ফাইল চিত্র।
নন্দীগ্রাম থেকে নেতাই—গোটা করোনাকালে দলহীন কর্মসূচিতে বারবার তাঁকে দেখা গিয়েছে। পাশাপাশি গরহাজির থেকেছেন তৃণমূলের কর্মসূচি ও সরকারি অনুষ্ঠানে। এর জেরে মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীর রাজনৈতিক অবস্থান ঘিরে জোর জল্পনা চলছে। প্রকাশ্যে এ বিষয়ে তৃণমূলের তরফে এতদিন কেউ মুখ খোলেননি। তবে ‘অধিকারী গড়ে’ এসে এ বার মুখ খুললেন দলের আরেক মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কবিতার পংক্তি উল্লেখ করে দিলেন বার্তা— যা নিয়ে সমাজ মাধ্যমে সরব হয়েছেন শুভেন্দু অনুগামীরা।
পুলিশ এবং তৃণমূল সূত্রের খবর, বুধবার সন্ধ্যায় রাজ্যের শিক্ষা মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়, পুর মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম এবং শ্রম মন্ত্রী পূর্ণেন্দু বসু দিঘায় এসেছিলেন। শিক্ষা মন্ত্রী এবং শ্রম মন্ত্রীর বৃহস্পতিবার সকালে দিঘা ছেড়ে চলে যান। ছিলেন পুরমন্ত্রী। তিনি বৃহস্পতিবার বিকেলে ওল্ড দিঘার সৈকতে ঘুরতে গিয়েছিলেন। সেখানে একটি বৈদ্যুতিন সংবাদমাধ্যমের তরফে তাঁকে পরিবহণ মন্ত্রী শুভেন্দুর দলহীন কর্মসূচি এবং দলের সঙ্গে দূরত্ব প্রসঙ্গে জানতে চাওয়া হয়। জবাবে ফিরহাদ বলেন, ‘‘পথ ভাবে আমি দেব, রথ ভাবে আমি, মূর্তি ভাবে আমি দেব– হাসে অন্তর্যামী।’’ রাজনৈতিক মহলের ব্যাখ্যা, তৃণমূলে যে দলনেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই শেষ কথা, তাঁর ঊর্ধ্বে কেউ নন, তা বোঝাতেই রবীন্দ্র-কবিতার এই লাইন ব্যবহার করেছেন ফিরহাদ।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি দলীয় ব্যানারে কোনও কর্মসূচিতে শুভেন্দুকে তেমনভাবে দেখা যায়নি। বেশিরভাই একক জনসংযোগ কর্মসূচি করেছেন তিনি এবং তাঁর অনুগামীরা। এ নিয়ে এতদিন প্রকাশ্যে দলের শীর্ষ নেতৃত্বের তরফে কেউ মন্তব্য না করলেও বিষয়টি যে তাঁদের নজরে রয়েছে, তা তাঁরা জানিয়েছেন। এক দিন আগেই তৃণমূলের এক শীর্ষ নেতা জানিয়েছেন, দলে বিশ্বাসঘাতকদের ঠাঁই নেই। আবার মেদিনীপুরে তৃণমূলের জেলা মুখপাত্র দেবাশিস চৌধুরীও বলেছিলেন, ‘দলে একজনই নেত্রী’।
এ বার ফিরহাদের মন্তব্যে শুভেন্দু সম্পর্কে তৃণমূলের অবস্থান আরও স্পষ্ট হল। ফিরহাদের মন্তব্যকে সমর্থন করে জেলায় শুভেন্দু বিরোধী শিবিরের নেতা-বিধায়ক তথা অন্যতম কো-অর্ডিনেটর অখিল গিরি বলেন, ‘‘ওঁর যদি পদ দরকার না হয়, তবে তিনি কেন আঁকড়ে রেখেছেন। পদ ছেড়ে দিন।’’ শুভেন্দুর দলহীন কর্মসূচি প্রসঙ্গে এক সময় দলের জেলা সভাপতি শিশির অধিকারী দাবি করেছিলেন, শুভেন্দু বরাবরই মানুষের পাশে থেকে কাজ করেন। এতে বিতর্কের কিছু নেই। ফিরহাদের মন্তব্য প্রসঙ্গে শিশিরের বক্তব্য, ‘‘উনি কেন এ কথা বললেন তার ব্যাখ্যা ফিরহাদই বলতে পারবেন। এ ব্যাপারে আমরা কিছুই জানি না।’’
রাজ্যের পুরমন্ত্রীর এমন বক্তব্য সমাজ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়তে সময় নেয়নি। এর পরেই শুভেন্দু অনুগামীরা ফিরহাদকে সমাজ মাধ্যমে নানা ভাবে কটাক্ষ করছেন। কেউ কেউ ফিরহাদের ‘ঔদ্ধত্য’ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। কেউ বলছেন শুভেন্দু একাই একশো, তো কেউ তাঁর নিজের বক্তব্যকে অনুসরণ করার জন্য পুরমন্ত্রীকেই পরামর্শ দিয়েছেন।
যাঁকে ঘিরে এত জল্পনা-গুঞ্জন, সেই শুভেন্দুর ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক পদক্ষেপ কী হতে চলেছে, তিনি দল বদল করবেন না কি আলাদা কোনও মঞ্চ গড়বেন, তা এখনও ধোঁয়াশাতেই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy