Advertisement
০৬ অক্টোবর ২০২৪
Patashpur

স্রেফ বিষক্রিয়ায় মৃত্যু? পটাশপুরে মৃতার ময়নাতদন্তে খুশি নয় পরিবার, দেহ নিতে অস্বীকার করলেন ছেলে

মৃতা মহিলার পাশাপাশি গণপিটুনিতে মৃত ব্যক্তির পরিবারের তরফেও একটি অভিযোগ দায়ের হয়েছে। দু’টি অভিযোগেরই আলাদা করে তদন্ত হচ্ছে। তবে এখনও পর্যন্ত এই ঘটনায় কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি।

তাম্রলিপ্ত জেলা সদর হাসপাতালের শবাগার, এখানেই ময়নাতদন্ত হয়েছে পটাশপুরের মৃত মহিলার।

তাম্রলিপ্ত জেলা সদর হাসপাতালের শবাগার, এখানেই ময়নাতদন্ত হয়েছে পটাশপুরের মৃত মহিলার। —নিজস্ব চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
পটাশপুর শেষ আপডেট: ০৬ অক্টোবর ২০২৪ ২১:৫৯
Share: Save:

পটাশপুরে মৃতার দেহের ময়নাতদন্তে খুশি নয় পরিবার। রবিবার ময়নাতদন্তের পর দেহ নিতে অস্বীকার করলেন মৃতার ছেলে-সহ পরিবারের সদস্যেরা। সোমবার এ নিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হওয়ারও হুমকি দিয়েছেন তাঁরা।

রবিবার তাম্রলিপ্ত মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের মর্গে পটাশপুরের মৃতার দেহের ময়না তদন্ত হয়। উপস্থিত ছিলেন পটাশপুর থানার তদন্তকারী আধিকারিক। উপস্থিত ছিলেন মহিলার ছেলে এবং অন্য পরিজনেরা। পুলিশ সূত্রে খবর, ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টে জানা যায়, বিষক্রিয়ায় মৃত্যু হয়েছে ওই মহিলার। কিন্তু মৃতার পরিবার এই রিপোর্টে খুশি নয়। পরিবারের দাবি, প্রয়োজনে আদালতের হস্তক্ষেপে তমলুকের বাইরে অন্য কোনও বড় হাসপাতালে ময়নাতদন্ত করতে হবে।

মৃতার ছেলে বলছেন, ‘‘ময়নাতদন্তের পর পুলিশ জানিয়েছে, বিষক্রিয়ার জেরেই মায়ের মৃত্যু হয়েছে। তাঁর শরীরে কোনও আঘাতের চিহ্ন কিংবা ধর্ষণের মতো ঘটনার প্রমাণ মেলেনি। এর পরেই পুলিশ মৃতদেহটিকে নিয়ে যাওয়ার জন্য আমাদের জানায়। আমরা দেহ নিতে অস্বীকার করেছি।” মৃতার ছেলে আরও বলেন, “ময়না তদন্তের রিপোর্টে আমরা মোটেই খুশি নই। তাই দেহ না নিয়েই ফিরে যাচ্ছি। নতুন করে ময়নাতদন্তের দাবি নিয়ে সোমবার আমরা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হব। আদালত যা রায় দেবে সেই মতোই কাজ হবে।”

মৃতার পরিজনদের মতে, ওই মহিলার উপর পাশবিক অত্যাচার হয়েছে। তাঁর বুকে, পেটে আঘাত করা হয়েছে। যে সময় তাঁর দেহটি উদ্ধার করা হয়, তখন তাঁর শরীরে পোশাকের চিহ্নমাত্র ছিল না। অথচ ময়নাতদন্তের রিপোর্ট বলছে, বিষক্রিয়ায় স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে। শরীরেও কোনও আঘাতের চিহ্ন নেই বলা হয়েছে। এর পরেই নতুন করে মৃতদেহের ময়নাতদন্তের দাবি জানিয়েছে মৃতার পরিবার।

রবিবারই পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পুলিশের তরফে সাংবাদিক বৈঠক করে বিস্তারিত তথ্য জানিয়েছেন কাঁথির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গ্রামীণ) শুভেন্দ্র কুমার। তিনি বলেন, “আজ সকালে পটাশপুর থানা এলাকায় এক মহিলার মৃত্যুসংবাদ প্রকাশ্যে আসে। প্রাথমিক তদন্তে আমরা জানতে পারি, গ্রামেরই এক ব্যক্তির সঙ্গে এক মহিলার অবৈধ সম্পর্ক ছিল। সেই সম্পর্কের কথা জেনে ফেলার জন্যই ওই মহিলাকে গত শুক্রবার মারধর করে কীটনাশক খাইয়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে। আজ মহিলার মৃত্যুর খবর গ্রামে পৌঁছতেই এলাকাবাসীরা ক্ষিপ্ত হয়ে ব্যক্তিকে মারধর করেন। গণপিটুনিতে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। মৃতার পরিবারের তরফে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়েছে। যেখানে অভিযুক্ত-সহ আরও এক মহিলার বিরুদ্ধে মারধর করে বিষ খাইয়ে দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে। তবে অভিযোগপত্রে কোথাও ধর্ষণের মতো কোনও বিষয়ের উল্লেখ নেই।’’ পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃতা মহিলার পাশাপাশি গণপিটুনিতে মৃত ব্যক্তির পরিবারের তরফেও একটি অভিযোগ দায়ের হয়েছে। দু’টি অভিযোগেরই আলাদা করে তদন্ত হচ্ছে। তবে এখনও পর্যন্ত এই ঘটনায় কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Patashpur Rape and Murder post mortem report
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE