেই কড়া প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন। এমন আবহেই আগামী ৮ নভেম্বর তমলুকের নিমতৌড়িতে বিজয়া সম্মিলনীর আয়োজন করতে চলেছে শুভেন্দু বিরোধী শিবিরের নেতৃত্ব।
তমলুক ব্লক তৃণমূলের ব্যানারে নিমতৌড়ি পানবাজারে ওই বিজয়া সম্মিলনীর আয়োজনের দায়িত্বে রয়েছেন জেলা পরিষদের প্রাক্তন পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ সোমনাথ বেরা। ওই অনুষ্ঠানে অধিকারীদের বিরোধী শিবিরের নেতা অখিল গিরি-সহ তাঁর অনুগামীরা উপস্থিত থাকবেন বলে দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে। অনুষ্ঠানের স্থান নির্বাচনের তাৎপর্য নিয়েও কৌশলী পদক্ষেপ করেছেন বিরোধী শিবিরের নেতৃত্ব। যা কার্যত তৃণমূলের আদি ও নব্য শিবিরের বিভাজনের ইঙ্গিত বহন করছে। বিজয়া সম্মিলনীর স্থান হিসেবে নিমতৌড়ি পান বাজারকে বেছে নেওয়ার কারণ হিসাবে সোমনাথের দাবি, ‘‘আমরা তৃণমূলের জন্মলগ্ন থেকে দল করছি। জেলায় তৃণমূলের প্রথম প্রকাশ্য সভা হয়েছিল নিমতৌড়ি পানবাজারে। সেখানেই এবার তৃণমূলের ব্যানারে বিজয়া সম্মিলনীর আয়োজন করেছি। অনুষ্ঠানে জেলার-বিধায়ক সহ অন্যান্য নেতৃত্বকেও আমন্ত্রণ জানানো হচ্ছে। তবে শুভেন্দুবাবুকে আমন্ত্রণ জানানো হচ্ছে না।’’
জেলায় যেখানে অধিকারী পরিবারের দাপট, সেখানে সোমনাখের মতো একদা শুভেন্দুর ঘনিষ্ঠ তৃণমূল নেতার বিরোধী শিবিরের হয়ে সক্রিয় হওয়া নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। বিরোধী শিবিরের এমন ভূমিকায় রাজ্য নেতৃত্বের মদত রয়েছে বলেও শোনা যাচ্ছে। তমলুক ব্লকের অন্যতম তৃণমূল নেতা সোমনাথ কয়েক মাস আগে জেলা সভাপতি শিশির অধিকারীর নির্দেশে জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষের পদ থেকে পদত্যাগ করেছিলেন। আমপানে ক্ষতিগ্রস্তদের সরকারি ক্ষতিপূরণের তালিকা নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছিল সোমনাথের বিরুদ্ধে।
দলীয় সূত্রের খবর, গত কয়েকমাস ধরে রাজনৈতিকভাবে নিষ্ক্রিয় ছিলেন সোমনাথ। সোমনাথকে বাদ দিয়েই তমলুক ব্লকে একাধিক কর্মসূচিতে যোগ দিয়েছেন শুভেন্দু। বিজয়া সম্মিলনীর অনুষ্ঠানে শুভেন্দুকে আমন্ত্রণনা জানানো কি সেই কারণেই? সোমনাথ বলেন, ‘‘গত কয়েক মাস ধরে শুভেন্দুবাবু আমাকে বাদ দিয়ে ব্লকে একাধিক কর্মসূচি করেছেন। আমাদের আয়োজিত বিজয়া সম্মিলনীর অনুষ্ঠানেও শুভেন্দুবাবুকে আমন্ত্রণ করা হচ্ছে না।’’
দলীয় সূত্রের খবর, সোমনাথ এখন শুভেন্দু বিরোধী শিবিরের নেতা। তাঁর আয়োজনে বিজয়া সম্মিলনীর অনুষ্ঠানের মাধ্যমে জেলায় শুভেন্দু বিরোধী শিবিরের তৃণমূল নেতারা জোট বাঁধছেন। আর সেই কারণেই আগামী ১০ নভেম্বর নন্দীগ্রামে শুভেন্দুর সমাবেশের আগেই ৮ নভেম্বর নিমতৌড়িতে বিজয়া সম্মিলনীর সভা ঘিরে মাঠে নেমে পড়েছে বিরোধী শিবির।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy