শেখ হসিনুদ্দিন ও তাঁর স্ত্রী ইলিনা বেগম। — নিজস্ব চিত্র।
তাঁর মেয়ের বিয়ের দায়িত্ব নিয়েছেন সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। গত শনিবার কেশপুরের সভা থেকে এমনটাই ঘোষণা করেছেন তিনি। কিন্তু অভিষেকের সেই ‘মডেল’ প্রার্থী শেখ হসিনুদ্দিন জানিয়ে দিলেন, এখনই বিয়ে নয়, আগে নিজের পায়ে দাঁড়াতে চান তাঁর মেয়ে তানিয়া সুলতানা। মঞ্চে তুলে অভিষেক তাঁকে যে ‘শংসাপত্র’ দিয়েছেন তার জন্য কৃতজ্ঞতাও জানিয়েছেন হসিনুদ্দিন।
কেশপুরের উচাহারের বাসিন্দা হসিনুদ্দিন। বয়স ষাটের ঘরে। এক সময় দীর্ঘ ১২ বছর মেদিনীপুর-ঘাটাল রুটে বাসের কন্ডাক্টর ছিলেন তিনি। এখন কাজ করেন কেশপুরে একটি ওষুধের দোকানে। তিনি থাকেন টিনের ছাউনি দেওয়া মাটির বাড়িতে। এখন খসে পড়ছে সেই মাটির দেওয়ালও। টিনও ভেঙে গিয়েছে জায়গায় জায়গায়। সেই বাড়িতেই স্ত্রী ইলিনা বেগম, ছেলে মহম্মদ ফায়েজ এবং মেয়ে তানিয়াকে নিয়ে থাকেন তিনি। হসিনুদ্দিন ছাড়াও তাঁর দাদা শেখ গোলামউদ্দিন, ভাই শেখ নবাবউদ্দিনের সংসারও রয়েছে একই বাড়িতে। ফায়েজ দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র। তানিয়া ইংরেজিতে স্নাতক হয়ে বিএড পড়ছেন। হসিনুদ্দিনের দাবি, সম্প্রতি আবাস যোজনায় নাম উঠেছিল তাঁর। সঙ্গে সঙ্গে পঞ্চায়েত থেকে যোগাযোগ করা হয়েছিল বলেও জানিয়েছেন তিনি। কিন্তু তিনি ফিরিয়ে দিয়েছেন সেই ঘর। তাঁর যুক্তি, ‘‘আমি বাড়ি নেব না। কারণ যে টাকা সঞ্চয় করেছি তা মেয়ের বিয়ের জন্য। বাড়ি করলে মেয়ের বিয়ে দিতে দেওয়া সম্ভব হবে না।’’ এ হেন হসিনুদ্দিনকে কেশপুরের মঞ্চে তুলে সভায় উপস্থিত জনতার উদ্দেশে অভিষেক বলেন, ‘‘হসিনুদ্দিনের মতো লোকেরাই তৃণমূলের মুখ হতে চলেছেন। এঁদেরই আমরা স্বীকৃতি দেব। করেকম্মে খাওয়ার দিন শেষ।’’ অভিষেক তাঁর মেয়ের বিয়ের দায়িত্বও নিয়েছেন।
অভিষেক তাঁর পাশে দাঁড়ানোয় আপ্লুত হসিনুদ্দিন। কিন্তু এখনই বিয়ে করতে নারাজ তানিয়া। শনিবার কেশপুরের সভায় অভিষেকের কথার রেশ টেনেই হসিনুদ্দিন বলেন, ‘‘উনি আমাকে বললেন, ‘আপনার মেয়ের বিয়ে দেওয়ার জন্য আপনি বাড়ি তৈরি করতে পারছেন না। আপনার যদি এতই চিন্তা তা হলে আপনার মেয়ের দায়িত্ব আমি নিলাম।’ এতে আমার মেয়ের একটু সেন্টিমেন্টে লেগেছে। কারণ, এটাও কারও কাছে চাওয়া হয়ে গেল। এটাই ওর খারাপ লেগেছে। মেয়ে জানিয়েছে, ওর একটা কাজের ব্যবস্থা করে দিলে নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারে। এমন হলে ভাল হত আর কী।’’ অভিষেকের সঙ্গে মঞ্চ ভাগ করে নেওয়া নিয়ে হসিনুদ্দিনের মন্তব্য, ‘‘উনি আমাকে যে সম্মান দিয়েছেন, লোকের সামনে যে সার্টিফিকেট দিয়েছেন তাতে আমি কৃতজ্ঞ।’’
হসিনুদ্দিনের সুর তাঁর স্ত্রী ইলিনার গলাতেও। তানিয়ার মা বলেন, ‘‘অত জনের সামনে বিয়ের কথা ওঠায় আমার মেয়ের সেন্টিমেন্টে লেগেছে। সে বিয়ে করতে চায় না এখন। ও পড়াশোনা করে নিজের পায়ে দাঁড়াতে চায়। বিএডটা শেষ করতে চায়। তার পর এমএ করতে চায়। আমি চাই, অভিষেক দাদার কাছে যেন আমার ছেলের একটা কাজ হয়।’’ স্ত্রীর পাশে দাঁড়িয়ে হসিনুদ্দিন জানিয়েছেন, পঞ্চায়েত নির্বাচনে তিনি প্রার্থী হলে সামর্থ্য অনুযায়ী মানুষের পাশে দাঁড়াবেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy