প্রস্তুতি চলছে দুর্গাপুজোর (বাঁদিকে)। একই মাঠে বুধবারই শুরু হয়ে গিয়েছে গণেশ পুজো। নিজস্ব চিত্র
লড়াই রয়েছে রাজনীতির ময়দানে। কিন্তু এবার যুদ্ধক্ষেত্র পাল্টে সেই লড়াই গড়িয়েছে পুজোর ময়দানেও!
পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথি বরাবরই ‘অধিকারী গড়’ বলে পরিচিতি। বিধানসভা ভোটের আগে থেকেই অধিকারী পরিবারের সঙ্গে তৃণমূল বিধায়ক অখিল গিরির রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে এসেছিল। গত ডিসেম্বরে শুভেন্দু অধিকারী এবং তাঁর ভাই সৌমেন্দু অধিকারী বিজেপিতে যোগদানের পরে তা আরও প্রকট হয়েছে। এবার সেই দ্বন্দ্ব গড়িয়েছে পুজোর ময়দানেও।
গত দেড় দশক ধরে কাঁথিতে যে মাঠে ‘অধিকারী পরিবার’ নিয়ন্ত্রিত দুর্গা পুজোর আয়োজন হচ্ছে, এ বছর বিপুল আয়োজন করে সেই মাঠে হচ্ছে গণেশ পুজো। চলবে একমাস ধরে বস্ত্র প্রদর্শনীও। আর এসব আয়োজনের মূল উদ্যোক্তা রাজ্যের মন্ত্রী তথা বিধায়ক অখিল গিরির পুত্র সুপ্রকাশ গিরি। বুধবার থেকে কাঁথি শহরের প্রভাত কুমার কলেজ সংলগ্ন একটি মাঠে ওই গণেশ পুজো শুরু হয়েছে। এ দিন সন্ধ্যায় গণেশ পুজো মণ্ডপের উদ্বোধন করেন তৃণমূলের তারকা বিধায়ক সোহম চক্রবর্তী। ছিলেন অভিনেত্রী তথা কৃষ্ণনগর উত্তর বিধানসভা কেন্দ্রের পরাজিত তৃণমূল প্রার্থী কৌশানী মুখোপাধ্যায়।
স্থানীয় সূত্রের খবর, ২০০৭ সাল থেকে প্রভাত কুমার কলেজের সম্মুখে কেন্দ্রীয় সরকারের লবণ বিভাগের ওই জমিতে দুর্গা পুজো করে একটি ক্লাব। যার সম্পাদক সৌমেন্দু অধিকারী এবং সভাপতি শুভেন্দু অধিকারী। সদস্য রয়েছেন সাংসদ দিব্যেন্দু অধিকারীও। গত কয়েক বছর ধরে ক্লাবটি পুজোর প্রাক্কালে বস্ত্র প্রদর্শনীরও আয়োজন করত। কিন্তু শুভেন্দু এবং সৌমেন্দু বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর নানা প্রশাসনিক পদ থেকে তাঁদের সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
এবার যখন সৌমেন্দু এবং শুভেন্দুর উদ্যোগে দুর্গাপূজার প্রস্তুতি শুরু করেছে ওই ক্লাব, চলছে মণ্ডপ নির্মাণ— তখন সেই নির্মাণ কাঠামোর আগেই হচ্ছে সাড়ম্বরে গণেশ পুজো। চলবে কয়েকদিন ধরে। অভিযোগ, ওই ক্লাবের এর ফলে দুর্গাপুজোর প্রস্তুতি বাধা পাবে। এ ব্যাপারে বিজেপি নেতা তথা দুর্গাপূজো আয়োজনকারী ক্লাবের সম্পাদক সৌমেন্দু বলছেন, ‘‘দেড় দশক ধরে আমরা কেন্দ্র এবং প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে দুর্গা পুজো করি। কিন্তু এবার সেই একই মাঠে নতুন করে গণেশ পুজো করা হচ্ছে। দুর্গা পুজোর আগে হাতে সময় অত্যন্ত কম। গণেশ পুজোর মণ্ডপ যদি দ্রুত না খোলা হয়, তবে সমস্যা হবেই।’’
উল্লেখ্য, সম্প্রতি কাঁথি শহরের চৌরঙ্গী রিক্রিয়েশন ক্লাব নামে একটি সংগঠনের দুর্গাপুজোর অনুমতি দেওয়ার পরেও তা বাতিল করার অভিযোগ উঠেছে সেচ দফতরের বিরুদ্ধে। ওই ক্লাবের সভাপতি হলেন শুভেন্দু। এর পরে খাস অধিকারী পাড়া বলে পরিচিত কলেজ মাঠ সংলগ্ন এলাকায় পুজোর এই ‘রেষারেষি’। ফলে পুজোর আঙ্গিকে হলেও এ লড়াই অধিকারী পরিবার বনাম তৃণমূল বলেই মনে করে রাজনৈতিক মহল।
যে ক্লাব গণেশ পুজো করছে, তাদের দাবি— জমির জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের কাছ থেকে অনুমতি নিয়েছে তারা। এ ব্যাপারে মন্ত্রীপুত্র সুপ্রকাশ গিরি বলেন, ‘‘অনুমতি নিয়েই গণেশ পুজো করা হচ্ছে। বহু জায়গাতেই একই মাঠে একাধিক পুজো হয়। কোথাও সমস্যা কিছুই হয় না। কাঁথিতেও সমস্যা হবে না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy