প্রথম বর্ষের এক ছাত্র র্যাগিংয়ের শিকার হল হলদিয়ার সিপেট ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে। সহপাঠী ও তৃতীয় বর্ষের কয়েক জন ছাত্র মিলে প্রথম বর্ষের ওই পড়ুয়াকে মুখে কাপড় বেঁধে গাড়িতে চাপিয়ে তুলে নিয়ে গিয়ে মারধর করে এবং পরে কোলাঘাটে নামিয়ে দেয় বলে অভিযোগ। এই ঘটনায় পাঁচ ছাত্রকে গ্রেফতার করেছে হলদিয়ার ভবানীপুর থানার পুলিশ। আর র্যাগিংয়ের শিকার ছাত্রটিকে জখম অবস্থায় ভর্তি করানো হয়েছে হলদিয়া মহকুমা হাসপাতালে।
আক্রান্ত ওই ছাত্রের বাড়ি বিহারে। তিনি হস্টেলে থাকতেন। তাঁর অভিযোগ, মাস দুয়েক ধরেই উঁচু ক্লাসের দাদারা তাঁকে নানা ভাবে উত্ত্যক্ত করছিল। প্রথমে তিনি কেন্দ্রীয় সরকারের অ্যান্টি র্যাগিং হেল্পলাইনে ফোন করে অভিযোগ জানান। সেখান থেকেই বিষয়টি জানানো হয় সিপেট কলেজ কর্তৃপক্ষকে। এরপর কলেজের অ্যান্টি র্যাগিং কমিটির কাছেও লিখিক অভিযোগ জানান প্রথম বর্ষের ওই ছাত্র। তার ভিত্তিতে তৃতীয় বর্ষের অভিযুক্ত দুই পড়ুয়াকে সাসপেন্ডও করেন কলেজ কর্তৃপপক্ষ। তারপরই এই ঘটনা।
ওই ছাত্রের অভিযোগ, শুক্রবার সন্ধ্যায় ক্লাস সেরে হস্টেলে ফেরার পরে কয়েকজন মিলে ঘরে ঢুকে তাঁর উপর চড়াও হয়। মারধর করে কেড়ে নেওয়া হয় তাঁর ল্যাপটপ। এরপর মুখে কাপড় বেঁধে ওই ছাত্রকে জোর করে গাড়িতে চাপানো হয় বলে অভিযোগ। তাঁর চোখ বাঁধা ছিল। তবে ওই ছাত্রের দাবি, মাঝপথে গাড়ি থামিয়ে মদ কেনে বাকি ছাত্ররা। পরে সেই বোতল ভেঙেই তাঁকে মারধর করা হয়। ব্লেড দিয়েও আঘাত করা শরীরের নানা অংশে। তারপর জখম অবস্থায় কোলাঘাটের কাছে তাঁকে গাড়ি থেকে নামিয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ।
ওই ছাত্রের দাবি, গাড়িতে সুযোগ বুঝে একবার এক সহপাঠীকে ফোন করতে পেরেছিলেন তিনি। আর কোলাঘাটে নামিয়ে দেওয়ার পরে হাঁটতে হাঁটতে তিনি এক হোটেলে গিয়ে পৌঁছন। সেখানকার মালিকের মাধ্যমেই খবর যায় পুলিশের কাছে। পুলিশ এসে জখম ওই ছাত্রকে উদ্ধার করে হলদিয়া মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করায়। গ্রেফতার করা হয় অভিযুক্ত পাঁচ ছাত্রকে।
এ দিন হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, হাতে ব্যান্ডেজ বাঁধা অবস্থায় শুয়ে রয়েছেন প্রথম বর্ষের ওই ছাত্র। চোখেমুখে আতঙ্কের ছাপ। ঘটনার কথা জিজ্ঞাসা করা হলে শুধু বলেন, ‘‘অনেক আশা নিয়ে পড়তে এসেছিলাম। ক’দিন পরেই পরীক্ষা। এমন ঘটনা ঘটতে পারে ভাবিনি কখনও।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy