আজ, থেকে শুরু হচ্ছে কলেজে অনলাইন ভর্তি। শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি মেদিনীপুর কে ডি কলেজে। ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল।
কলেজে গিয়ে লাইনে দাঁড়িয়ে ফর্ম তোলা এবং পরে তা পূরণ করে জমা দেওয়া— এই ঝক্কির দিন শেষ হতে চলেছে। এ বার জেলার কলেজেও ভর্তি হবে অনলাইনে। অনলাইনেই ফর্ম পূরণ করা যাবে। নির্দিষ্ট ফি জমা দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। পরে মেধা-তালিকা অনুযায়ী ছাত্রছাত্রীরা ভর্তি হতে পারবেন। ইতিমধ্যে এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়ে কলেজগুলোকে নির্দেশ দিয়েছেন বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
আজ, সোমবার থেকেই শুরু হচ্ছে অনলাইনে ভর্তির প্রক্রিয়া। ১-১০ জুন ভর্তির জন্য অনলাইনে ফর্ম পূরণ করে জমা দিতে পারবেন প্রার্থীরা। বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য রঞ্জন চক্রবর্তী বলেন, “এ বার অনলাইনে কলেজে ভর্তি প্রক্রিয়া চলবে। কলেজগুলো প্রয়োজনীয় পরিকাঠামোও তৈরি করেছে।’’
গত শিক্ষাবর্ষ থেকেই অনলাইনে ভর্তি শুরুর কথা ছিল। গত বছর এপ্রিলে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এ নিয়ে সিদ্ধান্তও নিয়েছিলেন। অবশ্য জুনে সেই সিদ্ধান্ত বদলে যায়। জানিয়ে দেওয়া হয়, অনলাইনে ভর্তি প্রক্রিয়া শুরু করা বাধ্যতামূলক নয়। এ বার অবশ্য বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন প্রায় সব কলেজেই অনলাইনে ভর্তি প্রক্রিয়া চলবে। আগে কলেজে ভর্তি প্রক্রিয়া শুরু হতেই অস্বচ্ছতার অভিযোগ উঠত। ক্যাম্পাসে দাপাদাপি শুরু করত ক্ষমতাসীন ছাত্র সংগঠন। নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক কলেজ শিক্ষকের কথায়, “ভর্তি প্রক্রিয়া শুরুর পরই অভিযোগ উঠতে থাকে। কলেজেও অনেক দাবিপত্র-অভিযোগপত্র জমা পড়ে। ছাত্র ভর্তিতে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ ঠেকিয়ে স্বচ্ছতা বজায় রাখতে অনলাইন চালু জরুরি ছিল।”
নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক টিচার ইন-চার্জের কথায়, “ভর্তির সময় ছাত্র সংসদ একটু তত্পর হয়ই। সংসদের অতি-তত্পরতা ঠেকানোর জন্য অনলাইন প্রক্রিয়া চালুই উপযুক্ত দাওয়াই হতে পারে। বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্দেশ মতো আমরা আগে থেকেই পরিকাঠামো তৈরির কাজ শুরু করে দিয়েছিলাম। এ বার অনলাইনেই ভর্তি হবে।’’
কেন গত বছর সিদ্ধান্ত নিয়েও পিছিয়ে আসতে হয়েছিল?
বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সূত্রের দাবি, বেশি এগোনো নয়, বেশি পিছনোও নয়, রাজ্য সরকারের সঙ্গে পায়ে পা মিলিয়ে চলতেই আগের সিদ্ধান্ত থেকে পিছিয়ে এসেছিলেন কর্তৃপক্ষ। কারণ, সেই সময় সরকারের মনোভাবই ছিল, যে সব কলেজ পারবে তারা করবে, যারা পারবে না তারা করবে না। অনলাইনে ভর্তি বাধ্যতামূলক নয়। উচ্চমাধ্যমিক উত্তীর্ণেরাও মনে করছে, এ বার ভর্তি ঘিরে ঝক্কির দিন বোধহয় শেষ হতে চলেছে। কারণ, কলেজ থেকে ফর্ম তোলা এবং পরে তা পূরণ করে জমা দেওয়া মানে তো নানা সমস্যা। সকাল থেকে ফর্ম তোলার লাইনে দাঁড়ানো। অনেক সময় ফর্ম পেতে পেতে দুপুর গড়িয়ে যাওয়া। অনলাইন চালু হলে অনেক কলেজে আবেদনের জন্য বাড়তি খরচও হবে না। অনলাইনে ভর্তির প্রক্রিয়া চালুর ফলে ভর্তির ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা আসবে বলেই মনে করছে বিভিন্ন মহল। কারণ, ভর্তির প্রক্রিয়া শুরু পর থেকে বিভিন্ন কলেজে নানা অভিযোগ ওঠে। কোথাও মেধা- তালিকার বাইরে গিয়ে ছাত্রছাত্রীদের ভর্তি করা হয় বলেও অভিযোগ ওঠে। কর্তৃপক্ষের পাশাপাশি অভিযোগ ওঠে মূলত শাসক দলের ছাত্র সংগঠনের বিরুদ্ধে। এ নিয়ে সরব হতে দেখা যায় বিরোধী সংগঠনগুলোকে। অনলাইনে ভর্তির প্রক্রিয়া চালু হলে এমন অভিযোগ ওঠার সম্ভাবনা কমে যাবে। বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার তথা ছাত্রকল্যাণ বিভাগের বিভাগীয় প্রধান জয়ন্তকিশোর নন্দী বলেন, “এ বার অনলাইনে কলেজে ভর্তি প্রক্রিয়া চলবে। এ জন্য কলেজগুলোকে প্রয়োজনীয় নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। ওয়েবসাইটে নোটিস আপলোড করা হয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy