বাছাই: হিমঘরে পাঠানোর আগে। —নিজস্ব চিত্র।
রাজ্যে ফুলচাষে দ্বিতীয় স্থান পূর্ব মেদিনীপুরের। জেলার মধ্যে পাঁশকুড়া ব্লক রয়েছে প্রথম সারিতে।
ফুল সংরক্ষণের জন্য এলাকায় একটি হিমঘরের দাবি ছিল দীর্ঘদিনের। ২০০৪ সালে এক কোটি টাকা ব্যয়ে পাঁশকুড়ায় ফুল বাজার ও হিমঘরের উদ্বোধন করেন তৎকালীন উদ্যানপালন মন্ত্রী শৈলেন সরকার। কিন্তু কয়েক মাসের মধ্যে হিমঘরটির যন্ত্রাংশ খারাপ হয়ে যাওয়ায় সেটি বন্ধ হয়ে যায়। ২০১২ সালে নতুন সরকারের উদ্যান পালন দফতরের উদ্যোগে পুরনো যন্ত্রপাতি মেরামত করে ফের চালু করা হয় হিমঘরটি। কিন্তু কিছুদিন পরে ফের হিমঘরটি অকেজো হয়ে পড়ে। হিমঘরে আর্দ্রতা নিয়ন্ত্রক যন্ত্র না থাকায় এবার পুজোর সময় সেখানে পদ্ম রাখা যায়নি। তার ফলে ক্ষতির মুখে পড়েন পদ্মচাষিরা। গত বছর হিমঘরটিতে গোলাপ রাখার মতো পরিকাঠামো তৈরি হলেও পিপিপি মডেল গঠনে বিলম্ব হওয়ায় হিমঘরটি চালু করা যায়নি।
পাঁশকুড়া ফুলবাজার পরিচালন সমিতি ও সারা বাংলা ফুলচাষি ও ফুল ব্যবসায়ী সমিতির লাগাতার আবেদনের প্রেক্ষিতে চলতি মাসে জেলাশাসক রশ্মি কমলের নির্দেশে হিমঘরটি চালু করা হয়। গত ১০ জানুযারি থেকে হিমঘরটিতে গোলাপ রাখাও শুরু হয়েছে। যা স্বস্তি দিয়েছে গোলাপ চাষি থেকে ফুল ব্যবসায়ী সকলকেই।
পাঁশকুড়া ব্লকের মাইশোরা, গোবিন্দনগর, কেশাপাট, পাঁশকুড়া-১ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার বৃহৎ অংশে গোলাপের চাষ হয়। কোলাঘাট ব্লকেও গোলাপের চাষ হয়। বছরভর নানা অনুষ্ঠানের জন্য গোলাপের ভাল চাহিদা থাকলেও, ফেব্রুয়ারিতে ‘ভ্যালেন্টাইন ডে’ উপলক্ষে গোলাপের চাহিদা তুঙ্গে ওঠে। কিন্তু হিমঘরের সুবিধা না থাকার জন্য গোলাপ সংরক্ষণ করা যেত না। ফলে চাষি থেকে ব্যবসায়ী সকলেই চরম ক্ষতির মুখে পড়তেন। পাঁশকুড়া ফুল বাজারের হিমঘরটি চালু হওয়ায় সেখানে গোলাপ সংরক্ষণ শুরু হয়েছে। হিমঘর কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গিয়েছে, এখনও পর্যন্ত ৫২ প্যাকেট গোলাপ হিমঘরে মজুত করেছেন ব্যবসায়ীরা। চলতি মরসুমে ১৫ দিনের জন্য প্যাকেট পিছু ১৫০ টাকা ভাড়া ধার্য করা হয়েছে পাঁশকুড়া ফুল বাজার পরিচালন সমিতির পক্ষ থেকে।
ফুল বাজার সূত্রে জানা গিয়েছে, এ বছর ‘ভ্যালেন্টাইনস ডে’-র আগে হিমঘরে আরও গোলাপ মজুত করা হবে ব্যবসায়ীদের তরফে। উত্তর জিয়াদা গ্রামের গোলাপ ব্যবসায়ী সন্তোষ সামন্ত বলেন, ‘‘হিমঘর চালু হওয়ায় এ বার চাষিরা গোলাপের ভাল দাম পাবেন। ব্যবসায়ীরাও ‘ভ্যালেন্টাইনস ডে’ উপলক্ষে রাজ্যের বাইরে ফুল পাঠাতে পারবেন।’’ মাইশোরা গ্রামের গোলাপ চাষি রঞ্জিত দেহেরির কথায়, ‘‘হিমঘর চালু হওয়ায় এবার জানুয়ারি থেকে গোলাপের ভাল দাম মিলছে।’’
সারা বাংলা ফুলচাষি ও ফুল ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক নারায়ণ চন্দ্র নায়ক বলেন, ‘‘আমাদের দীর্ঘ আন্দোলনের জেরে শেষ পর্যন্ত হিমঘরটি চালু হয়েছে। সেখানে আর্দ্রতা নিয়ন্ত্রক যন্ত্র বসানোর জন্য আমরা সরকারের কাছে আবেদন জানিয়েছি। ওই যন্ত্র বসানো হলে পদ্ম ফুলও সংরক্ষণ করা যাবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy