গত ফেব্রুয়ারিতে সরকার এই জমি নিলামে দেওয়ার পরিকল্পনা করে। কয়েক দিন ধরে বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন জমি দখল নিয়ে লাগাতার আন্দোলনে নেমেছিলেন পড়ুয়ারা। পুলিশের সঙ্গে পড়ুয়াদের সংঘাতের জেরে উত্তপ্ত হয় হায়দরাবাদ বিশ্ববিদ্যালয়। এর পর ক্যাম্পাসের ভিতরে ও বাইরে মোতায়েন করা হয় বিপুল সংখ্যক পুলিশ। অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে গোটা এলাকা।
বিভিন্ন সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে গাছ কেটে ফেলার ধু-ধু করা জমির ছবি ও ভিডিয়ো। ময়ূরের আর্তনাদ, ঘরছাড়া হরিণ, শয়ে শয়ে পাখি, মৃত হরিণশাবককে পড়ে থাকতে দেখে শিউরে উঠছে মানুষ। বন ও বন্যপ্রাণ ধ্বংসের সেই ছবি নজর এড়ায়নি দেশের সর্বোচ্চ আদালতের। নড়েচ়ড়ে বসেছে সুপ্রিম কোর্ট। সরকারি এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে স্থগিতাদেশ জারি করেছে শীর্ষ আদালত। এর আগে তেলঙ্গানা হাইকোর্টও গাছ কাটা এবং জমি দখলে স্থগিতাদেশ জারি করেছিল।
বৃহস্পতিবার, ৩ এপ্রিল সুপ্রিম কোর্ট সরকারকে এই বনাঞ্চলে কোনও রকম গাছ কাটা বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছে। বিচারপতি বি আর গবই এবং এজি মসীহের বেঞ্চ গাছের সুরক্ষা দেওয়া ছাড়া সেখানে যে কোনও ধরনের সরকারি কার্যকলাপের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। তেলঙ্গানার কংগ্রেস সরকারকে এই ৪০০ একর জমিতে যাবতীয় কার্যকলাপ বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছে শীর্ষ আদালত।
১৯৭৪ সালে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার সময় হায়দরাবাদ বিশ্ববিদ্যালয়কে বরাদ্দ করা হয়েছিল ২,৩০০ একর জমি। বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য জমি বরাদ্দ হলেও আইনত রাজ্য সরকারই ছিল সেই সমগ্র জমির মালিক। বছরের পর বছর ধরে সরকার এই ২,৩০০ একর থেকে কিছু কিছু জমি বিভিন্ন উদ্দেশ্যে বরাদ্দ করেছে। হয়েছে একটি বাস ডিপো, একটি টেলিফোন এক্সচেঞ্জ, একটি তথ্যপ্রযুক্তি ক্যাম্পাস, গাচ্চিবওলি স্পোর্টস স্টেডিয়াম, একটি শুটিং রেঞ্জ ইত্যাদি।
রেড্ডির সরকার অবশ্য আন্দোলনকারীদের কথা মানতে রাজি নয়। তেলঙ্গানা সরকার পাল্টা যুক্তি দিয়ে জানায়, হায়দরাবাদের অনেক জায়গাতেই সাপ, ময়ূর রয়েছে। কিন্তু সব জায়গাকে বনাঞ্চল বলা যায় না। সরকারের এই যুক্তিকে অবশ্য নস্যাৎ করে দিয়েছে দেশের শীর্ষ আদালত। তেলঙ্গানা হাই কোর্টের রেজিস্ট্রার (বিচার বিভাগ) যে রিপোর্ট জমা দিয়েছেন, সেটি উদ্ধৃত করে বিচারপতিরা জানিয়েছেন, প্রতিবেদন এবং ছবিগুলি দেখে সেখানকার পরিস্থিতি উদ্বেগজনক বলেই মনে হচ্ছে। বিপুল সংখ্যক গাছ কাটা হচ্ছে এবং বিশাল যন্ত্রপাতি ব্যবহার করা হচ্ছে বলে আদালত উল্লেখ করেছে।
নিলামের আগে বনভূমি পরিষ্কার করার জন্য ৩০ মার্চ সরকার বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে কমপক্ষে ৫০ জনকে পাঠায়। ছাত্রদের দমিয়ে রাখতে ক্যাম্পাসটি ব্যারিকেড করা হয়েছিল। এর ফলে ক্যাম্পাসে ব্যাপক বিক্ষোভ শুরু হয়। ৫৩ জন পড়ুয়াকে আটক করা হয়। দু’জনকে গ্রেফতার করে বিচার বিভাগীয় হেফাজতে পাঠানো হয়। বেশ কয়েক জন আহত হন। ছাত্র ইউনিয়ন অনির্দিষ্ট কালের জন্য ধর্মঘট ঘোষণা করে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy