পাঁশকুড়া পুরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডে রাস্তার পাশে আবর্জনার স্তূপ। নিজস্ব চিত্র।
পুরসভার কাজের পর্যালোচনায়র জন্য সোমবার নবান্নে প্রশাসনিক বৈঠক ডেকেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে একাধিক জায়গার পুর পরিষেবা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী প্রকাশ্যে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য যে সব পুরসভা এখনও জমি দিতে পারেনি তাদের নামও ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী। তার মধ্যে রয়েছে পাঁশকুড়া পুরসভাও।
এ দিন নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘আগে বাড়ি বাড়ি গিয়ে ময়লা সংগ্রহ করা হত। ড্রেনে, খালে, রাস্তায় আবর্জনা ফেলা বন্ধ করতে হবে। কোনও অবস্থাতেই এলাকা নোংরা করতে দেওয়া হবে না। পানিহাটি, চাকদা, আরামবাগ, তারকেশ্বর, দার্জিলিং, পাঁশকুড়া পুরসভা সলিড ওয়েস্ট প্রসিডিং ইউনিট তৈরির জমি এখনও দিতে পারেনি। অবিলম্বে ব্যবস্থা করুন। আমি চাই, সলিড ওয়েস্টের কাজ ২০২৬-এর মধ্যে শেষ করতে। এবং এটা কেন্দ্রীয় ভাবে হবে। স্থানীয় ভাবে দরপত্র টাকা খেয়ে পালিয়ে যাচ্ছে।"
কয়েক বছর আগে আবর্জনা সমস্যা মেটাতে এবং পরিবেশ দূষণ রুখতে বর্জ্য ব্যবস্থাপনাকে কাজে লাগিয়ে জৈব সার তৈরিতে উদ্যোগী হয়েছিল রাজ্য সরকার। বছর তিনেক আগে পাঁশকুড়া পুর এলাকায় বাড়ি বাড়ি আবর্জনা সংগ্রহের কাজ শুরু হয়। পচনশীল এবং অপচনশীল—দু'ধরনের বর্জ্য পৃথকীকরণের জন্য প্রতিটি বাড়িতে দু'টি আলাদা রঙের ময়লা ফেলার পাত্র দেওয়া হয় পাঁশকুড়া পুরসভার তরফে। কিন্তু অভিযোগ ওঠে, প্রতিটি বাড়ি থেকে বর্জ্য আলাদা ভাবে সংগ্রহ করা হলেও গাড়িতে তোলার সময় দু'ধরনের বর্জ্য মিশিয়ে দেওয়া হচ্ছে। পুর এলাকার ময়লা ফেলার জায়গায় জমে থাকা পচনশীল বর্জ্য থেকে জৈব সার তৈরির জন্য একটি সংস্থাকে দায়িত্ব দেয় রাজ্য পুর ও নগরোন্নয়ন দফতর। প্রকল্পটির তদারকির দায়িত্বে রয়েছে কেএমডিএ।
২০২১ সালের অক্টোবরের কেএমডিএ'-র চিফ ইঞ্জিনিয়ার, রাজ্য পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরের দু'জন যুগ্ম সচিব এবং দায়িত্ব প্রাপ্ত সংস্থার প্রতিনিধিরা পাঁশকুড়া পুরসভার ডাম্পিং গ্রাউন্ড পরিদর্শনে আসেন। সুরানানকার এলাকায় মেদিনীপুর ক্যানালের পাশে ডাম্পিং গ্রাউন্ড চত্বরে পচনশীল বর্জ্য থেকে জৈব সার তৈরির ব্যাপারে পুরসভার চেয়ারপার্সন নন্দকুমার মিশ্রের সঙ্গে বৈঠক করেন। বর্জ্য ব্যবস্থাপনা প্রকল্প গড়ে তোলার জন্য কেএমডিএ পাঁশকুড়া পুরসভার কাছে ন্যূনতম ৯ একর জায়গা চায়।
পাঁশকুড়া পুরসভার ডাম্পিং গ্রাউন্ডটির আয়তন প্রায় ৫ একর। ডাম্পিং গ্রাউন্ড সংলগ্ন সেচ দফতরের আরও ৪ একর জায়গা চেয়ে আবেদন করে পুরসভা। কিন্তু সেই জায়গা এখনও পাওয়া যায়নি বলে খবর। পাঁশকুড়া পুরসভার চেয়ারপার্সন নন্দকুমার মিশ্র বলেন, ‘‘বর্জ্য ব্যবস্থাপন প্রকল্পের জন্য ন্যূনতম ৯ একর জায়গা দরকার। আমাদের ৫ একর রয়েছে। বাকি ৪ একর জায়গা চিহ্নিতকরণ, জায়গা হস্তান্তরের জন্য আবেদন করার কাজ আগেই হয়ে গিয়েছে। জায়গাটি সেচ দফতরের। আশা করছি, সেচ দফতর দ্রুত সেই জায়গা পুরসভাকে হস্তান্তর করবে।’’
এতদিনেও বর্জ্য ব্যবস্থাপন প্রকল্প বাস্তবায়িত না হওয়ার জন্য পুরসভার উদাসীনতাকে দায়ী করছে বিরোধীরা। পাঁশকুড়ার প্রাক্তন কাউন্সিলর তথা কংগ্রেস নেতা কল্যাণ রায় বলেন, ‘‘পাঁশকুড়া শহর যেন আস্তাকুঁড়। বাড়ি বাড়ি আবর্জনা সংগ্রহের কাজ হলে শহরের রাস্তাঘাটে এত আবর্জনা জমে থাকত না। পুরসভার উদাসীনতার জন্য আজও বর্জ্য ব্যবস্থাপনা প্রকল্প বাস্তবায়িত হল না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy