Advertisement
১৯ নভেম্বর ২০২৪

ঘুরে দাঁড়াতে চিন্তন শিবির করছে কংগ্রেস

তিন বছর আগে জঙ্গলমহলে কংগ্রেসের সক্রিয় সদস্য ছিলেন ২,২৩৮ জন। আর এখন সংখ্যাটা দাঁড়িয়েছে ৪১১ জনে। জঙ্গলমহলে কংগ্রেসের সাংগঠনিক অবস্থাটা চুম্বকে বোঝাতে হলে এই পরিসংখ্যাটাই যথেষ্ট বলে মনে করছেন দলীয় কর্মীরা। সংগঠনের এমন করুণ দশায় চিন্তায় পড়েছেন ঝাড়গ্রাম জেলা কংগ্রেস নেতৃত্ব।

নিজস্ব সংবাদদাতা
ঝাড়গ্রাম শেষ আপডেট: ০৫ জুলাই ২০১৫ ০০:৫৯
Share: Save:

তিন বছর আগে জঙ্গলমহলে কংগ্রেসের সক্রিয় সদস্য ছিলেন ২,২৩৮ জন। আর এখন সংখ্যাটা দাঁড়িয়েছে ৪১১ জনে। জঙ্গলমহলে কংগ্রেসের সাংগঠনিক অবস্থাটা চুম্বকে বোঝাতে হলে এই পরিসংখ্যাটাই যথেষ্ট বলে মনে করছেন দলীয় কর্মীরা। সংগঠনের এমন করুণ দশায় চিন্তায় পড়েছেন ঝাড়গ্রাম জেলা কংগ্রেস নেতৃত্ব। বিধানসভা ভোটের আগে এলোমেলো সংগঠনকে কী ভাবে চাঙ্গা করা যাবে, আপাতত সেটাই স্থানীয় নেতৃত্বের প্রধান ভাবনা। জঙ্গলমহলে ঘুরে দাঁড়ানোর লক্ষ্যে শনিবার থেকে বেলপাহাড়িতে ঝাড়গ্রাম জেলা কংগ্রেসের উদ্যোগে দু’দিনের ‘চিন্তন শিবির’ শুরু হয়েছে। এ দিন বেলপাহাড়ির একটি স্কুলে শিবিরের সূচনা করেন ঝাড়গ্রাম জেলা কংগ্রেসের মুখ্য সংগঠক সুব্রত ভট্টাচার্য। কংগ্রেসের ঝাড়গ্রাম সাংগঠনিক জেলার অন্তর্গত ৯টি ব্লকের ৫৫ জন কংগ্রেস কর্মী শিবিরে যোগ দিয়েছেন। আজ, রবিবার শিবিরের সমাপ্তি দিনে হাজির থাকবেন প্রদেশ কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক বিধায়ক অসিত মিত্র।

গত বিধানসভা ভোটে তৃণমূল রাজ্যের ক্ষমতায় আসার পরে জঙ্গলমহলে কংগ্রেসের সংগঠন কার্যত মুখ থুবড়ে পড়ে। দলের বিপর্যয় ঠেকাতে ২০১৩ সালের নভেম্বরে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা কংগ্রেস থেকে ঝাড়গ্রামকে আলাদা করে পৃথক ঝাড়গ্রাম জেলা কংগ্রেস কমিটি গঠন করা হয়। দলের ঝাড়গ্রাম জেলা সভাপতি হন নিখিল মাইতি। পৃথক জেলা কমিটি গঠনের পরেও কংগ্রেসের সাংগঠনিক শক্তির বিন্দুমাত্র উন্নতি হয় নি বলে অভিযোগ করেছেন দলীয় কর্মীরা। বরং ঝাড়গ্রাম জেলা কংগ্রেস গঠিত হওয়ার পর কংগ্রেসের বাদবাকি নেতা-কর্মীরাও শাসক শিবিরে নাম লিখিয়েছেন। অনেকে আবার ‘নিষ্ক্রিয়’ হয়ে গিয়েছেন। বছর খানেক আগে নিখিল মাইতি ঝাড়গ্রাম জেলা কংগ্রেস সভাপতির পদ থেকে শারীরিক অসুস্থাতার কারণে ইস্তফা দিয়েছেন।

দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১২ সাল নাগাদ ঝাড়গ্রাম মহকুমায় কংগ্রেসের সক্রিয় সদস্য সংখ্যা ছিল ২,২৩৮ জন। তিন বছর পরে সংখ্যাটা এখন ৪১১। কংগ্রেস সূত্রের অবশ্য দাবি, নতুন করে সদস্য সংগ্রহের কাজ শুরু হয়েছে। সংখ্যাটা বাড়বে। তবে দলের অন্দরে অস্বস্তি কাটছে না। এ দিন শিবিরে দলীয় কর্মীরা অভিযোগ করেন, স্থানীয় এক দু’জন বাদে বাকি নেতারা গ্রামে যান না। দলে লোকজন কমছে বলে তাঁরা আবার রাজনৈতিক কর্মসূচিতেও নেই। তাই গ্রামাঞ্চলের গরিব মানুষের কাছে দলের বার্তা পৌঁছচ্ছে না।

ঝাড়গ্রামে এই মুহূর্তে একাকুম্ভ হয়ে কংগ্রেসের ‘গড়’ সামলাচ্ছেন বেলপাহাড়ির প্রবীণ কংগ্রেস নেতা সুব্রত ভট্টাচার্য। গত বছর নিখিলবাবু জেলা সভাপতির পদ ছাড়ার পরে প্রদেশ কংগ্রেসের তরফে সুব্রতবাবুকে ঝাড়গ্রাম জেলা কংগ্রেসের মুখ্য সংগঠকের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। কংগ্রেস সূত্রের খবর, বিধানসভা ভোটের আগে ঝাড়গ্রাম জেলা কংগ্রেসের সাংগঠনিক কাঠামো গড়ার প্রাথমিক পদক্ষেপ হিসেবে চিন্তন শিবিরের আয়োজন করা হয়েছে।

এদিন শিবিরের উদ্বোধন করে সুব্রতবাবু কর্মীদের বলেন, ‘শাসক দলের প্রতিটি স্তরে চরম অর্ন্তদ্বন্দ্ব। পাশাপাশি, শাসক দলের বিরুদ্ধে সীমাহীন দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ উঠছে। এলাকার মানুষ একশো দিনের কাজ পাচ্ছেন না। বকেয়া মজুরিও মিলছে না। আমজনতার একটা বড় অংশ তাই তৃণমূলের থেকে মানসিকভাবে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছেন। কিন্তু প্রতিবাদের উপযুক্ত মঞ্চ না পেয়ে তাঁরা চুপ করে রয়েছেন। সিপিএম অনেক আগেই মানুষের বিশ্বাস হারিয়েছে। অন্য দিকে, বিজেপি জঙ্গলমহলবাসীর বিশ্বাস অর্জনে ব্যর্থ হয়েছে। আর ঝাড়খণ্ডী দলগুলি ছিন্ন বিচ্ছিন্ন অবস্থায় কার্যত বেসামাল। জঙ্গলমহলে এটাই কংগ্রেসের ঘুরে দাঁড়ানোর পক্ষে উপযুক্ত সময়।’

অন্য বিষয়গুলি:

Jhargram Rally congress Assembly Trinamool
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy