ক্রেতাদের ভিড় নেই দোকানে। তমলুক শহরে। ছবি: পার্থপ্রতিম দাস
বাংলা নতুন বছর শুরুর আগে শেষ রবিবার। পোশাক, জুতো থেকে গৃহস্থালীর সামগ্রীর দোকানেও ‘চৈত্র সেল’-এর ছাড় সহ হরেক রকম অফার।
কিন্তু কোথাও তা নিয়ে ক্রেতাদের আতিশয্য চোখে পড়ল না। ১০ শতাংশ থেকে ২০ শতাংশ, এমনকী ৫০ শতাংশ পর্যন্ত ছাড়ের ‘বোর্ড’ ঝুলতে দেখেও দোকানের পথ মাড়াতে দেখা যায়নি অধিকাংশ ক্রেতাকেই। জেলার সদর শহর তমলুক থেকে হলদিয়া, কাঁথি, এগরা, সবর্ত্রই প্রায় একই ছবি।
রবিবার সরকারি ছুটির দিন। শহরের চাকুরিজীবীদের অনেকেই বিভিন্ন জিনিসপত্র কেনাকাটা করতে বের হন। কিন্তু এদিন তমলুক শহরের বাদামতলামোড়, হাসপাতাল মোড়, বেনেপুকুর, বর্গভীমা মন্দির সংলগ্ন ভীমারবাজার, স্টিমারঘাট, পাঁশকুড়া বাসস্ট্যান্ড এলাকায় ঘুরে দেখা গিয়েছে অধিকাংশ পোশাকের দোকানে ক্রেতার ভিড় নেই। করোনা পরিস্থিতির কারণে ২০২০ সালে এই সময়ে লকডাউন ছিল। পোশাক সহ অধিকাংশ দোকানপাট বন্ধ ছিল। চৈত্র সেলের সুযোগ ছিল না। গত বছর এই সময়েও করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের জেরে আংশিক বিধি নিষেধ থাকলেও ‘চৈত্র সেল’ চালু ছিল। আর এবছর করোনার পরিস্থিতির উন্নতিতে বিধিনিষেধ অনেকটাই শিথিল হওয়ায় চৈত্র সেলে ক্রেতার ভিড় দেখার আশায় ছিলেন ব্যবসায়ীরা। কিন্তু হতাশ জেলার বাজারগুলির ব্যবসায়ীরা। তমলুক শহরের বড়বাজারের সংলগ্ন রূপশ্রী সিনেমা হলের সামনে পোশাক দোকান রয়েছে দুর্গাপদ ঘড়া’র। চৈত্র সেলের বোর্ড ঝোলানো রয়েছে দোকানে। কিন্তু শেষ রবিবারেও বিক্রিবাটায় ভাটা। দুর্গাপদ বলেন, ‘‘করোনায় গত বছর চৈত্র সেলে তবু কিছু বিক্রি হয়েছিল। অথচ এবার করোনা পরিস্থিতি অনেকটাই উন্নতি হলেও বাজার মন্দা। সারাদিনে বিক্রি খুবই কম।’’ দুর্গাপদ মতো অবস্থা প্রায় সকলের। তবে এর কারণ হিসাবে সকলেই মানছেন, ‘‘করোনার জেরে অনেক মানুষের কাজ চলে গিয়েছে। ফলে মানুষের কেনাকাটার ক্ষমতা কমেছে। ফলে চৈত্র সেলের বাজারেও লোকজনের দেখা নেই।’’
মেচেদা পুরাতন বাজারে গিয়ে দেখা গেল অধিকাংশ দোকান প্রায় ফাঁকা। বাজারে প্রায় ২০ বছর ধরে পোশাকের দোকান বলরাম জানা’র। তাঁর কথায়, ‘‘করোনার জেরে গত দু’বছরে ব্যবসা অনেকটাই মার খেয়েছিল। তবে এবার করোনা পরিস্থিতি উন্নতি হলেও গত দু’বছরের তুলনায় পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে। কারণ কাজের সূত্রে ভিন রাজ্যে থাকা জেলার বহু বাসিন্দা পরিবারের সদস্যদের এসময় পোশাক কেনাকাটার জন্য টাকা পাঠাতেন। কিন্তু করোনার জেরে কাজ হারিয়ে তাঁরা এখন ঘরে। রোজগার নেই। ফলে কেনাকাটাও নেই। সামনে ইদের বাজার থাকলেও কেনাকাটার জন্য ক্রেতাদের তেমন দেখা নেই।’’
এগরাতেও গত বছরের তুলনায় চৈত্র সেলের বাজার মন্দা। করোনা পরিস্থিতির জেরে কাজ হারানোর পাশাপাশি গত বছর এগরা, পটাশপুর, ভগবানপুরের অধিকাংশ গ্রামে বিধ্বংসী বন্যায় বহু মানুষ ব্যাপক আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছে। ফলে এবার চৈত্র সেলে ওই সব এলাকার বাসিন্দাদের দেখা নেই বলে জানান ব্যবসায়ীরা। তুলনায় কিছুটা স্বস্তির ছবি কাঁথি শহরে। শহরের পোশাক, জুতার দোকানগুলিতে চৈত্র সেলের কেনাকাটায় লোকজনের ভিড় কমবেশি চোখে পড়েছে। তবে রামনগর, হেড়িয়া, মাধাখালির মতো গ্রামীণ বাজারগুলিতে চৈত্র সেলেও দোকানপাটে ভিড় নেই বলে জানালেন ব্যবসায়ীরা। কাঁথি শহর ব্যবসায়ী সমন্বয় সমিতির সম্পাদক জগদীশ দিন্দা বলেন, ‘‘গত দু’বছরের তুলনায় এবার চৈত্র সেলের কেনাকাটায় ভিড় কিছুটা বেড়েছে। তবে এখনও কয়েক দিন বাকি। আশা করি আগামী কয়েক দিন ক্রেতাদের ভিড় বাড়বে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy