হাতির হানায় মৃত শম্ভু হেমব্রমের স্ত্রী পূর্ণিমা হেমব্রমের হাতে স্পেশাল হোমগার্ডের চাকরির নিয়োগপত্র তুলে দিচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নিজস্ব চিত্র
ঘাটাল ছোট ছোট পায়েই পাহাড় ডিঙানোর স্বপ্ন দেখছেন তিনি। ‘ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান’ নিয়ে এমনই পরিকল্পনার কথা শোনালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
পাহাড়ই বটে। সে পাহাড়ের নাম ‘ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান’। সত্তরের দশকে যা শুরু। তারপর থেকে অন্তহীন কাজিয়া। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় প্রশাসনিক বৈঠক হলে ‘ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানে’র কথা উঠবেই। তার অন্যথা হয়নি মঙ্গলবারও। খড়্গপুরের প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী নিজে থেকেই পাড়লেন প্রসঙ্গ। বিঁধলেন কেন্দ্রকে। তারপর দেখালেন স্বপ্ন। মমতার বক্তব্য, ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান রুপায়ণে রাজ্য সরকার যথেষ্ট উদ্যোগী। কেন্দ্র কোনও সাহায্য করেনি। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘কেন্দ্র তো কিছুই দেয়নি। আমরাই ছোট ছোট পায়ে এগিয়ে যাব। বেশ কিছু সংস্কারের কাজ শেষ হয়েছে। মাস্টার প্ল্যানে অন্তর্ভুক্ত বিভিন্ন খাল-নদী সংস্কার রাজ্য সরকার করে দেবে।”
ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান মূলত শিলাবতী, কংসাবতী নদীর খননের প্রস্তাব রয়েছে। একই সঙ্গে ঘাটাল মহকুমা-সহ দুই জেলার বিভিন্ন শাখা নদী ও খাল গুলির সংস্কারের প্রস্তাব রয়েছে। তাছাড়া বেশ কিছু লকগেট, সেতু- সহ নদীর বাঁধ পাকাপোক্ত করার কথাও উল্লেখ রয়েছে। সত্তর দশক থেকে শিলাবতী, কংসাবতী দিয়ে বহু জল গড়িয়েছে। কাজ এগোয়নি সে ভাবে। জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, ২০১৫ সালে প্রকল্পের সংশোধিত ডিপিআর কেন্দ্রীয় জলসম্পদ উন্নয়ন দফতরে জমা পড়ে। প্রস্তাবিত প্রকল্প ব্যয় ধরা হয়েছিল ১৫৭৭ কোটি টাকা। গত বছর রাজ্য সরকার ওই প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত খাল সংস্কারের জন্য টাকা বরাদ্দ করে। তবে মাস্টার প্ল্যানের জন্য আলাদা ভাবে কোনও টাকা বরাদ্দ এখনও অবধি হয়নি। এ দিন সে আক্ষেপই বারবার শোনা যায় মুখ্যমন্ত্রীর গলায়।
রাজ্য সরকার নিজের উদ্যোগে ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানের কী কী কাজ করছে এ দিনের বৈঠকে তা উল্লেখ করেন সেচ সচিব নবীন প্রকাশ। মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুরোধে মেদিনীপুরের মোহনপুরে কংসাবতী নদীতে অ্যানিকেত বাঁধ নির্মাণের কাজ সম্পর্কে বলছিলেন নবীন। গত বছরই শেষ হয়েছে এই বাঁধ নির্মাণ। এর ফলে কত জমি নতুন করে চাষযোগ্য হয়েছে, কত চাষি উপকৃত হবেন, এর জন্য কত টাকা খরচ হয়েছে তার সবিস্তার বিবরণ দিয়েছেন নবীন। আর সেই প্রসঙ্গেই নবীন উল্লেখ করেছেন, দাসপুরের গুরুত্বপূর্ণ পলাশপাই খাল সংস্কারের কথা। এই খাল সংস্কারও ‘ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানে’র অন্তর্গত। রাজ্য সরকারের সেচ বিভাগের টাকা সম্প্রতি যার সংস্কার হয়েছে। সেচ সচিব জানান, অ্যানিকেত বাঁধ নির্মাণের ফলে পিংলা, ডেবরা প্রভৃতি ব্লকে ৯০ হাজার জমি সেচ সেবিত হয়েছে। ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান থেকে কেলেঘাই কপালেশ্বরী প্রকল্প— মুখ্যমন্ত্রী বোঝাতে চেয়েছেন, তাঁর নজরে রয়েছে সবকিছুই। যা তার সাধ্যে তা তিনি করেছেন। বন্যা হলেই ভেসে ওঠে ‘ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান’। তা ভেসেও যায় বন্যারই জলে। তবে যতটুকু যা কাজ হয়েছে তাতে খুশি ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান রুপায়ণ কমিটির পক্ষে নারায়ণ নায়েক। তিনি বলেন, “এটা বড় মাপের প্রকল্প। মুখ্যমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাই। কয়েকটি খাল খনন শুরু হয়েছে।প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত বাকি কাজ গুলিও দ্রুত শুরু হোক।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy