ঝাড়গ্রামের দলীয় কার্যালয়ে তৃণমূলের বৈঠক। বৃহস্পতিবার। নিজস্ব চিত্র
কাজ চাই, বাড়ি চাই। দাবি তুলছেন তৃণমূলের ‘শহিদ’ পরিবারের সদস্যেরা।
বুধবার ছিল ‘ছোট আঙারিয়া’ দিবস। গড়বেতার ছোট আঙারিয়ায় বিকেলে তৃণমূলের পক্ষ থেকে ‘শহিদ’ স্মরণসভার আয়োজন করা হয়েছিল। দলীয় সূত্রে খবর, সভার পর ছোট আঙারিয়ায় দু’দশক আগে নিহত এক তৃণমূল কর্মীর ছেলে নেতৃত্বের কাছে কিছু একটা কাজের ব্যবস্থা করে দেওয়ার অনুরোধ জানান। আর এক ‘শহিদ’ পরিবারের সদস্য আবার আবাস যোজনায় বাড়ি তৈরি করে দেওয়ার দাবি তোলেন। শুরুতে কিছুটা অস্বস্তিতে পড়লেও পরে তৃণমূল নেতৃত্ব তাঁদের বুঝিয়ে ফেরত পাঠান। তবে দলের অন্দরেই বলাবলি হচ্ছে, ‘শহিদ’ পরিবারের দাবি অন্যায্য নয়।
২০০১ সালের ৪ জানুয়ারি ছোট আঙারিয়া গ্রামে তৃণমূল কর্মী বক্তার মণ্ডলের বাড়িতে ৫ তৃণমূল কর্মীকে খুনের অভিযোগ ওঠে সিপিএমের দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। সেই থেকেই দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে নিহত সেই ৫ কর্মীর পরিবারের পাশে আছেন গড়বেতার তৃণমূল নেতৃত্ব। আইনি লড়াইয়ে সহযোগিতা করেছে দল। ২০১১ সালে পালাবদলের পর থেকে প্রতিবছর ৪ জানুয়ারি ছোট আঙারিয়ায় 'শহিদ' দিবস পালন করছে তৃণমূল। গ্রামে ঢোকার মুখে নিহত ৫ কর্মীর নাম লিখে করা হয়েছে শহিদ বেদি। সেখানেই শহিদ স্মরণসভার মঞ্চ হয়। নিহতদের পরিবারের সদস্যদের মঞ্চে স্থান দিয়ে চাল, ডাল, আনাজ, শীতবস্ত্র-সহ আর্থিক সাহায্য দেয় তৃণমূল।
এ বার স্মরণসভার মঞ্চে শিশুসন্তানকে কোলে নিয়ে ছিলেন সে দিন নিহত তৃণমূল কর্মী জয়ন্ত পাত্রের বৌদি মিতা পাত্র। ২০২১ সালে গড়বেতায় ছোট আঙারিয়া দিবস পালন করেছিল বিজেপিও। সে বার সদ্য বিজেপিতে ঢোকা শুভেন্দু অধিকারীর হাত থেকে সাহায্য নিয়েছিলেন মিতা। বুধবার তৃণমূল নেতৃত্বের হাত থেকে সাহায্য নেন তিনি। পরে মিতা বলেন, ‘‘বিজেপি সে বার ভুল বুঝিয়ে নিয়ে গিয়েছিল। তৃণমূলই বরাবর আমাদের পাশে থাকে।’’
তবে তৃণমূল সূত্রে খবর, স্মরণসভার শেষে দলের জেলা কো-অর্ডিনেটর অজিত মাইতি, জেলা সভাপতি সুজয় হাজরা, বিধায়ক উত্তরা সিংহের কাছে সন্ধিপুরের যাদববাটি গ্রামের বাসিন্দা নিহত তৃণমূল কর্মী রবিয়াল ভাঙির ছেলে অনুরোধ করেন একটা কাজের ব্যবস্থা করে দেওয়ার। ছোট আঙারিয়ায় নিহত আর এক কর্মী মুক্ত পাত্রের পরিবারের এক সদস্যের আবার অনুরোধ ছিল, তাঁদের আবাস যোজনায় বাড়ি তৈরি করে দিতে হবে।
তৃণমূলের এক নেতা মানছেন, ‘‘গড়বেতা ১ ব্লকে তৃণমূলের শহিদ পরিবার আছে ২৯টি। তাঁদের অনেকেই মাঝেমধ্যে কর্মসংস্থানের দাবি তোলেন। এঁদের অনেকের শিক্ষাগত যোগ্যতা তেমন না থাকায় কাজের বন্দোবস্ত করতে সমস্যা হয়। তবে দল তাঁদের প্রতি সহানুভূতিশীল।’’ তৃণমূলের জেলা কো-অর্ডিনেটর অজিত বলছেন, ‘‘নেতাই, নন্দীগ্রামের অনেক শহিদ পরিবারের কর্মসংস্থান করে দেওয়া হয়েছে। ছোট আঙারিয়াতেও একজন এসে বলেছেন। দেখি কিছু করা যায় কিনা। সবাইকে তো আর করে দেওয়া যায় না। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কর্মসংস্থানের চেষ্টা করছেন।’’
তৃণমূলের এই প্রতিশ্রুতিকে কটাক্ষ করতে ছাড়ছে না বিজেপি। দলের জেলা মুখপাত্র অরূপ দাস বলছেন, ‘‘ভাগ বাঁটোয়ারা নিয়ে প্রতিদিনই তৃণমূলের নিজেদের মধ্যে মারামারি হচ্ছে। নিজেদের ভাগেই কুলোচ্ছে না, আবার শহিদ পরিবারদের ভাগ!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy