Advertisement
১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪
Sushanta Ghosh

‘মহিলাঘটিত’ অভিযোগ: সুশান্ত ঘোষকে ছুটিতে পাঠাল সিপিএম, সিদ্ধান্ত নিল তদন্তের মাঝপথেই

শুক্রবার মেদিনীপুরে সিপিএমের জেলা কমিটির বৈঠক বসে। উপস্থিত ছিলেন দলের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম, রবীন দেব প্রমুখ। সেখানেই ওই সিদ্ধান্ত হয়েছে।

Sushanta Ghosh

সুশান্ত ঘোষ। —ফাইল চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ১৬ অগস্ট ২০২৪ ২০:৪৫
Share: Save:

রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী, সিপিএম নেতা সুশান্ত ঘোষকে জেলা সম্পাদকের পদ থেকে অব্যাহতি দিল তাঁর দল। সুশান্তের বিরুদ্ধে ‘মহিলাঘটিত’ অভিযোগের তদন্ত চলছে। তার মধ্যেই ওই সিদ্ধান্ত নিল সিপিএম। এ নিয়ে সুশান্তের প্রতিক্রিয়া, ‘‘যা বলার পার্টি বলবে।’’

শুক্রবার মেদিনীপুরে সিপিএমের জেলা কমিটির বৈঠক বসে। সেখানে উপস্থিত ছিলেন দলের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম, রবীন দেব প্রমুখ। দীর্ঘ বৈঠকের পর সিপিএম পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সম্পাদক হিসাবে বিজয় পালের নাম ঘোষণা করা হয়। সিপিএম সূত্রে খবর, জেলা সম্পাদকের পদ থেকে সুশান্তকে অব্যাহতি দিয়ে জেলা কমিটির সম্মেলন পর্যন্ত ওই দায়িত্ব সামলানোর ভার দেওয়া হয়েছে বিজয়কে।

বামফ্রন্ট সরকারের আমলে পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়নমন্ত্রী সুশান্তের বিরুদ্ধে সম্প্রতি চাকরি দেওয়ার নাম করে সহবাসের অভিযোগ করেছেন এক মহিলা। ওই ঘটনার কথা সিপিএমের রাজ্য নেতৃত্বের কাছে লিখিত ভাবে জানান নির্যাতিতা। তার পরেই কার্যত শোরগোল শুরু হয় জেলা সিপিএমের বিরুদ্ধে। নির্যাতিতার বাড়ি মেদিনীপুরে। বর্তমানে তিনি চাকরি করেন। তাঁর অভিযোগ, ২০০৬ সালে তৎকালীন পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়নমন্ত্রী সুশান্তের সঙ্গে পরিচয় হওয়ার পর তিনি তাঁকে চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। তিনি এক দিন সুশান্তের বাড়িতে ডাকেন। মন্ত্রী বাড়িতে তাঁর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক গড়ে তোলেন। পাশাপাশি, তাঁর অভিযোগ, এর পর একাধিক বার চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়ে তাঁর সঙ্গে সহবাস করেন সুশান্ত। কাউকে সেই কথা না জানানোর জন্য তাঁকে হুমকি দেন। তাঁর বিয়ের পরেও প্রাক্তন মন্ত্রী তাঁকে যোগাযোগ রাখতে বাধ্য করেন বলেও অভিযোগ। এ জন্য তাঁর সাংসারিক জীবনে অশান্তি হচ্ছে বলে দাবি করেন নির্যাতিতা।

শুক্রবার সুশান্তকে জেলা সম্পাদকের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার ঘটনা প্রসঙ্গে সিপিএম নেতার প্রতিক্রিয়া, ‘‘আমি কিছু বলছি না। যা বলার পার্টি বলবে। ভারপ্রাপ্ত জেলা সম্পাদক বলবেন।’’ পাশপাশি একটি ভাইরাল হওয়া ভিডিয়ো নিয়ে প্রশ্নের জবাবেও সুশান্ত জানান, যা বলার পার্টি বলবে। অন্য দিকে, জেলা সিপিএমের ভারপ্রাপ্ত জেলা সম্পাদক বিজয় পাল বলেন, ‘‘উনি (সুশান্ত) অব্যাহতি চেয়েছেন। রাজ্য কমিটি অনুমোদন দিয়েছেন। কিছু অভিযোগ ছিল, যা খতিয়ে দেখছে রাজ্য কমিটি।’’

১৯৮৭ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত ২৯ বছর গড়বেতা পূর্ব বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক ছিলেন সুশান্ত। মন্ত্রী ছিলেন ১৯৯৬ থেকে ২০১১ সাল। ১৯৮৮ সাল থেকে তিনি সিপিএমের জেলা কমিটিতে রয়েছেন। ২০০২ সালের বেনাচাপড়া কঙ্কালকাণ্ডে নাম জড়িয়ে যায় সুশান্তের। তৃণমূল রাজ্যে ক্ষমতায় আসার পর ওই মামলায় জেলও হয় তাঁর। সুপ্রিম কোর্ট থেকে জামিন পেলেও নিজের জেলায় ঢোকার ছাড়পত্র পাননি সুশান্ত। ২০২১ সালে নিজের ‘গড়ে’ ফেরেন তিনি। সিপিএম তাঁকে দলের জেলা সম্পাদক করে। ’২১ সালের বিধানসভা ভোটে সিপিএম তাঁকে প্রার্থীও করে। যদিও শালবনি বিধানসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী শ্রীকান্ত মাহাতোর কাছে সুশান্ত পরাজিত হন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

CPM sushanta Ghosh Paschim Midnapore
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE