Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Midnapore

মেলার মঞ্চে অস্ট্রেলিয়ার দাবানল!

বৃহস্পতিবার মাঘের প্রথম দিনে মেলা বসেছিল নারায়ণগড় ব্লকের কাশীপুর পঞ্চায়েত এলাকার চাকাতলাতে। সেখানেই সংবর্ধনা দেওয়া হয় বনকর্মীদের। বার্তা দেওয়া হয় বন ও বন্যপ্রাণ রক্ষার। কাশীপুর এলাকায় লোধা-শবরদের বাস।

সচেতনতায়: চাকাতলার মেলায় পরিবেশ আলোচনা। নিজস্ব চিত্র।

সচেতনতায়: চাকাতলার মেলায় পরিবেশ আলোচনা। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নারায়ণগড় শেষ আপডেট: ১৭ জানুয়ারি ২০২০ ০১:৫৫
Share: Save:

আমাজন ও অস্ট্রেলিয়ার বনভূমিতে আগুন ও বন্যপ্রাণী মৃত্যুর ঘটনায় পরিবেশের উপর কী প্রভাব পড়েছে। ওই ঘটনাগুলি থেকে কী শিক্ষা নেওয়া উচিত। সবই একেক করে উঠে এল আলোচনায়। মেলার মঞ্চে এ ধরনের আলোচনায় কতটা সাড়া মিলবে? আশঙ্কায় ছিলেন উদ্যোক্তারা। দিনের শেষে হাসি ফুটেছে তাঁদের মুখে।

বৃহস্পতিবার মাঘের প্রথম দিনে মেলা বসেছিল নারায়ণগড় ব্লকের কাশীপুর পঞ্চায়েত এলাকার চাকাতলাতে। সেখানেই সংবর্ধনা দেওয়া হয় বনকর্মীদের। বার্তা দেওয়া হয় বন ও বন্যপ্রাণ রক্ষার। কাশীপুর এলাকায় লোধা-শবরদের বাস। এই সম্প্রদায়ের অনেকের জীবনই এখনও বনকেন্দ্রিক। বন এবং বন্যপ্রাণ রক্ষায় ভূমিপুত্রদের সচেতন না করলে এগনো যাবে না এক পাও—মূলত এই ভাবনা থেকেই সংবর্ধনার আয়োজন। বলছিলেন উদ্যোক্তারাই। কিন্তু এমন একটা মঞ্চ চাই, যেখানে একসঙ্গে জড়ো হতে পারে সকলে। তাই বেছে নেওয়া হয় মেলাকেই।

গ্রাম্যদেবী নিঝারি বুড়িকে কেন্দ্র করে প্রতিবছর মেলা বসে চাকাতলায়। সেখানে লোধা, শবরদের পাশাপাশি বাঙালি ও অন্য সম্প্রদায়ের মানুষ আসেন। পুজো দেন। একদিনের সেই মেলার মঞ্চে লোধা-শবর ও তফশিলি জাতি ও জনজাতিভুক্তদের নিয়ে বিভিন্ন অনুষ্ঠান হয়েছে। চাং, কাঠি,পাতা, ঝুমুর, টুসু নাচ ও গান পরিবেশিত হয়। খুদেদের নিয়ে ছিল সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা। সেই মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন বেলদা বনাঞ্চল আধিকারিক সর্বাণী দাস-সহ অন্যরা। আলোচনা করা হয় বন রক্ষা নিয়ে। শুধু বন বা গাছ রক্ষা নয়। রক্ষা করতে হবে বন্যপ্রাণী ও পাখিদের। এই বার্তা দিতে মূলত এদিনের অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল একটি পত্রিকা গোষ্ঠী। ওই পত্রিকার সম্পাদক ফটিক মিদ্যা বলেন, ‘‘আবৃত্তি, অঙ্কন, কবিতা পাঠ, আমাদের সমাজের নাচ, গান নিয়ে প্রতিযোগিতা ছিল। সেই সঙ্গে লোধা-শবর সম্প্রদায়ের মানুষের বন কেন্দ্রিক জীবন। তাই প্রথমেই প্রয়োজন বন রক্ষা করা। সেই লক্ষ্যেই এই আয়োজন করেছি।’’
ওই আলোচনাতেই উঠে আসে বনভূমি নষ্টের কথা। আমাজন ও অস্ট্রেলিয়ার বনভূমিতে আগুন ও বন্যপ্রাণী মৃত্যুর ঘটনা উল্লেখ করে পরিবেশের ক্ষতির দিক তুলে ধরা হয়। পত্রিকার অপর এক সদস্য অমিয়কুমার বিশ্বাস বলেন, ‘‘বনভূমি কমছে। তাই আগামী দিনে বিপদ এগিয়ে আসছে। আমাদের বেঁচে থাকার জন্য বন ও বনে লালিত পশু-পাখিদের বাঁচিয়ে রাখা আমাদের দায়িত্ব। ভূমিপুত্ররাই সেই কাজটি করতে পারবেন।’’

কাশীপুর পঞ্চায়েত এলাকায় প্রচুর বনভূমি আছে। এলাকা জুড়েই লোধা-শবরদের বাস। বনের ওপর নির্ভর করতে হয় তাদের। বনের বিভিন্ন উপাদান তাদের যেমন জীবিকা নির্বাহের ক্ষেত্র তেমনি বেঁচে থাকার অধিকারও। যাঁরা বনকে রক্ষা করার সরকারি দায়িত্বে আছেন তেমনই বেশ কয়েকজন বনকর্মীদের এ দিন সম্মান জানানো হয়। বনের নানা সামগ্রী দিয়ে তৈরি বিভিন্ন জিনিস উপহার স্বরূপ সবার হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। বেলদা বনাঞ্চল আধিকারিক সর্বাণী বলেন, ‘‘আপনারাই বনকে রক্ষা করতে পারবেন। সংস্কৃতি রক্ষার পাশাপাশি জঙ্গলকে রক্ষা করার জন্য
সারা পৃথিবী লড়াই করছে। আসুন সবাই মিলে, আমরা বিনা স্বার্থে যেন সেই জঙ্গল ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য রক্ষা করি।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy