নাবালিকা বিয়ে রোধে কর্মশালা। নিজস্ব চিত্র
‘কন্যাশ্রী’ থেকে ‘উৎকর্ষ বাংলা’—বাল্যবিবাহ আটকাতে একের পর এক প্রকল্প চালু করেছে রাজ্য সরকার। তা সত্ত্বেও পূর্ব মেদিনীপুরে নাবালিকা বিয়ে পুরোপুরি ঠেকাতে ব্যর্থ জেলা প্রশাসন। বরং গত পাঁচ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি নাবালিকার বিয়ে হয়েছে চলতি বছরেই।
বুধবার পূর্ব মেদিনীপুর জেলা শিশু সুরক্ষা ইউনিট, কাঁথি পুরসভা এবং কাঁথি মহকুমা পুলিশের যৌথ উদ্যোগে বাল্যবিবাহ, শিশু অপরাধ এবং পকসো মামলা সংক্রান্ত ব্যাপারে একদিনের কর্মশালার আয়োজন করা হয়েছিল। কাঁথি রহমানিয়া হাইমাদ্রাসায় ওই কর্মশালা থেকে উঠে আসে নাবালিকা বিয়ে নিয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য। খোদ জেলা শিশু সুরক্ষা ইউনিটের পরিসংখ্যানে জানা গিয়েছে, ২০১৪-’১৫ সালে ২৩ জন নাবালিকার বিয়ে দেওয়ার চেষ্টা হয়েছিল। সবকটি বিয়ে রুখে দিতে পেরেছিল প্রশাসন। ২০১৫-’১৬ সালে ১০৮ জন নাবালিকার মধ্যে ১০৩ জনের বিয়ে আটকানো গিয়েছিল। ৫ জনের বিয়ে হয়ে গিয়েছে। ২০১৬-’১৭ সালে ১১৫ জন নাবালিকার মধ্যে ১০৭ জনের বিয়ে আটকানো গিয়েছে। বাকিদের বিয়ে হয়ে গিয়েছে। তবে ২০১৮-’১৯ সালে ৬৬ জনের বিয়ে রুখে দিতে পেরেছিল প্রশাসন। কিন্তু চলতি বছর ৪৪ জন নাবালিকার বিয়ের খবর পেয়েছিলো প্রশাসন। ৩৬ জনের বিয়ে তারা আটকাতে পারলেও ৮ জনের বিয়ে হয়ে গিয়েছে। যা গত পাঁচ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি। এই পরিসংখ্যান পাওয়ার পরে নাবালিকা বিয়ে আটকাতে আরও সক্রিয় হচ্ছে মহকুমা প্রশাসন।
গত ডিসেম্বর মাসে কাঁথি বীরেন্দ্র স্মৃতিসৌধে পঞ্চায়েত এবং পুর এলাকার স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, পুলিশ এবং প্রশাসনিক আধিকারিকদের নিয়ে একটি কর্মশালা হয়েছিল। সেখানে নাবালিকা বিয়ের কুফল সম্পর্কে সচেতন করা হয়। পাশাপাশি অল্পবয়স্ক মেয়েরা পড়াশোনা চলাকালীন ‘কন্যাশ্রী’ থেকে কী কী সুবিধা পেতে পারে তা নিয়ে আলোচনা করা হয়। পাশাপাশি কর্মজীবনে বিভিন্ন স্বনির্ভর গোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত করা এবং রাজ্য সরকারের ‘উৎকর্ষ বাংলা’ প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত হয়ে কী ভাবে উপকৃত হবে সেই বিষয়টিও তুলে ধরা হয়েছিল। কিন্তু তারপরেও কেন নাবালিকা বিয়ে পুরোপুরি বন্ধ করা যাচ্ছে না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
জেলা শিশু সুরক্ষা ইউনিটের এক আধিকারিকের দাবি, নির্দিষ্ট একটি সম্প্রদায়ের মানুষদের মধ্যে সচেতনতার অভাবেই এটা হচ্ছে। তাদের সচেতন করতেই এই ধরনের উদ্যোগ বার বার নেওয়া হচ্ছে। এ দিন কর্মশালায় রহমানিয়া গার্লস হাই স্কুলের নবম শ্রেণির এক ছাত্রী জানায়, কন্যাশ্রী এবং শিক্ষাশ্রীর আর্থিক সহায়তা সময়মতো মিলছে ঠিক। তবে বাড়ির অভিভাবকদের চাপে অল্প বয়সে তাদের বিয়ে করতে বাধ্য হতে হচ্ছে। এ ব্যাপারে সবার আগে অভিভাবকদের বাল্যবিবাহের কুফল সম্পর্কে সচেতন করা দরকার দরকার বলে মনে করে অধিকাংশ পড়ুয়া। এদিন ৭০০ জন যোগ দিয়েছিলেন কর্মশালায়।
জেলা সমাজ কল্যাণ আধিকারিক পূর্ণেন্দু পৌরাণিক বলেন, ‘‘কাঁথি এবং এগরা মহাকুমায় এধরনের আরও চারটি কর্মশালা হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy