ভেঙে গিয়েছে গাড়ির কাঁচ (বাং দিকে), শিশির অধিকারী (ডান দিকে) —নিজস্ব চিত্র।
তাঁর গাড়িতে হামলা চালানোর ঘটনায় প্রথমে খেজুরি থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছিলেন সাংসদ শিশির অধিকারী নিজে। তারপর ২৪ ঘন্টা কেটে গিয়েছে। তবু, অভিযুক্তরা কেউই ধরা পড়েনি। বুধবার তাই পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলে হাই কোর্টে মামলাও করেছেন বর্ষীয়ান সাংসদ। আগামী শুক্রবার বিচারপতি জয় সেনগুপ্তের এজলাসে এই মামলার শুনানি হতে পারে বলে খবর।
খাতায়কলমে তৃণমূলের সাংসদ হয়েও তিনি কেন পঞ্চায়েত সমিতির স্থায়ী সমিতি গঠনের ভোটে বিজেপিকে সমর্থন করছেন, এই প্রশ্নে নিজের অবস্থানও এ দিন স্পষ্ট করেছেন শিশির। তাঁর দাবি, "কোনও অনৈতিক কাজ করিনি। তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব আমার সাংসদপদ বাতিলের জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। তাই স্থায়ী সমিতি নির্বাচনের ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ নিজের অধিকারেই ভোট দিয়েছি।" তবে শিশির নিজে ও তাঁর সাংসদ পুত্র দিব্যেন্দু অধিকারীর এই দ্বৈত ভূমিকার পরেও তৃণমূল কেন কড়া পদক্ষেপ করছে না, সেই প্রশ্ন কিন্তু রয়েছে। এ প্রসঙ্গে রাজ্য তৃণমূলের অন্যতম সাধারণ সম্পাদক তথা পূর্ব মেদিনীপুর জেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা তন্ময় ঘোষ বলছেন, "কাঁথি এবং তমলুকের সাংসদকে দলগত রাজনৈতিক অবস্থান স্পষ্ট করতে বলা হয়েছে। তাঁরা দ্বিচারিতা করে যাচ্ছেন। নির্দিষ্ট প্রমাণ হাতে পেলে শীর্ষ নেতৃত্ব নিশ্চিত পদক্ষেপ করবেন।"
মঙ্গলবার ছিল খেজুরি-২ পঞ্চায়েতের স্থায়ী সমিতি গঠনের ভোট। এলাকার সাংসদ হিসেবে ভোট দিতে হাজির হয়েছিলেন কাঁথির সাংসদ শিশির। কিন্তু গোলমালে ভোট পন্ড হয়ে যায়। 'শান্তি কুঞ্জে' ফেরার পথে খেজুরির তেঁতুলতলার কাছে শিশিরের গাড়ি লক্ষ করে ইট ছোড়া হয় বলে অভিযোগ। ভাঙে গাড়ির উইন্ড স্ক্রিন। ঝাঁকুনিতে সামনের আসনে বসে থাকা শিশির গাড়ির ভেতরেই মাথায় আঘাত পান বলে দাবি। কাঁথি হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসার পরে বাড়ি ফেরেন তিনি। রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর মতে, "একজন প্রবীণ সাংসদের গাড়িতে হামলা মানে গোটা রাজ্যের প্রবীণদের উপরে হামলা।" তৃণমূলের কাঁথি সাংগঠনিক জেলা সভাপতির তরুণ মাইতির অবশ্য দাবি, "আমাদের কেউ এর সঙ্গে জড়িত নয়।"
মঙ্গলবারের বিডিও অফিসের অশান্তিতে স্বতঃপ্রণোদিত মামলা রুজু করেছে খেজুরি থানার পুলিশ। খেজুরি ২-এর বিডিও ত্রিভুবন নাথও পৃথক লিখিত অভিযোগ করেছেন। পাশাপাশি শিশির তাঁর গাড়িতে হামলার লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন। বিডিও অফিসে হামলার ঘটনায় পাঁচ বিজেপি কর্মীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ধৃতেরা হলেন সুব্রত পাত্র, মিলন মণ্ডল, পাঁচু প্রামাণিক, উত্তম মণ্ডল ও সুশীতল মণ্ডল।ধৃতদের বুধবার কাঁথি মহকুমা আদালতে তোলা হলে পাঁচদিনের পুলিশ হেফাজত হয়।জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গ্রামীণ) মানবকুমার সিংঘল মানছেন,"এ পর্যন্ত তিনটি মামলা রুজু হয়েছে। পাঁচজন গ্রেফতার হয়েছে। বাকিদের খোঁজ চলছে।"
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ব্লক তৃণমূল সভাপতি শ্যামল মিশ্রের বাড়িতেও ভাঙচুর চালানোর অভিযোগ ওঠে বিজেপি কর্মীদের বিরুদ্ধে। যদিও স্থানীয় বিজেপি বিধায়ক শান্তনু প্রামাণিক বলছেন, "কারা অশান্তি করেছে তা প্রশাসন ভালই জানে। অপপ্রচারের জন্যই বিজেপির বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হচ্ছে। এই আবহে স্থায়ী সমিতির নির্বাচন আপাতত স্থগিত। কাঁথির মহকুমা শাসক শৌভিক ভট্টাচার্য বলেন, "পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার পরে স্থায়ী সমিতির নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু হবে।"
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy