ফাইল চিত্র।
অনুষ্ঠানস্থল ছিল না শিল্প শহর হলদিয়া। তবে মহিষাদলে এসে সেই হলদিয়া শহর নিয়েই নিজের ছেড়ে আসা দল তৃণমূলকে বিঁধলেন বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী। কখনও রাজ্য সরকারের জমি নীতি নিয়ে সবর হলেন তিনি। তো কখনও হলদিয়া উন্নয়ন পর্ষদের (এইচডিএ) নতুন চেয়ারম্যানের নিয়োগ ঘিরে কটাক্ষ করলেন। পাশাপাশি, হলদিয়া ভোট কীভাবে করাতে হয়, সে নিয়েও মন্তব্য করলেন শুভেন্দু।
শনিবার সুতাহাটার দ্বারবেড়িয়ায় ছিল বিজেপি’র সভা। সেখানে ছিলেন শুভেন্দু, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা বিজেপি নেতা বাবুল সুপ্রিয়, দলের তমলুক সাংগঠনিক জেলা সভাপতি নবারুণ নায়েক। সভায় শুভেন্দু বলেন, ‘‘হলদিয়া উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান যাঁকে করা হয়েছে, তিনি তো উন্নয়ন পর্ষদ এলাকার বাসিন্দাই নন। ভগবানপুরের বিধায়ক। অথচ আমি ২০১৩ থেকে আমি হলদিয়ার ভোটার।’’ একই সঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘হলদিয়াতে ভোট করিয়ে নিতে হয়। সেটা আমি করিয়ে নেব।’’
উল্লেখ্য, শুভেন্দু প্রায় ন’বছর ধরে এইচডিএ’র চেয়ারম্যানের পদে ছিলেন। তবে তৃণমূলে থাকার সময়ে বিরোধী রাজনৈতিক দল-সহ তৃণমূলেরই একাংশ শুভেন্দুর এইচডিএ’র কার্যপরিচালনা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল। তিনি যে হলদিয়াবাসীর উন্নয়ন করছেন না, সেই অভিযোগও উঠেছিল। গত বছর পরিবহণ মন্ত্রীর দায়িত্ব ছাড়ার পরেই শুভেন্দু এইচডিএ’র চেয়ারম্যানের পদ ছাড়েন। প্রথমে সেই দায়িত্ব দেওয়া হয় পূর্ব মেদিনীপুরের জেলাশাসক বিভু গোয়েলকে। পরে ওই পদ পান ভগবানপুরের তৃণমূল বিধায়ক অর্ধেন্দু মাইতি। তাই এ দিন শুভেন্দু নাম না করে অর্ধেন্দুকে কটাক্ষ করায় কার্যত তিনি তাঁর সমালোচকদেরই জাবাব দিলেন বলে মত রাজনৈতিক মহলের। অবশ্য কটাক্ষ প্রসঙ্গে অর্ধেন্দুর পাল্টা জবাব, ‘‘আমি কারও কথায় কোনও কর্ণপাত করি না। সরকার আমাকে দায়িত্ব দিয়েছে। আর আমি তা নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করব।’’
শিল্প নিয়ে এ দিন শুভেন্দু রাজ্য সরকারের জমি নীতিরও সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, ‘‘রাজ্য সরকারের যা জমি নীতি, তাতে এখানে চপ শিল্পও হবে না। ভোট আসলেই ওদের শঙ্করপুরে বন্দর করার কথা মনে পড়ে যায়।’’ এ ব্যাপারে অর্ধেন্দুর বক্তব্য, ‘‘বর্তমানে সরকারি জমি নীতি খুব ভাল। সরকার ল্যান্ড ব্যাঙ্ক তৈরি করেছে। রাজ্যের জমি নীতি শিল্প সহায়ক বলেই মনে করি।’’ জমি নীতি প্রসঙ্গে শুভেন্দু রাজ্য সরকারকে কটাক্ষ করলেও তৃণমূল নেতৃত্বের একাংশের প্রশ্ন, শুভেন্দু নিজে ন’বছর ধরে তৃণমূল সরকারের অংশ ছিলেন। জমি নীতি দূর্বল মনে হলে তিনি আগে কেন তা পরিবর্তনের জন্য কোনও পরামর্শ মুখ্যমন্ত্রীকে দেননি?
তৃণমূল ‘বাংলার গর্ব মমতা’ কর্মসূচির মাধ্যমে প্রচার চালিয়েছে সম্প্রতি। এ বিষয়ে এ দিন শুভেন্দুর কটাক্ষ, ‘‘বিজেপির সঙ্গে আমার ডিল হয়েছে। বিজেপি ক্ষমতায় এলে রাজ্যে সুশাসন প্রতিষ্ঠা হবে। প্রতি বছর এসএসসি পরীক্ষা হবে। বাংলার গর্ব হিসেবে লেখা থাকবে স্বামী বিবেকানন্দ, নেতাজির নাম। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান কেউ করলে লেখা থাকবে বাংলার গর্ব রবীন্দ্রনাথ।’’
মঞ্চে থাকা বাবুলও শুভেন্দুর প্রশংসা করে আক্রমণ করেন তৃণমূলকে। তিনি বলেন, ‘‘দিদি আলিপুর জেলটাও নীল সাদা রং করেছেন। কারণ, পরে তৃণমূলীরা ওইখানে থাকবেন। করোনা ভ্যাকসিন আসার আগেই পশ্চিমবঙ্গকে স্বছ করার ভ্যাকসিন মানুষ দিয়ে দেবেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের এক্সপায়ারি ডেট হয়ে গিয়েছে।’’
এ দিন বিজেপি’র সভায় দলবদলও হয়েছে। তৃণমূলের ১২ জন পঞ্চায়েত সদস্য ও জেলা পরিষদ সদস্য বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। যাঁদের মধ্যে রয়েছেন যুব তৃণমূলের জেলা সহ-সভাপতি রামকৃষ্ণ দাস। জেলা পরিষদের সদস্য সোমনায় ভুঁইয়া, গড়কমলপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রাক্তন প্রধান শ্যামল সিংহ প্রমুখ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy