জাহাজ দেখার জন্য বুধবার সকাল থেকে হলদিয়া বন্দরের গেটের সামনে ভিড় করেন কয়েক হাজার দর্শনার্থী। কিন্তু শেষ পর্যম্ত হতাশ হতে হয়েছে তাঁদের। ছবি: আরিফ ইকবাল খান
শিল্পনগরীতে বিশ্বকর্মা পুজোর সময় লাখো মানুষের ঢল নামে। এখানে পুজো দেখতে আশপাশের জেলা থেকেও মানুষ ভিড় করেন। পুজোর পাশাপাশি অন্যতম আকর্ষণ থাকে হলদিয়া বন্দর দর্শন। বুধবারও তাই বন্দরে জাহাজ দেখতে ভিড় করেছিলেন প্রচুর মানুষ। কিন্তু বন্দর কর্তৃপক্ষ ভিতরে ঢোকার অনুমতি না দেওয়ায় ভোগান্তির শিকার হতে হল তাঁদের। বেলা একটা পর্যন্ত কযেক হাজার মানুষ অপেক্ষা করে পরে ফিরে যান।
এদিন ময়না থেকে জাহাজ দেখতে এসেছিলেন তরুণী পুতুল দাস। তিনি জানান, হলদিয়ায় জমকালো বিশ্বকর্মা পুজো দেখতে আসতেই হয়। সেই সঙ্গে বন্দরে জাহাজ দেখার আগ্রহও ছিল। শুনেছিলাম ওরা দেখতে দেয়। কিন্তু এ দিন চার ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়েও দেখতে পাইনি। পরে জানলাম দেখতে দেওয়া হবে না।’’ আসানসোল থেকে পরিবার নিয়ে এসেছিলেন সুজিত বসু। তিনি বলেন, ‘‘দুপুর থেকে ঠায় লাইনে রোদে দাঁড়িয়ে আছি মাকে জাহাজ দেখাব বলে। কিন্তু পরে শুনি দেখতে দেওয়া হবে না। এটা পুজোর আগেই বন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দিতে পারতেন তা হলে এ ভাবে হয়রনা হতে হত না।’’ বন্দরে জাহাজ দেখতে ভিড় করা মানুষদের সকলেই এ দিন হয়রানির জন্য বন্দর কর্তৃপক্ষকে দোষারোপ করেছেন।
বন্দরে ঢুকতে না দেওয়ার ব্যাপারে হলদিয়া বন্দরের প্রশাসনিক কর্তা অমল দত্ত বলেন, ‘‘দেশের সমস্ত বন্দরে লাল সতর্কতা (রেড অ্যালার্ট) জারি রয়েছে। তাই এ বার আমরা কাউকেই ঢুকতে দিতে পারছি না।’’ কিন্তু আগে থেকে তাঁরা তা জানালেন না কেন। কেন হয়রানিতে পড়তে হল সাধারণ মানুষকে, সে প্রশ্নের উত্তর মেলেনি তাঁর কাছে।
হলদিয়ার এসডিপিও তন্ময় মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বিশ্বকর্মা পুজো দেখার পাশাপাশি হাজার হাজার মানুষ বন্দর দেখতে আসেন। বন্দর কর্তৃপক্ষকে সে ব্যাপারে জানানোও হয়েছিল। তবে বন্দরের নিজস্ব প্রশাসন রয়েছে। সেখানে আমরা হস্তক্ষেপ করতে পারি না। কিন্তু আইনশৃঙ্খলার যাতে অবনতি না হয় সে বিষয়টি নিশ্চিত করা প্রয়োজন।’’ পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এতদূর এসে বন্দরে ঢুকতে না পারায় মানুষের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশে গোলমালের সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যায় না। সেদিক চিন্তা করে বন্দর কর্তৃপক্ষ দর্শনার্থীদের ঢুকতে না দেওয়ার জন্য আগে থেকে ঘোষণা করতে পারতেন। তাতে মানুষের হয়রানিও এড়ানো যেত।
এদিন হলদিয়া রিফাইনারির কনট্রাক্টরস, শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের পুজোর উদ্বোধন করেন পরিবহণ মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী। জোর দেন পরিবেশ সচেতনতায়। এবার পুজোর থিম জাহাজ। উৎসব মঞ্চ থেকে দুঃস্থদের ব্যাটারি চালিত ট্রাই সাইকেল দেওয়া হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy