রেলমন্ত্রী থাকাকালীন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঝাড়গ্রাম-পুরুলিয়া রেলপথের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। তারপর কেটে গিয়েছে আট বছর। এ ব্যাপারে প্রাথমিক সমীক্ষা হলেও ‘অলাভজনক প্রকল্পটি’ আপাতত ঠান্ডাঘরে রয়েছে। তবে এ বার নির্বাচনী প্রচারে ঝাড়গ্রাম-বান্দোয়ান রেলপথের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে বিজেপি।
শুধু নতুন রেলপথই নয়, স্থানীয়স্তরে রেল সংক্রান্ত দাবি গুলিও প্রচারে আনছেন ঝাড়গ্রাম লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী কুনার হেমব্রম। ঝাড়গ্রাম জেলা বিজেপি-র সভাপতি সুখময় শতপথীর সাফ কথা, ‘‘কুনারকে সাংসদ নির্বাচিত করলে ঝাড়গ্রামের ঝাড়গ্রাম-বান্দোয়ান সমীক্ষা হওয়া রেলপথ সহ যাবতীয় রেল সংক্রান্ত দাবি বাস্তবায়িত হবে, এ ব্যাপারে আমরা নিশ্চিত। প্রচারে সেই কথাই বলা হচ্ছে।’’ সুখময়ের অভিযোগ, সাংসদের কাজ হচ্ছে এলাকার বৃহত্তর সমস্যা ও কেন্দ্রীয়স্তরে সমাধান সম্ভব এলাকাবাসীর এমন দাবি-দাওয়া সংসদে তুলে ধরা। গত পাঁচ বছরে তৃণমূলের সাংসদকে এমন কোনও সদর্থক ভূমিকায় এলাকাবাসী দেখেননি বলে অভিযোগ সুখময়ের। তাঁর দাবি, মানুষ রেল সংক্রান্ত দাবি-দাওয়া করেছেন।
পুরুলিয়া জেলার বান্দোয়ান বিধানসভা এলাকাটি ঝাড়গ্রাম লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত। বান্দোয়ান বিধানসভা এলাকায় কোনও রেলপথ নেই। আশির দশকে আদ্রা থেকে বান্দোয়ান হয়ে ঝাড়গ্রাম রেলপথে দাবি উঠেছিল। আদ্রা-ঝাড়গ্রাম রেলপথ সংগ্রাম সমিতি-র এ ব্যাপারে দীর্ঘ আন্দোলনও করেছিল। । ঝাড়গ্রাম থেকে সরাসরি রেলপথে বান্দোয়ান যাওয়ার কোনও সুযোগ নেই। ঝাড়গ্রাম থেকে টাটানগর ও টামনা হয়ে অনেকটা ঘুরপথে পুরুলিয়া যেতে হয়। ঝাড়গ্রাম-পুরুলিয়ার মধ্যে হাতে গোনা এক-দু’টি লোকাল ও এক্সপ্রেস চলে। দীর্ঘপথে বিশেষত লোকাল ট্রেনে সময়ও লাগে বিস্তর।
বান্দোয়ান-ঝাড়গ্রামের মধ্যে রেলপথের বিষয়ে ২০১৫-১৬ সালে সমীক্ষা করেছিল দক্ষিণ-পূর্ব রেল। রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, ঝাড়গ্রাম, বান্দোয়ান, ঝাড়খণ্ডের পটমদা হয়ে চাণ্ডিল পর্যন্ত ১৩০ কিলোমিটার প্রস্তাবিত রেলপথের সমীক্ষার রিপোর্ট রেলবোর্ডে জমা পড়েছিল। রিপোর্ট পাওয়ার পরে রেল বোর্ডের তরফে দক্ষিণ-পূর্ব রেল কর্তৃপক্ষের কাছে ওই সমীক্ষা রিপোর্ট সম্পর্কে অতিরিক্ত তথ্য জানতে চাওয়া হয়েছিল। গত বছর নভেম্বরে রেল বোর্ডের কাছে এ ব্যাপারে চূড়ান্ত জবাবি-পত্র জমা পড়েছিল। রেলপথটি ‘অলাভজনক’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। দক্ষিণ-পূর্ব রেলের এক কর্তা বলছেন, ‘‘সরকার চাইলে কোনও এলাকার অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নের জন্য ক্ষতি স্বীকার করেও নতুন লাইন অনুমোদন করতে করতে পারে। বিষয়টি এখন রেলবোর্ডের বিবেচনাধীন’’ আদ্রা-ঝাড়গ্রাম রেলপথ সংগ্রাম সমিতি-র সম্পাদক আনন্দময় সেন বলেন, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রেলমন্ত্রী থাকাকালীন আমাদের দাবির ব্যাপারে আশ্বাস দিয়েছিলেন। তাঁর হাতে আমরা দাবিসনদ দিয়েছিলাম। সমীক্ষা হলেও এখনও দাবিপূরণ হয়নি। এই রেলপথ হলে দুই জেলার পুরুলিয়া, বাঁকুড়া ও ঝাড়গ্রাম জেলার ৯ট ব্লক ও পর্যটন কেন্দ্র রেলপথে জুড়বে।’’
তৃণমূলের ঝাড়গ্রাম জেলা চেয়ারম্যান সুকুমার হাঁসদা বলেন, ‘‘বিজেপি-র ভোট রাজনীতি সর্বস্ব মিথ্যা প্রচারে মানুষ মোটেই বিভ্রান্ত হবেন না। আমাদের প্রার্থী নির্বাচিত হয়ে সংসদে যাবেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy