Advertisement
E-Paper

হাতি উৎসাহে নাভিশ্বাস, কড়া পদক্ষেপ কবে

হাতিকে উত্ত্যক্ত করার ঘটনায় গত বছর দুই ইউটিউবারের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেছিল বন দফতর। তার পরই ওই ইউটিউবাররা গা ঢাকা দিয়েছিলেন কিছুদিন।

জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ছবি তোলা। সাঁকরাইলের কাটনিমাড়ো জঙ্গলে।

জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ছবি তোলা। সাঁকরাইলের কাটনিমাড়ো জঙ্গলে। নিজস্ব চিত্র।

রঞ্জন পাল

শেষ আপডেট: ০২ এপ্রিল ২০২৫ ০৯:০৪
Share
Save

হাতি এলাকায় এলে তাকে দেখতে ভিড় জমে জনতার। তাদের উৎসাহে লাগাম পরানো যে বিষম বিষয় তা হাড়ে হাড়ে জানেন বনকর্মীরা। জনতার ভিড়েই মিশে থাকেন ‘ইউটিউবার’রা। তাঁদের উৎসাহ তো আরও কয়েকগুণ বেশি। হাতি এলেই ছুটে যান তাঁরা। ছবি, ভিডিয়ো তুলে পোস্ট করেন সমাজমাধ্যমে। ‘লাইক’, ‘কমেন্ট’ লাগসই হলে লক্ষ্মীলাভও হয়। কিন্তু এর ফলে আরও কঠিন হয় বন দফতরের কাজ। এখানেই প্রশ্ন উঠছে, জনতার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া না হয় কঠিন কাজ। কিন্তু জনা কয়েক ইউটিউবারদের তো চিহ্নিত করাই যায়। তাঁদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব। কিন্তু আদৌ কি তা করে বন দফতর।

হাতিকে উত্ত্যক্ত করার ঘটনায় গত বছর দুই ইউটিউবারের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেছিল বন দফতর। তার পরই ওই ইউটিউবাররা গা ঢাকা দিয়েছিলেন কিছুদিন। তাঁরা অ্যাকাউন্ট ডিলিট করতেও বাধ্য হয়েছিলেন। ঘটনার বছর ঘুরতে না ঘুরতেই ফের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে হাতির ছবি ও ভিডিয়ো তোলার অভিযোগ উঠছে।

বন দফতর সূত্রে খবর, মঙ্গলবার সাঁকরাইল ব্লকের বারডাঙা জঙ্গলে প্রায় ৬০টি হাতির দল ছিল। এই এলাকায় খড়গপুর ডিভিশনের কলাইকুন্ডা রেঞ্জের অধীনে। বারডাঙায় গত তিনদিন ধরে রয়েছে হাতির দলটি। সাধারণত দিনের বেলায় জঙ্গলে ঘুমায় হাতির দল। বিকেলের পর থেকেই চারিদিকে খাবারের সন্ধানে বের হয়। পশুপ্রেমীদের একাংশ বলছেন, দিনভর হাতির দলকে উত্ত্যক্ত করার ফলে তারা জঙ্গলে বিশ্রাম পাচ্ছে না। যার ফলে রাতে এলাকা ছাড়তে চাইছে না হাতির দল। সূত্রের খবর, ঝাড়গ্রামের গজাশিমূল এলাকার কিছু ইউটিউবার বারডাঙা এলাকায় হাতি এলেই জঙ্গলে ছুটে যান। হাতিকে দিনভর উত্ত্যক্ত করে হাতির ছবি ও ভিডিয়ো তোলেন। সেই ভিডিয়ো সমাজমাধ্যমে পোস্ট করেন তাঁরা।

হাতির কাছে গিয়ে ছবি তুলতে মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে ঝাড়গ্রাম জেলায়। গত কয়েকবছরে এক পর্যটক, মেদিনীপুরের এক পুরপ্রতিনিধি-সহ মোট তিনজন হাতির ছবি তুলতে গিয়ে মারা গিয়েছিলেন। বারডাঙা এলাকায় হাতিকে উত্ত্যক্ত করার পাশাপাশি বন দফতরকে হেনস্থা করার অভিযোগ উঠেছে বার বার। গত বছর বিট অফিসারকে মারধর করার অভিযোগ উঠেছিল। ওই ঘটনায় একজনকে গ্রেফতার করেছিল। বছর খানেক আগে ওই এলাকায় বন কর্মীদের ক্লাবে ঢুকিয়ে তালা লাগিয়েছিলেন স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ। আবার চুনাপাড়া এলাকায় হাতি তাড়ানোর সদস্যদের হেনস্থা করার অভিযোগ উঠেছিল।

বনকর্মীদের হেনস্থা বা মারধরের ঘটনায় গ্রেফতার হওয়ার নজির রয়েছে। তবে হাতিকে উত্ত্যক্ত করার ঘটনায় মামলা রুজু হলেও এখনও পর্যন্ত জেলায় কেউ গ্রেফতার হয়নি। এখানেই উঠছে প্রশ্ন। এই ধরনের ক্ষেত্রে কেন শুধু মামলা করেই ক্ষান্ত থাকছে বন দফতর। ইউটিউবারদের অ্যাকাউন্ট ডিলিট করাই কি যথেষ্ট পদক্ষেপ? জেলার এক বন আধিকারিক জানাচ্ছেন, কড়া পদক্ষেপ নিলে অনেক সময় নানা মহল থেকে চাপ আসে।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

sankrail

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}