দিঘার প্রবেশ তোরণের কাছে চরছে গরু। বৃহস্পতিবার। নিজস্ব চিত্র
গো-দাপটে ক্ষুণ্ণ মুখ্যমন্ত্রী। সৈকত শহর দিঘাকে যখন তাঁর সরকার সাজানোর চেষ্টা করছে, তখন গবাদি পশুর যত্রতত্র বিতরণ এবং রাস্তাঘাট নোংরা করা দেখে মুখমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অসন্তুষ্ট।
চার দিনের জেলা সফরে এসেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। বৃহস্পতিবার সফর শেষ করে তিনি কলকাতার উদ্দেশ্যে রওনা দেন। এদিন দুপুর পৌনে ২টো নাগাদ দিঘা হেলিপ্যাড পৌঁছন মমতা। সেখানে মুখ্যমন্ত্রীকে বিদায় জানাতে স্থানীয় বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী অখিল গিরি, জেলাশাসক পূর্ণেন্দু মাজী সহ অনেকেই হাজির ছিলেন। হেলিকপ্টারে ওঠার আগে জেলাশাসক এবং স্থানীয় বিধায়কের সঙ্গে কিছুক্ষণ মুখ্যমন্ত্রী কথা বলেন। সূত্রের খবর, তখন দিঘায় গবাদি পশুর দাপাদাপি এবং তার জেরে যে সব অসুবিধা হচ্ছে, তা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী। গবাদি পশু বিচরণ প্রসঙ্গে জেলা প্রশাসনকে কঠোর পদক্ষেপ করার জন্য মুখ্যমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে খবর।
দিঘায় বাঁধানো সৈকতের পাশে গরুর বিষ্ঠা পড়ে থাকা বা রাস্তায় গরুর ঘুরে বেড়ানোর ছবিটা চেনা। গত ৩ এপ্রিল খেজুরির ঠাকুরনগরে প্রশাসনিক জনসভা করার পর সোজা দিঘা চলে যান মুখ্যমন্ত্রী। সেখানে সৈকতাবাসে কয়েকদিন ধরে ছিলেন। দলীয় কর্মীদের নিয়ে একটি সম্মেলনের পর নির্মীয়মান জগন্নাথ মন্দির ঘুরে দেখেন। মুখ্যমন্ত্রী ওল্ড দিঘায় জগন্নাথ মন্দির সংলগ্ন এলাকায় হাঁটতে বেরিয়েছিলেন। সে সময়ই তিনি দেখেছিলেন, সৈকতে এবং তার আশেপাশের এলাকায় সারি সারি গবাদি পশু ঘুরে বেড়াচ্ছে। তাদের বিষ্ঠা ছড়িয়ে রয়েছে যত্রতত্র।
উল্লেখ্য, ২০২১ সালে ইয়াস ঝড়ে তছনছ হয়ে গিয়েছিল দিঘা। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ মতো বর্তমানে নতুন ভাবে সাজানো হয়েছে দিঘা। গবাদি পশুর এ রকম অবাধ বিচরণে ওই সব সরকারি সম্পত্তি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে বলে জেলাশাসক এবং প্রশাসনিক আধিকারিকদের কাছে মুখ্যমন্ত্রী ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন বলে ঘনিষ্ঠ মহল সূত্রের খবর। তাই মুখ্যমন্ত্রীর সফর শেষ হতে না হতেই নড়েচড়ে বসেছে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রশাসন। প্রাথমিকভাবে রামনগর-১ ব্লক প্রশাসন এবং দিঘা-শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদের পক্ষ থেকে স্থানীয়দের গবাদি পশু বিচরণ প্রসঙ্গে সচেতন করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। পরবর্তীকালে গবাদি পশুর মালিকদের ধরপাকড়ের জন্যও অভিযান চালানো হবে।
স্থানীয় সূত্রে খবর, দিঘার আশেপাশে এলাকায় প্রচুর জনবসতি রয়েছে। সেখানে হাজার হাজার গবাদি পশু রয়েছে। দিনভর সেই সব গবাদি পশুদের সৈকত শহরে ঘুরতে দেখা যায়।
বিষয়টি নিয়ে কটাক্ষ করেছে বিজেপি। দলের কাঁথি সাংগঠনিক জেলা সহ-সভাপতি অসীম মিশ্র বলেন, ‘‘মফস্সল শহরের সড়কে বা জাতীয় সড়কে এমন ছবি প্রায়ই দেখতে পাওয়া যায়। আসলে বোধহয় গোমাতার মধ্যেও উনি বিজেপির ছায়া দেখছেন! তাই এমন নির্দেশ দিয়েছেন।’’
রামনগর-১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি শম্পা মহাপাত্র বলেন, ‘‘আমরা স্থানীয় পঞ্চায়েতগুলিকে নিয়ে বাসিন্দাদের সচেতন করাতে উদ্যোগী হয়েছে।’’ তাতেও যদি ফল না মেলে তবে? পূর্ব মেদিনীপুরের জেলাশাসক পূর্ণেন্দু মাজি বলেন,‘‘স্থানীয়েরা সচেতন না হলে মোটা অঙ্কের টাকা আর্থিক জরিমানা এবং ধরপাকড় করা হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy