চমকাইতলা থেকে এ ভাবেই পাচার হচ্ছে মোরাম। নিজস্ব চিত্র
চোখের সামনে মোরাম-বোল্ডার লুট হয়ে যায়। তবু ভয়ে মুখ খোলে না কেউ।
কেন কার ভয়? আমশোলের পানশিউলির এক খাদান পাড়ে দাঁড়িয়ে শাসকদলের এক কর্মী বললেন, ‘‘খবর নিন, এর পিছনে কারা আছে। তা হলেই সব স্পষ্ট হয়ে যাবে।’’
পঞ্চায়েত সূত্রে খবর, গড়বেতা ৩ অর্থাৎ চন্দ্রকোনা রোড ব্লকের আমশোল, আঁধারনয়ন এলাকায় অন্তত ৪টি বড় মোরাম খাদান চলে। এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, প্রতিটি খাদানের সঙ্গেই শাসকদলের নেতারা জড়িত। প্রায় একই অভিযোগ গড়বেতার চমকাইতলা, সন্ধিপুর, খড়কুশমা এলাকাতেও। স্থানীয় বিধায়ক শ্রীকান্ত মাহাতো বলেন, ‘‘স্থানীয় স্তরে দলের কিছু নেতাকর্মী এই চক্রের সঙ্গে যুক্ত হয়ে পড়েছে বলে খবর পাচ্ছি।’’ পাশাপাশি তাঁর দাবি, ‘‘টুকটাক হচ্ছে, চেষ্টা করছি একেবারে বন্ধ করতে। তবে সিপিএমের আমলে যেভাবে হত, এখন অনেক কমেছে।’’
মোরাম পাচার নিয়ে প্রতিবাদ যে একেবারে হয় না তা নয়। সম্প্রতি গড়বেতার কাদড়া-উত্তরবিল অঞ্চলের বেশ কিছু বাসিন্দা জেলা ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরে চিঠি লিখে জানিয়েছেন— ‘সরকারিভাবে অবৈধ মোরাম – বোল্ডার পাচার বন্ধ না হলে এলাকার মানুষদের নিয়ে রাস্তার উপর গাড়ি আটক করতে বাধ্য থাকব’। আমশোল এলাকার বহু মানুষ এইসব বন্ধ করতে পঞ্চায়েতেও জানিয়েছেন। আমশোল গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রধান সচিন কিস্কু বলেন, ‘‘বিভিন্নভাবে মোরাম-বোল্ডার পাচার আটকানোর চেষ্টা করছি। বন্ধ করে দিলেও রাতারাতি জেসিবি চালিয়েও তোলা হয় বলে খবর পাচ্ছি।’’ কারা করছে এসব কারবার? সচিনবাবুর কথায়, ‘‘স্থানীয় বাসিন্দারাই এই ব্যবসা করে।’’ তবে তাঁর দলের কর্মীরা জড়িত কি না, সে নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি তৃণমূলের গ্রাম প্রধান।
চমকাইতলার তৃণমূল নেতা বদরুদ্দিন গায়েন বলেন, ‘‘সিকেরডোব থেকে আগে মোরাম -বোল্ডার উঠছিল। পার্টি থেকে বলার পর বন্ধ রয়েছে। তবে রাতের বেলায় হচ্ছে কি না, বলতে পারব না।’’
এই কারবারের পিছনে দলের ইন্ধন নেই বলে তিনি সাফ জানিয়ে দেন। গড়বেতা ১ ব্লকের তৃণমূল সভাপতি সেবাব্রত ঘোষের কথায়, ‘‘আমাদের দলের কেউ জড়িত নয় এই কারবারে। জড়িত থাকলে দল থেকে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ গড়বেতার বিধায়ক তথা জেলা তৃণমূলের কার্যকরী সভাপতি আশিস চক্রবর্তী বলেন, ‘‘বর্ষাকালে এসব খাদান বন্ধ রাখার সরকারি নির্দেশ আছে। তবুও কিছুকিছু চলছে। আমরা বলেছি এসব বন্ধ করতে। আর দলের কেউ জড়িত থাকার প্রমাণ পেলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
শাসক দলের নেতাকর্মীরা কি সত্যি পাচারচক্রের সঙ্গে জড়িত নন? সন্ধিপুরের বাসিন্দা তথা গড়বেতা-১ পঞ্চায়েত সমিতির বন ও ভূমি কর্মাধ্যক্ষ তৃণমূল নেতা সঞ্জয় মণ্ডলের প্রতিক্রিয়া, ‘‘এ নিয়ে আমি কোনও মন্তব্য করব না।’’
নীরবতা হিরণ্ময়।
(শেষ)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy