ফাইল চিত্র।
সামনেই বিধানসভা উপ-নির্বাচন। খড়্গপুরে পৌঁছে গিয়েছেন নির্বাচন কমিশনের পর্যবেক্ষকেরা। অথচ, এখনও রেলশহর খড়্গপুরে বহু গ্রেফতারি পরোয়ানা জমে রয়েছে। পরোয়ানাগুলি কার্যকর হয়নি। ফলে, ভোটের শহরে দুষ্কৃতী-রাজের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
উপ-নির্বাচন ঘোষণা হয়েছে অক্টোবরে। সূত্রের খবর, অক্টোবরের আগে পর্যন্ত জেলায় ২,১৭৭টি পরোয়ানা জমে ছিল। ওই মাসে নতুন করে ৪৮৯টি পরোয়ানা জারি হয়। অর্থাৎ, অক্টোবর পর্যন্ত জেলায় ২,৬৬৬টি পরোয়ানা জমে ছিল। এরমধ্যে খড়্গপুরের ২৮০টি (খড়্গপুরে টাউন থানার ২৭৭টি, খড়্গপুর টাউন মহিলা থানার ৩টি)। অন্য দিকে, অক্টোবর পর্যন্ত জেলায় ১৭৯টি পরোয়ানা কার্যকর করা হয়েছে। এরমধ্যে খড়্গপুরের মাত্র ১৬টি।
অবিলম্বে জমে থাকা পরোয়ানাগুলি কার্যকর করার দাবিতে সরব হয়েছে বিরোধীরা। জানা গিয়েছে, পুরো জেলায় যে সংখ্যক পরোয়ানা জমে রয়েছে, তার প্রায় দশ শতাংশই খড়্গপুরের। বিষয়টি অনেকের কাছেই উদ্বেগের ঠেকছে। জেলা পুলিশ অবশ্য জমে থাকা গ্রেফতারি পরোয়ানা নিয়ে কিছু বলতে নারাজ। কত পরোয়ানা জমে রয়েছে, তাও জানাতে চায়নি তারা। পশ্চিম মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার দীনেশ কুমার শুধু বলেছেন, ‘‘সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনের জন্য পুলিশের যে পদক্ষেপ করার পুলিশ করছে।’’ কমিশনের এক সূত্রে খবর, জমে থাকা গ্রেফতারি পরোয়ানাগুলি কার্যকর করার ব্যাপারে পুলিশকে জোর দিতে বলা হয়েছে। জেলা পুলিশের অন্য এক আধিকারিক জানাচ্ছেন, খড়্গপুরে কত পরোয়ানা জমে রয়েছে, সেই তালিকাও তৈরি করা হয়েছে। খড়্গপুর শহর এবং শহরতলির দাগিদের ধরে হাজতে পোরা হচ্ছে। এত পরোয়ানা জমে রয়েছে কেন? সদুত্তর এড়িয়ে ওই পুলিশ আধিকারিকের সাফাই, কিছু অপরাধী এলাকাছাড়া হয়ে গিয়েছে।
শহরের আইনশৃঙ্খলার হাল নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে অনেকের। নির্বাচনের দিন অনেকে বাইরে থেকে এসেও এখানে গোলমাল পাকায় বলে অভিযোগ। খড়্গপুরের একদিকে রয়েছে নারায়ণগড়, একদিকে কেশিয়াড়ি, অন্য দিকে দিকে রয়েছে খড়্গপুর গ্রামীণ। নারায়ণগড়ের আশেপাশে রয়েছে বেলদা, দাঁতনের মতো এলাকা। শুধু খড়্গপুর নয়, রেলশহরের আশেপাশের ওই সব এলাকাতেও অনেক গ্রেফতারি পরোয়ানা জমে রয়েছে। ফলে, নির্বাচনের দিন গোলমাল হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন অনেকেই।
রেলশহরে নির্বাচনে হিংসা নতুন নয়। গত পুরভোটে তো দুষ্কৃতী-দৌরাত্ম্যেই কাউন্সিলর ভাঙানোর অভিযোগ উঠেছিল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। বিরোধীদের অভিযোগ, এ বারও ভোটে দুষ্কৃতী রাজের আশঙ্কা রয়েছে। সে জন্যই জমে থাকা গ্রেফতারি পরোয়ানা কার্যকর করার ব্যাপারে পুলিশ গড়িমসি করছে। যাদের নামে পরোয়ানা রয়েছে, তাদের অনেকে তৃণমূলের সমর্থক, তাই পুলিশের এই গড়িমসি। নির্বাচনের দিনে এই সব দুষ্কৃতীরা শহরে রাজ করবে বলেই আশঙ্কা বিরোধীদের। বিজেপির জেলা সভাপতি শমিত দাশের কথায়, ‘‘পুলিশ বলে, দুষ্কৃতীরা আত্মগোপন করে থাকায় তাদের না কি গ্রেফতার করা যায় না। নির্বাচনের দিন তাঁদের প্রকাশ্যে দেখা যায়। পুলিশের উচিত অবিলম্বে জমে থাকা পরোয়ানাগুলি কার্যকর করা।’’ কংগ্রেসের জেলা সভাপতি সৌমেন খানেরও বক্তব্য, ‘‘আগে জারি হওয়া পরোয়ানা কার্যকর না হলে নির্বাচনের মুখে সেগুলি কার্যকর করতেই হয়। দাগি দুষ্কৃতীরা হাজতের বাইরে থেকে যাতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিতে সমস্যা তৈরি করতে না পারে সেটা নিশ্চিত করতেই এটা করতে হয়। পুলিশের উচিত জমে থাকা পরোয়ানাগুলি দ্রুত কার্যকর করা।’’
তৃণমূল পুলিশের পাশেই রয়েছে। তৃণমূলের জেলা সভাপতি অজিত মাইতি বলেন, ‘‘আশঙ্কার কিছু নেই। পুলিশের যে পদক্ষেপ করার পুলিশ নিশ্চিত ভাবেই করছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy