জননেতা: তৃণমূলের ব্যানারে দেখা যাচ্ছে এই ছবি। ছবি: দেবরাজ ঘোষ
দুই জননেতাকে ভুলতে পারেনি খড়্গপুর। সেই স্মৃতিকে উস্কে দিয়েই এ বারের উপ-নির্বাচনে প্রচারে দলীয় প্রার্থী তথা পুরপ্রধান প্রদীপ সরকারকে জননেতা হিসেবে তুলে ধরছে তৃণমূল। বিরোধীদের কটাক্ষ, প্রয়াত দশবারের কংগ্রেস বিধায়ক ‘চাচা’ জ্ঞানসিংহ সোহন পাল ও সিপিআই সাংসদ নারায়ণ চৌবের রাজনৈতিক জীবন ও ব্যক্তিত্বের জন্য খড়্গপুরের মানুষই তাঁদের জননেতা বলেন। ফ্লেক্স ও হোর্ডিংয়ে লিখে দিলেই কেউ জননেতা হয়ে যান না।
উপ-নির্বাচনের প্রচারের শুরুতে অবশ্য প্রদীপের প্রচারে স্লোগান ছিল ‘নেতা নেহি, বেটা হ্যায়’। গত কয়েকদিনে সেই ‘বেটা’ই হয়ে উঠেছেন ‘জননেতা’। প্রদীপের ছবি দিয়ে বড় অক্ষরে ‘জননেতা’ লেখা হোর্ডিং দেখা যাচ্ছে শহরে। প্রদীপ ২০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর। সেখানকার তৃণমূল কার্যালয়ের সামনেও এমনই একাধিক হোর্ডিং রয়েছে। প্রদীপের অবশ্য দাবি, জননেতা লেখা ওই হোর্ডিং কারা লাগিয়েছে তা তিনি জানেন না।
নারায়ণ চৌবে ও জ্ঞানসিংহ সোহন পাল প্রয়াত হলেও রেলশহরের রাজনীতিতে তাঁরা এখনও প্রাসঙ্গিক। এই উপ-নির্বাচনের প্রচারেই খোদ শুভেন্দু অধিকারী শহরে এসে বলেছিলেন, “আমার বাবা শিশির অধিকারী চাচার শিষ্য। চাচার আশীর্বাদ তাঁর শিষ্যের পুত্র শুভেন্দু অধিকারী পাবে।” প্রদীপও জানান, নারায়ণ চৌবে ছিলেন তাঁর কাছের মানুষ। একই পাড়ায় থাকায় তাঁদের মধ্যে পারিবারিক সম্পর্ক ছিল। নারায়ণ চৌবে ও তাঁর ছেলে গৌতম চৌবের হাত ধরেই তিনি সিপিআইয়ের ছাত্র সংগঠন এআইএসএফে যোগ দিয়েছিলেন। মৃত্যুর আগে পর্যন্ত চাচার থেকেও অনেক কিছু শিখেছেন বলে দাবি করেছেন প্রদীপ। তৃণমূল প্রার্থী নিজেও মানছেন, “নারায়ণ চৌবে ও জ্ঞানসিংহ সোহন পালের নখের যোগ্য হতে পারব না। তাঁদের চিন্তাধারায় ১০ ভাগ কাজও যদি করতে পারি তাহলেই নিজেকে গর্বিত মনে করব।”
তবে তাতে অবশ্য বিতর্ক থামছে না। বিজেপির প্রার্থী প্রেমচাঁদ ঝার কটাক্ষ, “তৃণমূল প্রার্থী নিজেই নিজেকে কখনও জননেতা, কখনও বেটা বলছেন। উনি যদি জননেতা হয়েই যান, তাহলে প্রচারের পরিশ্রম করছেন কেন? আসলে উনি অভিনেতা।” জোট প্রার্থী কংগ্রেসের চিত্তরঞ্জন মণ্ডলেরও দাবি, “চাচা ও নারায়ণ চৌবে যে জননেতা ছিলেন সেটা রেলশহরের মানুষ বলেছে। তাঁদের নিজেদের বলতে হয়নি। তৃণমূল প্রার্থীর স্বঘোষিত জননেতা।”
বিরোধীদের কটাক্ষকে গুরুত্ব দিচ্ছেন না তৃণমূল প্রার্থী। তাঁর দাবি, “আমাকে খড়্গপুরের মানুষ ‘বেটা’ বলছেন। তবে আমি যেহেতু পুরপ্রধান তাই অনেকে নেতাও ভাবেন। জননেতা হিসাবে কে, কোথায় পোস্টার দিয়েছে তা জানা নেই।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy