শিক্ষামন্ত্রীর আশ্বাসে মাধ্যমিক স্তরের অনুমোদনের জন্য নেতাই স্কুলের নথিপত্র গেল বিকাশ ভবনে। —ফাইল চিত্র।
আশ্বাস দিয়ে গিয়েছিলেন খোদ শিক্ষামন্ত্রী। সেই মতোই মাধ্যমিক স্তরের অনুমোদনের জন্য নেতাই স্কুলের নথিপত্র গেল বিকাশ ভবনে।
শিক্ষা দফতর সূত্রের খবর, শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের নির্দেশে ঝাড়গ্রামের জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শকের কাছে স্কুলের বিস্তারিত তথ্য-সহ রিপোর্ট তলব করা হয়েছিল। জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শকের সুপারিশ-সহ ফাইলটি শুক্রবার বিকাশভবনে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। মাঝে তিনদিন ছুটি। ফলে, আগামী মঙ্গলবার ফাইল স্কুলশিক্ষা দফতরের কমিশনারের কাছে পৌঁছেবে। প্রয়োজনীয় অনুমোদন চলতি মাসের মধ্যেই মিলে যাবে বলে আশা করছে জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শকের দফতর। ঝাড়গ্রাম জলা বিদ্যালয় পরিদর্শক (মাধ্যমিক) লক্ষ্মীধর দাস মানছেন, ‘‘নেতাই জুনিয়র হাইস্কুলটিকে মাধ্যমিক স্তরের অনুমোদন দেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় নথিপত্র-সহ ফাইলটি বিকাশ ভবনে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।’’
গত বুধবার রামগড়ে একটি সরকারি অনুষ্ঠানে এসেছিলেন পার্থ। সেখানেই স্কুলের টিচার-ইনচার্জ দেবাশিস গিরি এবং নেতাই শহিদ স্মৃতিরক্ষা কমিটির সভাপতি দ্বারকানাথ পন্ডা নেতাই স্কুলের মাধ্যমিকে উন্নীত না হওয়ার বিষয়টি শিক্ষামন্ত্রীর নজরে আনেন। শিক্ষামন্ত্রী ওই দিনই টিচার-ইনচার্জকে জানিয়ে দেন, মাধ্যমিকস্তরের অনুমোদন দিয়ে দেওয়া হল। স্কুল কর্তৃপক্ষ নবম শ্রেণিতে পড়ুয়া ভর্তি নিতে পারেন। এরপর বৃহস্পতিবারই জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শকের দফতর থেকে স্কুলের যাবতীয় তথ্য সংগ্রহ করা হয়। শুক্রবার টিচার-ইনচার্জের মাধ্যমে ফাইলটি বিকাশ ভবনে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। শিক্ষামন্ত্রী স্কুল কর্তৃপক্ষকে মৌখিক মির্দেশ দিয়ে নবম শ্রেণিতে পড়ুয়া ভর্তি করতে বলেছেন। নেতাই স্কুলটি পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত।
বাম আমলে ২০০৮ সালে স্থাপিত হয় নেতাই জুনিয়র হাইস্কুল। শুরুতে নেতাই প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবনে পঠনপাঠন শুরু হয়েছিল। ২০১০ সালের অগস্টে নতুন ভবনে স্কুলটি স্থানান্তরিত হয়। এসএসসির মাধ্যমে শিক্ষক নিয়োগ করা হয়। এখন টিচার ইনচার্জ দেবাশিস গিরি-সহ শিক্ষক রয়েছেন চারজন, শিক্ষা কর্মী একজন। পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণিতে ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা ২২৭ জন। পড়ুয়াদের বেশিরভাগ আদিবাসী ও অনগ্রসর সম্প্রদায়ের। টিচার-ইনচার্জ দেবাশিস জানান, স্কুলটি মাধ্যমিকস্তরে উন্নীত করার জন্য গত দু’বছর ধরে শিক্ষা দফতর সহ প্রশাসনের বিভিন্ন মহলে আবেদন নিবেদন করা হয়েছিল।
২০১১ সালের ৭ জানুয়ারি সিপিএমের শিবির থেকে নিরীহ গ্রামবাসীদের লক্ষ করে গুলি চালানোর অভিযোগ ওঠে। ওই ঘটনায় চার মহিলা-সহ ৯ জন গ্রামবাসীর মৃত্যু হয়। আহত হন ২৮ জন। তৃণমূলের সরকার নেতাইয়ে নিহতদের পরিবারকে ও আহতদের আর্থিক ক্ষতিপূরণ দেয়। নিহতদের পরিবার পিছু একজনকে চাকরিও দেওয়া হয়েছে। রাজ্যে পালাবদলের পরে নেতাই গ্রামের ছবিটাও পাল্টেছে। গ্রামে পিচ রাস্তা হয়েছে। এ বার গ্রামের স্কুলও মাধ্যমিক হওয়ার পথে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy