ফাইল চিত্র।
একে করোনা আবহ। তার উপরে পরীক্ষা নিয়ে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের টানাপড়েন। সেই সঙ্গে খারাপ আবহাওয়া। এই জাঁতাকলে ফর্মপূরণ করেও সর্বভারতীয় ইঞ্জিনিয়ারিং প্রবেশিকা পরীক্ষা জেইই মেন পরীক্ষায় বসলেন না জেলার অনেক ছাত্রছাত্রী। পরীক্ষা পিছোনোর জন্য পশ্চিমবঙ্গ সহ ছয় রাজ্য একেবারে শেষ মুহূর্তে সুপ্রিম কোর্টের কড়া নেড়েছিল। সোমবার শুনানি হয়নি। শুনানি না হওয়ায় নিশ্চিত হয়ে যায় যে, পরীক্ষা হচ্ছেই। ১ সেপ্টেম্বর, মঙ্গলবার থেকে ধাপে ধাপে সেই পরীক্ষা শুরু হয়েছে। চলবে ৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। ডাক্তারি প্রবেশিকা নিট- ইউজি রয়েছে ১৩ সেপ্টেম্বর।
আজ, বুধবার জেইই পরীক্ষা দেওয়ার কথা ছিল মেদিনীপুরের বিধাননগরের বাসিন্দা সৌর্য্যদীপ্ত দাসের। তাঁর পরীক্ষাকেন্দ্র রয়েছে কলকাতার বেলঘড়িয়ায়। সৌর্য্যদীপ্ত বলেন, ‘‘বুধবার পরীক্ষা রয়েছে। তবে পরীক্ষা দিতে যাব না বলেই ঠিক করেছি। করোনা পরিস্থিতি এর একটা কারণ।’’
খড়্গপুর শহরেও অনেক ছাত্র-ছাত্রী পরীক্ষা দিচ্ছেন না। ইন্দা কৃষ্ণলাল শিক্ষা নিকেতনের ছাত্র রিজুল দত্ত বলেন, “পরীক্ষার জন্য আবেদন করেছিলাম। কিন্তু করোনার জেরে সব ভেস্তে গেল।” ইন্দার বোসপুকুরের বাসিন্দা প্রীতম সাহু, মালঞ্চের অনন্যা ভৌমিকও এবার পরীক্ষা দিতে যায়নি। ঘাটালে ব্লকের ত্র অভীক ঘোষের পরীক্ষা আছে ৫ সেপ্টেম্বর। তিনিও পরীক্ষা দিচ্ছেন না। তবে ঘাটাল বিদ্যাসাগর হাইস্কুলের ছাত্র অনির্বাণ রায়, দাসপুর থানার সাগরপুর গ্রামের শুভজিৎ বাগ অবশ্য পরীক্ষা দেবেন। শুভজিৎ আগেই কলকাতা চলে এসেছেন। আগে খড়্গপুর শহরের কেন্দ্রীয় বিদ্যালয় ও কয়েকটি বেসরকারি বিদ্যালয়ে এই পরীক্ষার আয়োজন হতো। কিন্তু গত বছর থেকে এই পরীক্ষা হচ্ছে পুরোটাই কম্পিউটারের মাধ্যমে। তার প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো না থাকায় জেলায় এর পরীক্ষাকেন্দ্র থাকে না বললেই চলে। যেতে হয় কলকাতায়। এ বার করোনা আবহে কলকাতা যেতে চাইছেন না অনেকেই।
যাঁরা পরীক্ষা দিচ্ছেন তাঁদের প্রায় সবাই নিজেদের অথবা ভাড়ার গাড়িতে যাচ্ছেন। যেমন ঝাড়গ্রাম শহরের রঘুনাথপুরের বাসিন্দা পৃথ্বীশ প্রধান। আজ, বুধবার সল্টলেকের সেক্টর ফাইভের পরীক্ষাকেন্দ্রে দুপুর ১ টা ২০-র মধ্যে পৌঁছতে হবে। পৃথ্বীশের বাবা প্রদীপকুমার প্রধান চিল্কিগড় উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধানশিক্ষক। তিনি জানালেন, পরীক্ষায় র্যাঙ্ক ভাল হলে ভাল জায়গায় সুযোগ মিলতে পারে। তাঁদের নিজেদের গাড়ি আছে। তাতেই যাবেন। তেলে খরচ হবে হাজার দু’য়েক টাকা। চালক নেবেন ১২০০ টাকা। এছাড়া রয়েছে টোল ট্যাক্স। ঝাড়গ্রাম শহরের বাছুরডোবার বাসিন্দা অর্ণব মণ্ডলও পরীক্ষা দেবেন। ৩ সেপ্টেম্বর, বৃহস্পতিবার অর্ণবের পরীক্ষা। সিট পড়েছে সল্টলেকের সেক্টর ফাইভেই। অর্ণবের পরীক্ষা সকাল ৯টায় শুরু। তাই আজ, বুধবার রাত তিনটেয় ঝাড়গ্রাম থেকে রওনা দিতে হবে তাঁকে। অর্ণবের বাবা পেশায় শিক্ষক অমিত মণ্ডল বলেন, ‘ভাড়ার গাড়িতে যাব। গাড়ি ভাড়া চার হাজার টাকা পড়ছে। টোল ট্যাক্স আলাদা দিতে হবে। খড়্গপুরেও পরীক্ষাকেন্দ্র হলে এই ঝক্কি পোহাতে হতো না। করোনা আবহে কলকাতায় থাকার ঝুঁকি নেব না বলেই পরীক্ষার দিন যাচ্ছি।’’
ঝাড়গ্রাম শহরের ঋত্ত্বিকা আচার্যের পরীক্ষাকেন্দ্র আবার জামশেদপুরে। তিনি অবশ্য পরীক্ষা দিচ্ছেন না। তাঁর পরীক্ষা ছিল বৃহস্পতিবার। ঋত্ত্বিকা জানান, ‘‘বাবা-মা গাড়ি ভাড়া করে পরীক্ষাকেন্দ্রে নিয়ে যেতে রাজি ছিলেন। কিন্তু এই অবস্থায় এত ঝঞ্ঝাট করে ভিন রাজ্যে পরীক্ষা দিতে যাওয়ার ঝুঁকি নিতে আমি রাজি নই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy