Advertisement
২৬ নভেম্বর ২০২৪
অধিকারীদের ক্ষমতা কি ‘খর্ব’ হচ্ছে! উঠছে প্রশ্ন
Akhil Giri

অখিলের বাড়িতেও রক্ষী

সোমবার থেকে তৃণমূলের জেলা কো-অর্ডিনেটর অখিলের বাড়িতে তিনজন কনস্টেবল এবং একজন অ্যাসিস্ট্যান্ট সাব-ইনস্পেক্টর পদমর্যাদার পুলিশকে নিরাপত্তার ভার দেওয়া হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রের খবর।

অখিল গিরির কাঁথির বাড়িতে পুলিশ পাহারা। নিজস্ব চিত্র।

অখিল গিরির কাঁথির বাড়িতে পুলিশ পাহারা। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কাঁথি শেষ আপডেট: ০২ ডিসেম্বর ২০২০ ০৫:১১
Share: Save:

মন্ত্রিত্ব পদ ছাড়ার পরে বিধায়ক তথা তৃণমূল নেতা শুভেন্দু অধিকারীকে রাজ্য সরকারের নিরাপত্তারক্ষী ছাড়াই ঘুরতে দেখা গিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে জেলা রাজনীতিতে তাঁর বিরোধী শিবিরের তৃণমূল নেতা তথা আর এক বিধায়ক অখিল গিরির নিরাপত্তা বাড়াল রাজ্য সরকার। সোমবার থেকে অখিলের কাঁথি শহরের আঠিলাগড়ির বাড়িতে চারজন সশস্ত্র নিরাপত্তারক্ষী মোতায়েন রয়েছে বলে পরিবার সূত্রের খবর।

অন্যদিকে, অধিকারী পরিবারের অন্যতম সদস্য সাংসদ তথা তৃণমূলের জেলা সভাপতি শিশির অধিকারীর সাম্প্রতি দাবি করেছেন, জেলায় একাধিক দলীয় কর্মসূচির কথা তিনি জানেন না। স্বাভাবিকভাবেই জেলা তৃণমূলের একাংশের মধ্যে প্রশ্ন জেগেছে যে, তাহলে কি ‘অধিকারী গড়ে’ কোণঠাসা হচ্ছেন অধিকারীরাই! পাশাপাশি, তাঁদের দাবি, অখিলের হাতেই জেলার রাশ দিতে চাইছেন রাজ্য নেতৃত্ব।

গত সপ্তাহে শুভেন্দুর মন্ত্রিত্ব ছাড়ার পরেই রাতারাতি জমজমাট পূর্ব মেদিনীপুরের রাজনীতি। একই দিনে জেলার বিভিন্ন এলাকায় আয়োজিত হয়েছে তৃণমূলের একাধিক কর্মসূচি। কোনটাই হাজির হয়েছেন মন্ত্রী সুজিত বসু, রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। তো কোনও সভায় গিয়েছেন তৃণমূল নেতা ব্রাত্য বসু, নির্বেদ রায়। কিন্তু সে সব কর্মসূচি সম্পর্কে তিনি কিছুই জানেন না দাবি করেছেন শিশিরবাবু। যার অন্য একটি পরিচয়— তিনি শুভেন্দু অধিকারীর বাবা।

গত রবিবার শুভেন্দু মহিষাদলে একটি অরাজৈনিতক সভা করেন। ওই দিনই হলদিয়া, দেশপ্রাণ ব্লক এবং ভগবানপুরের গোয়ালাপুকুরে তণমূল তিনটি বড়সড় কর্মসূচি হয়েছে। গোয়ালাপুকুরের কর্মসূচির ব্যানারে প্রধান বক্তা হিসাবে জেলা তৃণমূল সভাপতি শিশির অধিকারীর নাম লেখা ছিল। কিন্তু সেটি বাদে অন্য কর্মসূচির কোনওটিতেই দেখা যায়নি দলের জেলা সভাপতি শিশিরবাবু এবং সাংসদ দিব্যেন্দু অধিকারীকে। উল্টে ‘অধিকারী পরিবারের’ বিরোধী শিবিরের নেতাদের ওই সব কর্মসূচির নিয়ন্ত্রক হিসাবে থাকতে দেখা গিয়েছে।

এ প্রসঙ্গে শিশিরবাবু বলেন, ‘‘সীমিত সংখ্যক লোকেদের নিয়েই ওই সব কর্মসূচি করা হয়েছে। তাছাড়া এ ধরনের কর্মসূচি সম্পর্কে আমাকে কিছুই জানানো হয়নি।’’ যদিও এ ব্যাপারে শুভেন্দু বিরোধী শিবিরে নেতা তথা রাজ্য যুব তৃণমূলের সহ-সভাপতি সুপ্রকাশ গিরির দাবি, ‘‘ভগবানপুরের সভার জন্য প্রধান বক্তা হিসেবে তো শিশিরবাবুর অনুমতি নেওয়া হয়েছিল। তিনি কী কারণে যাননি, তা বলতে পারব না।’’

এই পরিস্থিতিতে সোমবার থেকে তৃণমূলের জেলা কো-অর্ডিনেটর অখিলের বাড়িতে তিনজন কনস্টেবল এবং একজন অ্যাসিস্ট্যান্ট সাব-ইনস্পেক্টর পদমর্যাদার পুলিশকে নিরাপত্তার ভার দেওয়া হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রের খবর। এ ব্যাপারে অখিল বলেন, ‘‘রাজ্য সরকার আমার বাড়িতে নিরাপত্তারক্ষী মোতায়েন করেছে। কেন এ ধরনের সিদ্ধান্ত সে ব্যাপারে আমি কিছু জানি না।’’

এদিকে, আগামী ৭ ডিসেম্বর পশ্চিম মেদিনীপুরে রাজনৈতিক কর্মসূচি করবেন মমতা। সেখানে পূর্বের বিধায়কদেরও হাজির থাকার কথা। ওই সভার প্রস্তুতি বৈঠক সেরে কলকাতা ফেরার পথে দিন কয়েক আগেই কোলাঘাটে তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি বিধায়ক অখিল গিরি-সহ আরও বেশ কয়েকজন পূর্বের তৃণমূল নেতার সঙ্গে বৈঠক করেছেন। সেখানেও ছিলেন না শিশিরবাবু। ফলে জেলায় তাঁর ক্ষমতা খর্ব করা হচ্ছে কি না, সে নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে দলের অভ্যন্তরেই।

এই পরিস্থিতিতে আগামী ৪ ডিসেম্বর পূর্ব মেদিনীপুর জেলার সভাপতি-সহ অন্য সাংগঠনিক পদাধিকারীদের নিয়ে ভিডিয়ো কনফারেন্সে বৈঠক করার কথা রয়েছে তৃণমূল নেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। সেদিনের বৈঠকের পূর্ব মেদিনীপুরের দল পরিচালনায় তৃণমূল নেত্রী কী নির্দেশ দেন, সে দিকেই এখন নজর জেলার শাসক দলের নেতা-কর্মীদের।

অন্য বিষয়গুলি:

Akhil Giri TMC Suvendu Adhikari Police guard
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy