যত্রতত্র ছড়িয়ে প্লাস্টিক, বোতল। বগুড়ান জলপাই সৈকতে। নিজস্ব চিত্র।
করোনার ভয় মানুষকে ঘরবন্দি করেছিল। প্রশাসনের লকডাউনেও প্রায় চার মাস বাইরে হতে পারেননি আমজনতা। তাতে পরিবেশ দূষণের মাত্রা কমে গিয়েছিল এক ধাক্কায়।
কিন্তু লকডাউন শিথিল হতেই স্বমহিমায় আমজনতা। ঘুরতেও যাচ্ছেন দেদার। তাঁদের সচেতনতার অভাবে ফের বাড়তে শুরু করেছে দূষণ!
রাজ্যে প্রাকৃতিক উপায়ে তৈরি একমাত্র সমুদ্র সৈকত রয়েছে কাঁথি শহরের অদূরে বগুড়ান জলপাইয়ে। দিগন্ত বিস্তৃত সৈকতে আগে হামেশাই লেগে থাকত পর্যটক এবং পিকনিক দলের ভিড়। লকডাউন শিথিল পর্বে সপ্তাহান্তে এখানে ঘুরতে আসছেন হাতে গোনা কিছু পর্যটক। তবে স্বাধীনতা দিবসে এই সৈকতে হাজির হয়েছিল একাধিক পিকনিক দল। তাদের দাপটে সৈকতে যে হারে আবর্জনা জমা হয়েছে, তাতে সৈকত ফের বিপন্ন হতে বসেছে বলে দাবি করছেন পরিবেশ কর্মীরা।
স্থানীয় সূত্রের খবর, গত শনিবার স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে বহু পর্যটক বগুড়ান জলপাইয়ে গিয়েছিলেন পিকনিক করতে। অভিযোগ, পিকনিকের পরে তাঁরা আবর্জনা সৈকতেই ফেলে রেখে চলে গিয়েছেন। একই সঙ্গে সৈকতে মোটরবাইক এবং প্রাইভেট গাড়ি নিয়ে দাপিয়ে বেড়িয়েছেন তাঁরা। রবীন্দ্রনাথ ভুঁইয়া নামে এক এলাকাবাসী বলেন, ‘‘এমনিতেই বিকেলে কাঁথি শহর এবং পার্শ্ববর্তী এলাকা থেকে স্থানীয়েরা গাড়ি নিয়ে ঘুরতে আসেন। আর ছুটির দিন হলে তো বলারই নেই। স্বাধীনতা দিবসেও সৈকতে আবর্জনা ফেলেছেন তাঁরা। মদ্যপান করে বোতল ফেলে দিয়েছেন।’’
স্থানীয়দের দাবি, এক সময় মন্দারমনির মত বগুড়ান জলপাইয়েও প্রচুর লাল কাঁকড়া দেখা যেত। কিন্তু বছর দুয়েক ধরে আর লাল কাঁকড়া দেখা মেলে না। পরিবেশ কর্মী শান্তনু চক্রবর্তীর দাবি, ‘‘সৈকতে ভারী গাড়ি চলাচল করলে উপরের অংশের বালি বসে যায়। এবং তার তলদেশ থেকে কাদামাটি বেরিয়ে পড়ে। এর ফলে ওই অংশে বসবাসকারী প্রাণী ও লতানো উদ্ভিদ অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে পারে না।’’
দিঘায় সমুদ্রের ধারে কংক্রিটের গার্ডওয়াল দিয়ে ঘিরে দেওয়া হয়েছে। মন্দারমণি, তাজপুরে সৈকতের ধারেও একের পর এক নির্মাণ গজিয়ে উঠছে। এ ভাবে নির্মাণ চলতে থাকলে সমুদ্র একটু একটু করে জনবসতির দিকে এগিয়ে আসতে পারে বলেই আশঙ্কা পরিবেশবীদদের।
অত্যন্ত প্রান্তিক এলাকায় পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে ওঠায় এখানে প্রশাসনিক নজরদারি নেই বললেই চলে। এর ফলে পর্যটকেরা অবাধে সৈকতের ক্ষতি করছে বলে অভিযোগ স্থানীয় মৎস্যজীবীদেরও। এ প্রসঙ্গে কাঁথি-১ এর বিডিও লিপন তালুকদার বলেন, ‘‘ওই সৈকত মাঝেমধ্যে প্রশাসনের উদ্যোগে পরিষ্কার করা হয়। তবে সৈকতে যাতে কেউ গাড়ি নিয়ে ঘোরাফেরা না করেন বা ইচ্ছাকৃতভাবে আবর্জনা না ফেলেন, সে জন্য প্রশাসনিকভাবে একটি পরিকল্পনা করা হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy