পাশাপাশি রমা-শুভেন্দু। সোমবার মকরামপুরে। নিজস্ব চিত্র
শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত বাধা এসেছিল। প্রবল আপত্তি তুলেছিলেন কর্মী-সমর্থকেরা। তবে সব ওজর-আপত্তি ধোপে টিকল না। শেষপর্যন্ত ‘ঘর ওয়াপসি’ হয়েই গেল রমাপ্রসাদ গিরির।
সোমবার দুপুরে মেদিনীপুরে দলের ব্লক এবং জেলা নেতাদের নিয়ে এক বৈঠক করেন শুভেন্দু অধিকারী। তৃণমূল সূত্রের খবর, ওই বৈঠকে শুভেন্দু জানান, দু’টি- একটি পঞ্চায়েত সদস্যকে নিয়ে যাচ্ছে (বিজেপি)। আবার তাঁরা পালিয়েও আসছে। আজ বিকেলেই মকরামপুরে আমি পঞ্চায়েত সদস্যদের যোগদান করাবো। রমাপ্রসাদ গিরি যে কোলাঘাটে গিয়ে তাঁর সঙ্গে দেখা করে ভুল স্বীকার করেছেন তা-ও জানিয়েছেন শুভেন্দু। এরপরই কর্মীদের মধ্যে থেকে এক- দু’জন বলে ওঠেন, ওকে (রমাপ্রসাদ) আর দলে নেওয়া যাবে না। ওই কর্মীদের উদ্দেশে তখন শুভেন্দুকে বলতে শোনা যায়, কাকে নেওয়া যাবে সেই সিদ্ধান্ত দল নেবে। ওই কর্মীর বুথে কত লিড ছিল তা জানতে চান শুভেন্দু। এখানেই থেমে থাকেননি তিনি। কর্মীদের আশ্বস্ত করে শুভেন্দুকে বলতে শোনা যায়, ও (রমাপ্রসাদ) নেতা হিসেবে থাকবে না, কর্মী হিসেবে থাকবে। ক্ষুদ্র স্বার্থে আটকে থাকলে হবে না। বৃহত্তর স্বার্থের কথা ভাবতে হবে।
এর কিছুক্ষণ পর মকরামপুরে আয়োজিত তৃণমূলের প্রতিবাদ সভায় দেখা গেল রমাকে। সভায় আসা কর্মী সমর্থকেরা রমাপ্রসাদকে দেখে হাততালি দিয়েছেন। সঙ্গে চলেছে হাসি-ঠাট্টাও। তবে সেসব গায়ে মাখেননি। বরং যোগদানের পর রমাপ্রসাদ বলেন, ‘‘কিছু ক্ষোভ থেকেই চলে যাওয়া। দলকে জানিয়েছি। সে বিষয়ে তারা ভাবছেন। দলে ফিরে ভাল লাগছে। অবস্থান বদলে অনেকেই আঘাত পেয়েছিলেন তাঁদের কাছে ক্ষমাপ্রার্থী। আগামী দিনে দলের হয়েই কাজ করব।” শুভেন্দু এদিন তাদের হাতে দলীয় পতাকা তুলে দেন। তিনি বলেন, "বিজেপি জেলা কার্যালয়ে নিয়ে গিয়ে জোর করেই যোগদান করিয়েছিল বিজেপি।’’ এদিন শুধু রমা নন, বিজেপি যোগ দেওয়া মকরামপুর পঞ্চায়েতের প্রধান, উপ প্রধান, পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতির সদস্যেরা ফের তৃণমূলে এসেছেন।
রমার এই ‘ঘর ওয়াপসি’ নিয়ে প্রশ্ন উঠছে তৃণমূলের অন্দরে। কর্মী, সমর্থকদের এই বিরোধিতা সত্ত্বেও যে ভাবে রমাপ্রসাদকে ফেরানো হল তাতে কি আখেরে লাভ হবে দলের? প্রশ্ন তুলছেন নীচুতলার কর্মী, সমর্থকেরা। যদিও মেদিনীপুরের বৈঠকেই নিজের রাজনৈতিক অবস্থান স্পষ্ট করেছেন শুভেন্দু। তৃণমূল সূত্রের খবর, সেখানে তিনি জানিয়েছেন, এখানে থাকলে যে মঞ্চে বসে, ওখানে গেলে (বিজেপি) সে চাটাইও পায় না, এই মেসেজটা তো দেওয়া যাবে।
রমাকে দলে ফেরাতে পারলেও রবিবার সন্ধ্যায় খড়্গপুরের প্রতিটি ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও দশজন প্রতিনিধিকে নিয়ে বৈঠক অসম্পূর্ণ করেই ফিরতে হয়েছিল শুভেন্দুকে। বৈঠকে বসে দেখতে পান ক্ষোভের পাহাড়। যেমন শহরের ৬নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর অরূপ কুণ্ডু খোদ পুরপ্রধান প্রদীপ সরকারের বিরুদ্ধেই খাস জমি নিয়ে মুখ খুলেছিলেন। ১৩নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তাঁর রেল এলাকার পার্কের জন্য টাকার দাবি করেও পায়নি বলে দাবি করেন। প্রতি ক্ষেত্রে পুরপ্রধান অবশ্য যথাযথ উত্তর দিয়েছেন। শুধু এতেই থেমে ছিল না। শহরে বুথ কমিটি গঠন নিয়েও বেশ কয়েকটি ওয়ার্ডের প্রতিনিধিরা সরব হয়েছিলেন। সেই ক্ষোভ অবশ্যই তৃণমূলের শহর সভাপতির বিরুদ্ধে।
খড়্গপুর ‘পুনরুদ্ধারে’ সব ওয়ার্ডে পর্যবেক্ষক নিয়োগ করে হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ খুলতে চলেছে তৃণমূল। দলের এক সূত্রে খবর, এ ব্যাপারে উদ্যোগী হয়েছেন শুভেন্দু। তৃণমূলের জেলা সভাপতি অজিত মাইতি, জেলা চেয়ারম্যান দীনেন রায়কে শুভেন্দু নির্দেশ দিয়েছেন, অবিলম্বে খড়্গপুরের ৩৫ জন বাছাই করা নেতার নাম এবং মোবাইল নম্বর তাঁকে দেওয়া হোক। শুভেন্দুর নির্দেশ পেয়ে এ নিয়ে তৎপর হয়েছেন অজিতরাও। শুরু হয়েছে ৩৫ নেতার খোঁজ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy