প্রতীকী ছবি।
কখনও প্রলোভন, কখনও আবার হুমকি।
রামজীবনপুর পুরসভা বিজেপির দখলে আসা নিশ্চিত হতেই গেরুয়া কাউন্সিলরদের ক্রমাগত হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠল। গত শনিবার বিজেপির তরফে পুলিশেও সেই অভিযোগ জানানো হয়। আর তার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই রবিবার বদলি করা হল রামজীবনপুর ফাঁড়ির ইনচার্জ (আইসি) সমর লায়েককে। দায়িত্ব নেওয়ার আট মাসের মাথায় বদলি হলেন তিনি। তাঁর জায়গায় দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে রামাশিস সিংহকে। তিনি কেশিয়াড়ি থানায় ছিলেন। সমরকে কেশিয়াড়ি থানায় পাঠানো হয়েছে। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পুলিশের এক আধিকারিকের অবশ্য দাবি, “এটা রুটিন বদলি।”
রামজীবনপুর পুরসভায় তৃণমূলের প্রাক্তন চেয়ারম্যান শিবরাম দাস সম্প্রতি বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পরেই পাশা পাল্টে গিয়েছে। এই পুরসভা দখল নিশ্চিত করে ফেলেছে গেরুয়া শিবির। ১১ আসন বিশিষ্ট রামজীবনপুরে এখন বিজেপির কাউন্সিলর ৬ জন, তৃণমূলের ৪ এবং সিপিএম সমর্থিত নির্দল কাউন্সির রয়েছেন একজন। এরপর ৪ সেপ্টেম্বর পুরবোর্ডের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনে বিজেপি। অভিযোগ, তারপরই অচেনা নম্বর থেকে ক্রমাগত ফোন আসছে গেরুয়া শিবিরের কাউন্সিলরদের কাছে। বিজেপি সমর্থিত নির্দল কাউন্সিলর শিউলি সিংহ এবং রিঙ্কু নিয়োগীর কাছে এমন ফোন এসেছে বলে অভিযোগ। শনিবার বিজেপি শিবিরের এই দুই কাউন্সিলর রামজীবনপুর ফাঁড়িতে অভিযোগ দায়ের করেছেন।
পাঁচ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শিউলির অভিযোগ, “মাঝেমধ্যেই হুমকি ফোন আসছে। কেউ কোনও পরিচয় দিচ্ছে না। কোনও দলের নামও বলা হয়নি। তবে নানা প্রলোভন দেখানো হচ্ছে। রাজি না হলে মারধর-সহ নানা আক্রমণের হুমকি দেওয়া হচ্ছে।” দুই নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর রিঙ্কুরও বক্তব্য, “আমাকে ফোন করে যখন তখন নানা রকম হুমকি দেওয়া হচ্ছে। দলকে জানিয়েছি। পুলিশকেও জানিয়েছি।” পরিস্থিতি এমন যে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে আসা শিবরাম দাস মোবাইল বন্ধ করে রেখেছেন। অন্য এক পরিচিতের ফোনে অবশ্য শিবরামকে পাওয়া গেল। তিনি শুধু বললেন, “আমি রামজীবনপুরেই আছি।”
বিজেপির রামজীবনপুর মণ্ডল কমিটির সভাপতি নন্দ নিয়োগীর বক্তব্য, “ফোনে তৃণমূলের নাম নেওয়া হচ্ছে না ঠিকই। তবে এটাও ঠিক যে এতে শাসকদলের ইন্ধন রয়েছে। আমরা রাজ্য নেতৃত্বকে সব জানিয়েছি।” আগামী ১৬ সেপ্টেম্বর রামজীবনপুরে সভা করার কথা বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের। তার আগে এমন হুমকির অভিযোগ ও রাতারাতি ফাঁড়ির ইনচার্জ বদলে শোরগোল পড়ে গিয়েছে।
হমকির অভিযোগ অবশ্য মানতে নারাজ তৃণমূল। দলের জেলা সভাপতি অজিত মাইতির দাবি, “ওই সব তৃণমূলের কাজ নয়।” একই সঙ্গে তাঁর দাবি, “রামজীবনপুরে পুরবোর্ড পরিবর্তনের কোনও লক্ষণ নেই। রামজীবনপুর নিয়ে আমরা চিন্তিতও নয়।” রামজীবনপুর পুরসভার চেয়ারম্যান নির্মল চৌধুরীর বক্তব্য, “অনাস্থা নিয়ে এখনই কিছু ভাবছি না। এখন অনেক দিন বাকি।”
তবে গেরুয়া শিবির ঘর গুছিয়ে রাখতে পারলে রামজীবনপুর দখল বিজেপির আটকাবে না। বিজেপি সূত্রের খবর, দলীয় ভাবে চেয়ারম্যান হিসাবে দলের প্রবীণ কাউন্সিলর গোবিন্দ মুখোপাধ্যায়ের নাম চূড়ান্ত হয়েছে। নিয়মানুযায়ী, ১৫ দিনের (কাজের দিন) মধ্যেই বৈঠক ডাকতে হবে চেয়ারম্যানকে। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে চেয়ারম্যান সভা না ডাকলে পুর-নিয়মে উপ-পুরপ্রধান তারপর কাউন্সিলররাও সভা ডাকতে পারেন। তবে এ ক্ষেত্রে এতটা দেরি করবে না বিজেপি। দলের সম্ভাব্য চেয়ারম্যান পদের দাবিদার গোবিন্দ মুখোপাধ্যায় বলেন, “নির্দিষ্ট সময় অতিক্রান্ত হলেই আমরা হাইকোর্টে যাব।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy