পরিদর্শন: নতুন ওয়ার্ড ঘুরে দেখছেন জেলাশাসক। নিজস্ব চিত্র
গেল অক্টোবরে পরামর্শটা দিয়েছিলেন মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী। তিন মাসের মাথায় শয্যা বাড়ল মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে।
বৃহস্পতিবার বড় আকারে পর্যবেক্ষণ ওয়ার্ড খোলা হয়েছে এই হাসপাতালে। নতুন করে ৭০টি শয্যা চালু হয়েছে এই ওয়ার্ডেই। এর মধ্যে ৪০টি শয্যা পুরুষদের জন্য বরাদ্দ, ২৪টি মহিলাদের জন্য আর ৬টি শয্যা থাকছে শিশুদের জন্য। সূত্রের খবর, পর্যবেক্ষণ ওয়ার্ডে আরও ৩০টি শয্যা চালুর পরিকল্পনা রয়েছে। শীঘ্রই তা কার্যকর হবে।
গত অক্টোবরের এক সন্ধ্যায় আচমকা মেদিনীপুর মেডিক্যালে এসেছিলেন শুভেন্দু। কেশপুরে রাজনৈতিক সংঘর্ষে জখম তৃণমূলের কয়েকজন কর্মীতে দেখতেই এসেছিলেন শুভেন্দু। জখমরা কেউই শয্যা পাননি। দলের কর্মীদের মেঝেতে পড়ে থাকতে দেখে অসন্তুষ্ট হন শুভেন্দু। হাসপাতালের ওয়ার্ডে দাঁড়িয়েই ফোনে কথা বলেন জেলাশাসক তথা হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান রশ্মি কমলের সঙ্গে। সে দিন শুভেন্দু বলেছিলেন, ‘‘আপনিই তো রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান। হাসপাতালটা একটু দেখুন। রোগীদের তো মেঝেতে থাকতে হচ্ছে।’’ তখনই দ্রুত হাসপাতালে শয্যা বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছিলেন পরিবহণমন্ত্রী।
জানা যাচ্ছে, মাস খানেক আগে মেদিনীপুর মেডিক্যালে রোগীকল্যাণ সমিতির বৈঠক হয়। সেখানেই শয্যা বাড়াতে বড় আকারে পর্যবেক্ষণ ওয়ার্ড খোলার সিদ্ধান্ত হয়। সেই সিদ্ধান্তই কার্যকর হল এ দিন। নতুন ওয়ার্ডের উদ্বোধনে এসে জেলাশাসক রশ্মি কমল বলেন, ‘‘হাসপাতালের রোগীকল্যাণ সমিতির বৈঠকে এ নিয়ে আলোচনা করেছিলাম। অভিযোগও পাচ্ছিলাম যে রোগীদের অনেকে শয্যা পাচ্ছেন না। তাঁদের মেঝেতে থাকতে হচ্ছে। আমরা চাইছি না একজন রোগীও মেঝেতে থাকুন।’’ আগামী দিনে আরও শয্যা বাড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে? জেলাশাসক বলেন, ‘‘আমরা আরও জায়গা খুঁজছি। একজন রোগীও যাতে মেঝেতে না থাকেন কিংবা একই শয্যায় দু’জন রোগী না থাকেন, সেই ব্যবস্থাই করতে চাইছি আমরা।’’ হাসপাতাল সূত্রে খবর, অপেক্ষাকৃত কম অসুস্থ রোগীদের এ বার জরুরি বিভাগ থেকে সরাসরি পর্যবেক্ষণ ওয়ার্ডে পাঠানো হবে। পরে প্রয়োজন হলে তাঁদের অন্য নির্দিষ্ট ওয়ার্ডে স্থানান্তর করা হবে।
পশ্চিম মেদিনীপুরের সব থেকে বড় সরকারি হাসপাতাল এই মেদিনীপুর মেডিক্যাল। সূত্রের খবর, এখন হাসপাতালে ১,১৩৭টি শয্যা রয়েছে। এতদিন হাসপাতালে বড় আকারে পর্যবেক্ষণ ওয়ার্ড ছিল না। জরুরি বিভাগের পাশে এক ঘরে নামকাওয়াস্তে পর্যবেক্ষণ ওয়ার্ডে গোটা কুড়ি শয্যা ছিল। এমসিআই-এর পরিদর্শনের সময়ে তড়িঘড়ি ওই ওয়ার্ড খোলা হয়েছিল। গত কয়েক বছরে মেদিনীপুর মেডিক্যালেও ঝকঝকে নীল- সাদা একাধিক বহুতল তৈরি হয়েছে। তবে চাহিদার অনুপাতে শয্যার মতো নূন্যতম পরিকাঠামো এখানে অনেক কম বলেই অভিযোগ। এই হাসপাতালে দিনে গড়ে দেড় হাজারেরও বেশি রোগী ভর্তি থাকেন। হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ডের রোগীদেরই সংক্রমণের ঝুঁকি নিয়ে শৌচালয়ের সামনে বা খোলা বারান্দার মেঝেতে থাকতে বাধ্য হতে হয়। শয্যা নিয়ে বিভিন্ন রোগী এবং তাঁদের পরিজনদের মধ্যে ঝগড়া, হাতাহাতির ঘটনাও ঘটে। হাসপাতালে ন্যূনতম পরিষেবা না পাওয়ার ক্ষোভ কখনও কখনও চিকিৎসক এবং নার্সদের উপরে এসেও পড়ে।
এ দিন হাসপাতাল ছাড়ার আগে জেলাশাসক বলে যান, ‘‘অসংখ্য মানুষ এই হাসপাতালে স্বাস্থ্য পরিষেবা পান। হাসপাতালের পরিকাঠামো আরও উন্নত করতে আমরা চেষ্টা করছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy